Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

উত্তরের কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ

মো. অসীম চৌধুরী

মো. অসীম চৌধুরী

জানুয়ারি ৩১, ২০২৩, ০৬:৫৬ পিএম


উত্তরের কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ

গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি আর বছরের শুরুতে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে গত মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে বোরো উৎপাদনে খরচ বেড়েছে।

সার, বীজ, কীটনাশকের দাম চড়া। শীতকালে শ্রমিক সংকটও প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে । যদিও শ্রমিক পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে মজুরি বেশি। চাষের সকল উপাদানের মূল্যবৃদ্ধিতে কৃষকরা অতিরিক্ত ব্যয় সামাল দিতে যেয়ে মারাত্মক সংকটে পড়েছেন।

জানা যায়, রংপুর অঞ্চলে বিদ্যুৎচালিত গভীর-অগভীর সেচপাম্পের সংখ্যা তিন লাখ ১২ হাজার ৫২৭টি এবং ডিজেলচালিত সেচপাম্পের সংখ্যা এক লাখ ৭৩ হাজার ৩০টি। এ অঞ্চলে শুধু সেচেই কৃষকের ব্যয় বাড়বে প্রায় ১৬ কোটি টাকা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর রংপুর ও দিনাজপুর অঞ্চলে বোরো ধানের গড় উৎপাদনে খরচ হয়েছিল বিঘায় ১৪ হাজার ৯০০ টাকা এবং রাজশাহী ও বগুড়া অঞ্চলে ছিল ১৭ হাজার ৪৫০ টাকা। প্রতিটি অঞ্চল ৪টি জেলা নিয়ে গঠিত হয়। এ বছর উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় ১৩ দশমিক ২৫ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হবে। যা দেশের মোট বোরো চাষযোগ্য জমির ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ। ডিজেলের দাম বেড়েছে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের দাম ১৬ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২২ টাকা।

গত বছর আমন উৎপাদন ভালো হলেও চালের দাম কমেনি। মজুতদাররা অপেক্ষায় আছে আগামীতে চালের দাম আরও বাড়বে সে আশায়। বোরো উৎপাদনের কাচাঁমালের এমন বৃদ্ধির পরিস্থিতিতে কৃষক যেন দিশেহারা।  

রংপুর সদরের পাগলাপীর মডেল মসজিদ সংলগ্ন ৩ বিঘা ১২ শতাংশ জমিতে বোরো চাষ করছেন আমের আলী। তিনজন কৃষি শ্রমীক ও ছেলেকে নিয়ে বোরোক্ষেতে সেচ, শুকিয়ে যাওয়া চারার স্হানে নতুন চারা রোপন ও পরিচর্যা কালিন সময়ে আক্ষেপ নিয়ে বলছিলেন, ‍‍`খরচ উঠবে কিনা জানিনা বাপু, আবাদ না করলে খাবো কি? আমরা যারা আবাদ করি তাদেরকে সরকার কার্ড করে কমদামে ডিজেল দিলে উপকার হইতো। খেতে চাষ ও সেচ দিতে ডিজেল দরকার। সরকার ভর্তুকি না দিলে আমরা সামলাতে পারবোনা। সার ও কীটনাশকের দাম অনেক বেড়েছে, যে উৎপাদন খরচ হবে সে অনুযায়ী দাম পাবো কিনা জানিনা। ‍‍`

কথা হয় রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডলের সঙ্গে, তিনি জানালেন চলতি বোরো মৌসুমে রংপুর অঞ্চলে বোরে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ লাখ সাত হাজার হেক্টর জমিতে। বোরো চাষে অতিরিক্ত সেচ লাগে। সেচ দিতে যেন পানির অপচয় না হয় সেজন্য আমরা কৃষকদের লক্ষ্য রাখতে বলছি। সেই সঙ্গে সুষম সারের ব্যবহারে উৎপাদন যাতে বৃদ্ধি পায় তার জন্যও কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। খরচ কমাতে কৃষকদের পরিমিত সেচ এবং নিয়ম মেনে সার ও কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আরএস

Link copied!