বিশ্বব্যাপী ভূমিকম্পের ভয়াবহতা আমলে নিয়ে ভূমিকম্পের পূর্ব প্রস্তুতি নিচ্ছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এরই ধারাবাহিকতায় ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার সরঞ্জাম কিনতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। বাংলাদেশ সায়েন্স হাউজ নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে কাজও দেয়া হয়। তবে অভিযোগ উঠেছে পূর্বে ভূমিকম্প সম্পর্কিত কোনো সরঞ্জাম সরবরাহের অভিজ্ঞতা না থাকলেও প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ দিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি অভিযোগও জমা দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব বরাবর এই অভিযোগ করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, আপনার মন্ত্রণালয়ের ‘ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগকালে অনুসন্ধান, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা এবং জরুরি যোগাযোগের জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের অধীনে একটি দরপত্র আহ্বান করা হয়। এ প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশ সায়েন্স হাউজকে কাজের অনুমতিপত্র দেয়া হয়। কিন্তু টেন্ডারে উল্লেখিত শর্ত অনুযায়ী তাদের কোনো ধরনের যোগ্যতা নেই।
এ কাজ পেতে তারা তাদের জমা দেয়া অভিজ্ঞতার সনদ প্রকৃত প্রকল্পের চাহিদার সাথে মেলে না। বিশেষভাবে, প্রতিষ্ঠানটি ‘বিল্ডিং লিফট সার্টিফিকেট’ জমা দিয়েছে, যা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং উদ্ধারকাজের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সরবরাহের অভিজ্ঞতার সঙ্গে কোনোভাবে সম্পর্কিত নয়।
এর ফলে, তাদের প্রস্তাবটি প্রকৃত প্রয়োজনীয়তা এবং চাহিদার সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে পড়ে এবং এটি প্রতারণা। এই ধরনের অসঙ্গতি একটি প্রধান বিচ্যুতি হিসেবে গণ্য হয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস অনুযায়ী বিডার হিসেবে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির পরিচালক কাজী শফিকুল আলম বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি নিয়ম মেনেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করতে। এরপরও কিছু ত্রুটি থাকতে পারে। যদি কারো অভিযোগ থাকে তাহলে প্রক্রিয়া অনুযায়ী অভিযোগ করলে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, এ বিষয় গতকাল একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। অনিয়ম পেলেই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে দরপত্রে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান এইচটিএমএসের ডিরেক্টর আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, যে প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে একত্রে একাধিক প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করেছে। আমরাও মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছি। এছাড়া এ বিষয়টি নিয়ে আদালতে রিটের জন্যও আমরা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি। প্রকল্প পরিচালক মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এ কাজ দিয়েছেন। যে প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে তাদের সার্ভিস সেন্টার নেই, জনবল নেই, তাছাড়া টেন্ডারের চাহিদার সাথে মালামাল সরবরাহের সেই অভিজ্ঞতা বা সক্ষমতাও নেই। আমরা এ বিষয়ে ইতোমধ্যে দুদকেও অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সায়েন্স হাউজের মালিকপক্ষকে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।