Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪,

সরকারি চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবিতে মানববন্ধন

ঢাবি প্রতিবেদক

ঢাবি প্রতিবেদক

জানুয়ারি ২০, ২০২৩, ০৬:৫০ পিএম


সরকারি চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবিতে মানববন্ধন

সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর ও আবেদন ফি ২০০ টাকা করার  দাবিতে মানববন্ধন করেছে  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  চাকরি প্রত্যাশী একদল শিক্ষার্থী।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে ‍‍`চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ‍‍`।

এ সময় শিক্ষার্থীরা  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধুর নামে (বঙ্গবন্ধু ল‍‍` কমপেক্স, বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং একটি ম্যুরাল) স্থাপনের দাবিও উপস্থাপন করেন।

এ সময় চাকরি প্রতাশীরা বলেন,  করোনায়  শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে দুটি বছর ঝরে গেছে। তখন সকল চাকরির নিয়োগ বন্ধ থাকায় কেউ চাকরির আবেদন করতেও পারেনি। যেখানে বিশ্বের ১৬২ দেশে চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর, তা সত্ত্বেও করোনা মহামারির ক্ষতিগ্রস্থতার কারণে চাকুরিতে আবেদনের বয়সসীমা আরো ২ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত বাড়িয়েছে।

সেখানে এশিয়ার শুধু বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের চাকরির বয়সসীমা ৩০ বছর। কিন্তু তবুও  বাংলাদেশে তা এখনো বাড়ানো হয়নি, যা অনেকটা বৈষম্য।

বক্তারা উল্লেখ করে বলেন, ‘২০১১ সালে সরকারি চাকরি হতে অবসরের বয়স ২ বছর বৃদ্ধি করে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি। জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে (বিজেএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩২ বছর, সরকারি নার্সিং এ ৩৫ বছর এবং বেসরকারি স্কুল/কলেজে ৩৫ বছর হলেও বিসিএস আবেদনের বয়সসীমা এখনো  ৩০ বছর।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ৭১ বার বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবিটি উত্থাপিত হয়েছে এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এর সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি লিখিতভাবে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার জন্য সুপারিশ করলেও কিন্তু তা এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি।

বর্তমান সরকার ২০১৮ সালে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করলেও তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি অথচ আরেকটি জাতীয় নির্বাচন চলে আসলেও সেই মেয়াদ এখনো বৃদ্ধি করা হয়নি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, একজন শিক্ষার্থী ২৫ থেকে ২৬ বছর পড়াশোনা করে একটা সার্টিফিকেট অর্জন করলো। তবে মাত্র ৪ থেকে ৫ বছরের মাঝেই সেই সার্টিফিকেটের কোনো দাম রইলো না। ফলে তারা দেশেই বোঝা হয়ে যাচ্ছে। যারা এতদিন পরিশ্রম করছে, পড়াশোনা করছে তাদের মামা খালু না থাকায় তারা রাস্তায় ঘুরছে। তবে কিছু শিক্ষার্থী পড়াশোনা না করেই মামা খালু বা বিভিন্ন কোটায় সরকারি চাকরির সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে।

বেসরকারি চাকরির দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশে বেসরকারি চাকরি বিশৃঙ্খলায় ভরপুর। যেখানে আজ চাকরি আছে তো কাল চাকরি নেই। সেখানে বেতন স্কেলও কম ফলে চাইলেই চাকরিতে ঢুকাও যাচ্ছে না, ছেড়েও দিতে পারছে না।

এই ডিজিটাল যুগে যেখানে বেসরকারি চাকরিতে আবেদন ফি নেই সেখানে সরকারি চাকরিতে আবেদন ফ্রি ২০০ টাকাও বেশি হয়ে যায়। এটাকে ব্যাবসায় পরিণত করা হচ্ছে এবং গরিব মেধাবীদের  প্রতি জুলুম করা হচ্ছে।  তাই তিনি সকল সরকারি চাকরির আবেদন ফি শুণ্য করার আহবান জানান।

এসময় সংগঠনের পক্ষে  নিম্নলিখিত দাবিগুলো উপস্থাপন করা হয়, 
১. চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর করতে হবে
২. চাকরির আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা করতে হবে
৩. বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধু ল‍‍` কমপ্লেক্স স্থাপন করতে হবে ও আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধু চেয়ার ও একটা ম্যুরাল স্থাপন করতে হবে।
৫. একই সময়ে একাধিক সরকারি পরীক্ষার সূচি বাতিল করতে হবে।

মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, এছাড়াও বিশিষ্ঠ নাট্যকার, অভিনেতা এবং নির্মাতা সিদ্দিকুর রহমান, সাবেক ফুটবলার ও কোচ রেহানা পারভীন, ডিইউডিএস এর সাবেক সেক্রেটারি সুমন, সাংবাদিক সমিতির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী পরিষদের আহ্বায়ক শরিফুল হাসান শুভ, সদস্য সচিব মো. রাসেল, সদস্য সচিব এ আর খোকন আহ্বায়ক মো. সানোয়ারুল হক সনি সহ চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

Link copied!