Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

হেফাজত আমীরের অনীহা

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কওমি আলেমদের বৈঠক স্থগিত

মো. মাসুম বিল্লাহ

আগস্ট ৮, ২০২২, ০৪:৩১ পিএম


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কওমি আলেমদের বৈঠক স্থগিত

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আগামী ১০ই আগস্ট কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ডগুলোর নেতাদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু হেফাজত আমীর আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরীর একটি বিবৃতির কারণে সেই প্রোগ্রামে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের  শীর্ষ নেতারা। একপর্যায়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সেই প্রোগ্রাম স্থগিত করা হয়েছে।

সোমবার (৮ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের পক্ষে উপ-সচিব শামীম হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অনিবার্য কারণবশত সেই প্রোগ্রাম  স্থগিত করার বিষয় জানানো হয়।

এ ছাড়া শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহহিয়া ও মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান জানিয়েছেন, দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরীর চিঠির সঙ্গে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই।  সংগঠন তার চিঠির সঙ্গে একমতও নয় বলেও জানানো হয় এতে।

তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গত ২৫শে জুন হেফাজতের কেন্দ্রীয়  নায়েবে আমীর  মাওলানা মিজানুর  রহমান চৌধুরী ‘কওমি ধারার দ্বীনি শিক্ষা ও শিক্ষকের মানোন্নয়নকল্পে সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ’ শীর্ষক শিরোনামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি কওমির মাদ্রাসার মানোন্নয়নে ৮টি দাবি করেন। এ চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ঠা আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কওমি মাদ্রাসার বোর্ড প্রধানদের একটি বৈঠকের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়।

এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি আসার দুদিন পর ৬ই আগস্ট শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী সেই চিঠির প্রতিবাদ জানিয়ে একটা বিবৃতি দেন। চিঠিতে  মাওলানা  মিজানুর রহমান চৌধুরীর সেই চিঠির সঙ্গে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানানো হয়।

হেফাজত আমীর মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা মুহাম্মাদ ইয়াহহিয়া, মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমানের এই যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কওমি ধারার দ্বীনি শিক্ষা ও শিক্ষকদের মান উন্নয়নকল্পে সদয় দৃষ্টি কামনা’ শিরোনামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে লিখিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরীর একটি চিঠি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এটি হেফাজতের পক্ষ থেকে লিখিত কোন চিঠি নয়। মিজানুর রহমান চৌধুরী সেই চিঠির বিষয়টি হেফাজতের কোন ফোরামে আলোচনা করে তিনি প্রেরণ করেননি। এটি একান্তই তার ব্যক্তিগত। এই গণমাধ্যমের বরাতে বিষয়টি জানতে পেরেছে হেফাজত নেতৃবৃন্দ।

প্রসঙ্গত, কওমি মাদ্রাসার মানোন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি লিখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির ও গাজীপুরের দেওনার পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী। হেফাজত নেতার এ চিঠি আমলে নিয়ে করণীয় নির্ধারণে সভা ডাকা হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এ নিয়ে কওমি মাদ্রাসার আলেমদের মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

জানা যায়, গত ২৫ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে একটি চিঠি দেন হেফাজতের নেতা অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী। ‘কওমি ধারার দ্বীনি শিক্ষা ও শিক্ষকের মানোন্নয়নকল্পে সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ’ শীর্ষক চিঠিতে মিজানুর রহমান আটটি সুপারিশ করেন।

এ চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কওমি মাদ্রাসার বোর্ডপ্রধানদের একটি বৈঠকের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। এর পরই বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় কওমি আলেমদের মধ্যে।


ইএফ

Link copied!