জুলাই ২২, ২০২৩, ০৭:০৮ পিএম
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশের ফুয়েল-মিক্সে নবায়ণযোগ্য জ্বালানির অংশ বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। জ্বালানি বৈচিত্র্য, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন কৌশল গ্রহণ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে কাজ করা হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি হতে ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে সরকার এগুচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আজ ভারতের গোয়াতে জি-২০ উপলক্ষ্যে “এনার্জি ট্রানজিশন মিনিস্টারিয়াল মিটিং”-এ বক্তব্যকালে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নবায়ণযোগ্য উৎস হতে ১১৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও ৮২৫.২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রীডে আসে। নবায়ণযোগ্য জ্বালানি হতে ৩০টি প্রকল্পের মাধ্যমে আরো ১২৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প চলমান এবং ৮৬৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। অর্থাৎ নবায়ণযোগ্য জ্বালানি হতে ৯৯৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন পাইপ লাইনে আছে।
তিনি বলেন, ৬ মিলিয়ন সোলার হোম সিস্টেমের মাধ্যমে অফ-গ্রীড এলাকায় বসবাসরত ২০ মিলিয়ন লোককে আলোকিত করা হচ্ছে। সোলার মিনিগ্রীডের মাধ্যমে অফ-গ্রীড এলাকায় গ্রীডের মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে। ৭টি সোলার পার্ক করা হয়েছে। আমাদের প্রায় ১০০,০০০ টি বায়ু গ্যাস প্লান্ট রয়েছে। National Renewable Energy Laboratory (NREL)-এর সহযোগিতায় বাংলাদেশে উইন্ড রিসোর্স ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। ৫ টি প্রকল্পের মাধ্যমে ২৪৫ মেগাওয়াট বায়ু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নেপাল ও ভূটান থেকে জল-বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়াও সামান্তালে চলছে। সমন্বিত জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনাতেও নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। এখানে নবায়ণযোগ্য জ্বালানি (সৌর, বায়ু, এবং হাইড্রো ইত্যাদি), পারমাণবিক, বিদ্যুৎ আমদানি (হাইড্রো), হাইড্রোজেন, অ্যামোনিয়া, সিসিএস (কার্বন ডাই অক্সাইড) ক্যাপচার এবং কম্ববাইন্ড সাইক্যাল পাওয়ার প্লান্ট নিয়ে পরিকল্পনা সন্নিবেশিত রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রাতিল করায় প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ চলে গেছে। এই সাহসী পদক্ষেপ সবুজ এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানির প্রতি আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিচ্ছবি। একটি ঘনবসতিপূর্ণ জাতি হিসাবে আমরা নবায়ণযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নে অনন্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন । আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের ধরণ অনেক উন্নত দেশ থেকে আলাদা এবং সৌর শক্তি বেস লোড পাওয়ার হিসাবে এখানে অনুপযুক্ত। সৌর প্রকল্পের জন্য জমির অভাব একটি বড় বাধা । এই চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করতে প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং গবেষণা প্রয়োজন। নবায়ণযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে বর্জ্য থেকে জ্বালানি এবং বায়ু বিদ্যুতে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগকে আমারা স্বাগত জানাবো।
ভারতের বিদ্যুৎ এবং নতুন ও নবায়ণযোগ্য জ্বালানি মন্ত্রী আর. কে সিং, ব্রাজিলের খনি ও জ্বালানি মন্ত্রী আলেকজান্দ্রে সিলভেরা ডি অলিভেরা, ইন্দোনেশিয়ার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী আরিফিন তাসরিফ, COP 28 এর সভাপতি (মনোনীত) ডঃ সুলতান আল জাবের, গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ডঃ প্রমোদ সায়ান্তসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীগণ বক্তব্য রাখেন।
আরএস