বাসস
জুন ৭, ২০২৩, ০৯:২৫ পিএম
বাসস
জুন ৭, ২০২৩, ০৯:২৫ পিএম
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ দৃঢ়ভাবে বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ কখনোই কোনো বিদেশি চাপের কাছে মাথা নত করবে না। তিনি আজ ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষনে বলেন, ‘দেশি-বিদেশি চাপ যতই আসুক না কেন, বাঙালিরা কখনোই সেই চাপের কাছে মাথা নত করবে না।’ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এ সভার আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে, এ দেশ আমাদের। এদেশের মানুষের ভাগ্য নিনিয়ে আমরা কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না।” “আমরা (আওয়ামী লীগ) সংগ্রামের মাধ্যমে এদেশে গণতন্ত্র এনেছি। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ এগিয়েছে ”-উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরাই আমাদের দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করব।” ছয়-দফা ছিল বাংলাদেশের জনগণের ‘মুক্তি সনদ’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এর মাধ্যমে দেশের অগ্রযাত্রা সম্ভব হয়েছে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। আমরা রোল মডেল হিসাবেই এগিয়ে যাব।” তিনি দেশের জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাংলাদেশের জনগণকে আর কেউ দমন করতে পারবে না। তিনি বলেন, “গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ ব্যাপক পরিবর্তন ও উন্নয়ন হয়েছে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব।” এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি দলের নেতাকর্মীদের এ বিষয়ে সচেতন হতে এবং দেশের মানুষের পাশে থেকে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরার নির্দেশ দেন, যাতে তাদের ভাগ্য নিয়ে কেউ খেলতে না পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাইরের কোনো শক্তি বিএনপিকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, বরং তাদের ব্যবহার করা হবে। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর, বিএনপির উৎফুল্ল মেজাজ প্রসঙ্গে বলেন, তারা মনে করে- অন্য কোথাও থেকে কেউ এসে, তাদের আনন্দ-উল্লাস করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। কেউই এটি করবে না (তাদের ক্ষমতায় আনতে) এবং কখনও কেউ তা করে না, বরং ব্যবহার করে। এটি (তাদের) ব্যবহার করবে, কিন্তু তাদের ক্ষমতা দেবে না।” তিনি বলেন, আওয়ামী লীগই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষা করেছে এবং দেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে তারা (বিএনপি) আন্দোলন-সংগ্রাম করবে। এক দিক থেকে এটি ভাল, যে তারা যদি অগ্নিসংযোগ সহিংসতা অবলম্বন করে এবং মানুষকে হত্যা করে, তবে তারা মার্কিন ভিসা পাবে না।” তিনি বলেন, যাদের কথায় তারা (বিএনপি) নাচে, তারা তাদের (বিএনপি) ধ্বংস করবে। তিনি বলেন, “আমাদের কিছু করার নেই। এ নিয়ে আমাদের ভাবারও কিছু নেই।” তিনি (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে) আগেই বিএনপিকে আন্দোলন করতে দিতে বলে দিয়েছেন উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘তারা কতো আন্দোলন করতে পারে, করতে দিন। আমরা কিছু বলব না।’
তবে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সবসময় তাদের চোখ খোলা এবং ক্যামেরা চালু রাখতে বলেছেন, যাতে তারা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের মতো অগ্নিসংযোগ সহিংসতা, মানুষ পুড়িয়ে মারা এবং মানুষ হত্যার পুনরাবৃত্তি করতে না পারে। তবে তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) উসকানি দিয়ে দেশের বাইরে ছবি পাঠাতে পারে। তারা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে না। শেখ হাসিনা বলেন, তারা দেশের জনগণের ভোটাধিকার সুরক্ষিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরাই এদেশে গণতন্ত্র এনেছি, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা থাকায়, বাংলাদেশে আজ অগ্রগতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিম-লীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, শাহজাহান খান ও সিমিন হোসেন রিমি, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা উত্তর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও সহ-সভাপতি সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
১৯৬৬ সালের ৭ জুন, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বাঙালিদের ‘মুক্তি সনদ’ ছয়-দফা দাবির ভিত্তিতে পাকিস্তানি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করেন।
আরএস