রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, এই সমস্যা সমাধানে বিশ্ব নেতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতা ছাড়া কোনো টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।’
গতকাল মঙ্গলবার কাতারে ‘আর্থনা’ শীর্ষ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বিশ্ব বিভিন্ন সংকটে জর্জরিত। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সমৃদ্ধ সহনশীল ও টেকসই ভবিষ্যৎ রেখে যেতে হবে। যেটি জ্ঞান ও উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির সংমিশ্রনে গঠিত হবে। যা ভবিষ্যতের জন্য সর্বজনীন স্থায়িত্ব নিশ্চিত করবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মানবাধিকারের প্রতি অবজ্ঞা এবং বিচারহীনতা যেকোনো উন্নয়নের পথে বড় হুমকি। ফিলিস্তিনে চলমান মানবিক দুর্ভোগ শুধু একটি অঞ্চলের বিষয় নয়, এটি মানবতার বিষয়।
তিনি বলেন, সংকটময় বিশ্বে যুদ্ধ ও সংঘাত মানুষের অধিকারকে খর্ব করে এবং অর্থনীতিকে ধ্বংস করে। টেকসই উন্নয়নের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা অপরিহার্য। ফিলিস্তিন থেকে শুরু করে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকটকে বিশ্ব যেন উপেক্ষা না করে।
তিনি বলেন, নারী ও তরুণদের ক্ষমতায়নের জন্য অর্থনৈতিক প্রবেশাধিকার, টেকসই উন্নয়ন ও সুশাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সত্যিকার অর্থে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তুলতে হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের কণ্ঠস্বরকে শ্রবণযোগ্য করতে হবে এবং তাদের পছন্দ ও সিদ্ধান্তের স্বাধীনতা দিতে হবে।
তিনি বলেন, আর্থনা সামিটের মতো উদ্যোগ উদ্ভাবন, ঐতিহ্য এবং অংশীদারত্বের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট, সামাজিক বৈষম্য এবং কাজের ভবিষ্যতের মতো জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে। সামাজিক ব্যবসার ভিত্তিতে (শূন্য বর্জ্য, শূন্য কার্বন এবং শূন্য ব্যক্তিগত মুনাফার ওপর ভিত্তি করে) একটি নতুন জীবনধারা তৈরি করতে হবে।
এর আগে, কাতার পৌঁছালে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। কাতার সরকারের প্রটোকল প্রধান ও রাষ্ট্রদূত ইব্রাহিম ফাখরু তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির আমন্ত্রণে অধ্যাপক ইউনূস এই সফরে গেছেন। সামিটে অংশগ্রহণ ছাড়াও কাতারের আমিরের সঙ্গে তার এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।