Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

সেপ্টেম্বরে ৪০২ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪১৭, আহত ৬৫১

মো. মাসুম বিল্লাহ

অক্টোবর ৭, ২০২৩, ১২:২৬ পিএম


সেপ্টেম্বরে ৪০২ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪১৭, আহত ৬৫১

বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসে সারাদেশে ৪০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৭ জন নিহত, ৬৫১ জন আহত হয়েছে। একই সময় রেলপথে ৪৯ টি দুর্ঘটনায় ৫১ জন নিহত, ২৬ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ১৬ টি দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত, আহত ৪ এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৪৬৭ টি দুর্ঘটনায় ৪৯৬ জন নিহত এবং ৬৮১ জন আহত হয়েছে।

এই সময়ে ১৫৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭২ জন নিহত,১০৭ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৮.০৫ শতাংশ, নিহতের ৪২.৭৮ শতাংশ ও আহতের ২৬.৬১ শতাংশ।

এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১১৪ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৮ জন নিহত ও ১১২ জন আহত হয়েছে। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সিলেট বিভাগে ২৫ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯ জন নিহত ও ১০৬ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

শনিবার (৭ অক্টোবর) সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন তুলে ধরে সংগঠনটি। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১০ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৪৩ জন চালক, ৬৬ জন পথচারী, ৬০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬৫ জন শিক্ষার্থী, ৮ জন শিক্ষক, ৭৪ জন নারী, ৪৪ জন শিশু, ২ জন সাংবাদিক, ২ জন চিকিৎসক, ৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ১০ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

এদের মধ্যে নিহত হয়েছে- ২ জন পুলিশ সদস্য, ১ জন বিজিবি সদস্য, ১ জন সেনা বাহিনী সদস্য, ১ জন নৌ বাহিনী সদস্য, ২ জন চিকিৎসক, ৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ২ জন সাংবাদিক, ১০৭ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৫৮ জন পথচারী, ৪৩ জন নারী, ৩৪ জন শিশু, ২৮ জন শিক্ষার্থী, ১২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৮জন শিক্ষক ও ৭ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৫৩৪ টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ৩০.৩০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩.৯৭ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৪.৪১ শতাংশ বাস, ১৬.৪৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৪.৮৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৪.৪৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫.৪৩ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৬২.১৮ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ১৫.৮৭ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬.৯১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ২.৯১ শতাংশ বিবিধ কারনে, এবং ০.৪৩ চাকায় ওড়না পেছিয়ে ঘটে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৭.০৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৭.৬১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৯.১০ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.৪৭ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৪৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.২৪ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ :
১. ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ, দুর্বল প্রয়োগ, ট্রাফিক বিভাগের অনিয়ম দুর্নীতি বৃদ্ধি।
২. মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও  তিন চাকারযানের ব্যাপক বৃদ্ধি ও এসব যানবাহন সড়ক মহাসড়কে অবাধে চলাচল।
৩. সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা । রাতের বেলায় ফক লাইটের অবাধ ব্যবহার।
৪. চলতি বর্ষায় সড়ক মহাসড়কের ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি।
৫. যানবাহনের ত্রুটি,  ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা।
৬. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি।
৭. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশসমূহ :
১. মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানী ও নিবন্ধন বন্ধ করা।
২. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস প্রদান।
৩. রাতের বেলায় বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চালকদের রিফ্লেক্টিং ভেস্ট পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক করা।
৪. সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা।
৫. রাতের বেলায় চলাচলের জন্য জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে পর্যাপ্ত আলোক সজ্জার ব্যবস্থা করা।
৬. চলতি বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার মাঝে সৃষ্ট ছোট বড় গর্ত দ্রুত অপসারণ করা।
৭. গণপরিবহন বিকশিত করা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।

এআরএস

Link copied!