Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

রোজায় যানজটে নাকাল

মো. মাসুম বিল্লাহ

মার্চ ২৯, ২০২৩, ০৪:৪২ এএম


রোজায় যানজটে নাকাল

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করছি

—মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, ডিএমপি

 যানজট রাজধানীবাসীর নিত্যসঙ্গী। আর রমজানে এ জট বেড়েছে কয়েকগুণ। রমজানের প্রথম দিন অর্থাৎ শুক্রবার ঢাকা ছিল ফাঁকা। প্রায় একই অবস্থা ছিল শনি ও রবিবার। সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিন রাজধানীর সড়কগুলো ছিল অনেকটাই ফাঁকা। কিন্তু সোমবার থেকে যানজট শুরু হয় অস্বাভাবিকভাবে। সরকারি-বেসরকারি অফিস খোলায় যানজট বেড়েছে বলে মনে করছে ট্রাফিক পুলিশ। যদিও রোজার আগে যানজট নিরসনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছিল। রমজান উপলক্ষে বাড়ানো হয়েছে ট্রাফিক পুলিশও। তবে সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর ব্যস্ততম ব্যাংকপাড়া মতিঝিলের শাপলা চত্বর মোড়, গুলিস্তান মোড়, গুলশান এলাকা, মিরপুর, পল্টন মোড়, শাহবাগ মোড়সহ প্রায় পুরো ঢাকায় তীব্র যানজট।

রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় প্রচুর যানবাহনের উপস্থিতি রয়েছে। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং বন্ধ হয়নি এখনো। অবৈধ এসব পার্কিংয়ের ফলে অর্ধেক রাস্তা ব্যবহার করা যায় না। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে গলির রাস্তায়ও চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এমনকি রাজধানীর স্বস্তির সড়কখ্যাত হাতিরঝিলের সড়কও কাটা হয়েছে। এ সড়কও পরিণত হয়েছে অস্বস্তির সড়কে। রাস্তার উন্নয়নকাজের ফলে ব্যাঘাত ঘটছে নিত্য চলাচলে। ফুটপাতে বা রাস্তার পাশে এখনো বিভিন্ন দোকান রয়েছে। এছাড়া, রমজান উপলক্ষে এখন সবাই দিনের কাজ দিনে শেষ করে। সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফেরার তাড়ায় থাকেন সবাই। ফলে একসঙ্গে অনেক মানুষের হুড়োহুড়িতে যানজট বেড়ে যায়। এতে গন্তব্যে যেতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। একই জায়গায় দীর্ঘ সময় আটকে থেকে সময় পার করতে হচ্ছে। যানজটে আটকেপড়া অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। বাধ্য হয়ে রাস্তায় ইফতার করতে হয়েছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন কেউ কেউ।

ট্রাফিক পুলিশ বলছে, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এই দুদিন যানজট বেশি হয়েছে। সব মানুষ এক সাথে বের হওয়ায় প্রতি রমজানে মতো এবারও এ সমস্যা দেখা যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর অবশ্য যানজট কমে আসে। এছাড়া মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ট্রাফিক বিভাগের সব সদস্য রাস্তায় থাকছেন। তারা রাজপথেই ইফতার করছেন। যাত্রীদের সহায়তার জন্য বাড়তি পুলিশও   মোতায়েন করা হচ্ছে। রমজানে যানজট পরিস্থিতি সহনীয় রাখতে পাঁচটি বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে অফিসের সময়সূচি বদল, বড় ইফতার মাহফিল, বিপণিবিতান ঘিরে ভিড় ও সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি। সেই সঙ্গে যানবাহন চলাচল, যাত্রী ওঠানামাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ১৫টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সদরঘাট থেকে দুপুর ১২টায় বাসে উঠেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন, যাবেন শাহবাগ। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটেও গুলিস্তান মোড় পার হতে পারেননি। তিনি বলেন, নিয়মিত এই রুটেই যাতায়াত করি। স্বাভাবিক দিনে গুলিস্তান আসতে সময় লাগে আধ ঘণ্টা। অথচ ৫০ মিনিট পরও গুলিস্তান পার হতে পারলাম না। রোজার মধ্যে মাঝ দুপুরে যানজটে অসহ্য লাগছে। মতিঝিলের বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বলেন, তিনি অফিস থেকে বের হয়েছেন ৪টায়। সাড়ে ৫টায়ও তিনি মৎস্য ভবন পার হতে পারেননি। যানজটে তিনি অতিষ্ঠ।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, এখন সবাই একই সময়ে বের হচ্ছেন। এবং একই সময় বাসায় পৌঁছানোর তাগিদ থাকে। যার কারণে যানজট বেড়েছে। রাস্তার কাজের কারণেও বিভিন্ন স্থানে যানজট দেখা যাচ্ছে। একটা কাজ শুরু হলে সেটা চাইলেই তো বন্ধ করা যায় না। যার ফলে গুলশানসহ বিভিন্ন স্থানে যানজট লেগে রয়েছে। আমরা অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাতের অবৈধ দোকানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাদের জরিমানার আওতায় আনছি।

Link copied!