নিজস্ব প্রতিবেদক:
মার্চ ১৩, ২০২৪, ০৫:১৮ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মার্চ ১৩, ২০২৪, ০৫:১৮ পিএম
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) মনে করে, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ফলে ভোক্তাদের মাসিক খরচ গড়ে ৯.৪ শতাংশ বাড়বে।
গতকাল বুধবার সিপিডি ভবনে বিদ্যুতের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধি; ভর্তুকি সমন্বয়ের অন্য বিকল্প আছে কী? শীর্ষক শিরোনামে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরে সিপিডি।
এসময় সিপিডির পরিচালিত জরিপের তথ্য তুলে ধরা বলা হয়েছে, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে বাসা বাড়িতে গড়ে বাড়তি বিল দিতে হবে প্রায় সাড়ে ৯ শতাংশ। শীতে গড়ে মানুষকে অতিরিক্ত ১০৬ টাকা আর গরমকালে ১১৮ টাকা বাড়তি বিল দিতে হবে।
সিপিডির গবেষক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সমন্বয়ের নামে দাম বৃদ্ধি ভোক্তাদের নাভিশ্বাস বাড়াবে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, বিদ্যুতের বর্ধিত ক্যাপাসিটির খরচ না কমিয়ে ভর্তুকির চাপ ভোক্তার ওপর চাপানো অযৌক্তিক। চাহিদার তুলনায় তিনগুণ হারে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর পেছনে সরকারের ভেতরে-বাইরে যোগসাজশের ইঙ্গিত দিয়েছে সিপিডি।
ইউনিট প্রতি ৩৪ থেকে ৭০ পয়সা পর্যন্ত বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। ৮.৫ শতাংশ দাম বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকরের ঘোষণা দিয়ে ভোক্তার ওপর এক বছরের ব্যবধানে সাড়ে ১৭ শতাংশ বাড়তি খরচের বোঝা চাপিয়েছে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে সিপিডির গবেষকরা বলছে, ভর্তুকি সমন্বয়ের নামে দর বৃদ্ধির ফলে শিল্পকারখানার খরচের পাশাপাশি ভোক্তাদের খরচ বাড়বে ৯.৪ শতাংশ।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিইআরসি`কে পাশ কাটিয়ে নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক বলে মনে করে সিপিডি। চাহিদার তুলনায় দ্বিগুণ হারে বাড়তে থাকা উৎপাদন সক্ষমতা সমন্বয় না করে ভোক্তার ওপর বাড়তি চাপ দেয়ার সমালোচনা করেন তারা।
সিপিডি জানায়, পরিকল্পনামাফিক সরকার আরও দু’বার দাম বৃদ্ধি করলে অর্থনীতিতে চাপ আরও বাড়বে। তাই বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্য সমন্বয়ে বিইআরসির গণশুনানির পদ্ধতি পুনর্বহালের তাগিদ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সিপিডি বলেছে, আমরা মূলত চারটি বিকল্প সরকারের কাছে তুলে ধরতে চাই।
আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে চারটি কৌশলের মাধ্যমে সরকার ভর্তুকি সমন্বয় করতে পারে, সরকার তার পরিকল্পনা মত যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে ফেজ আউট করতে চায়, কুইক রেন্টালগুলোতে ফেজ আউট ঘোষণা হয়েছে, সময়মতো সেগুলো থেকে ফেজ আউট করবে। নতুন যে বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে সেগুলোতে ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি নো পে’, পুরোনোগুলোর চুক্তি শেষ হওয়ার পরে সেগুলো সব নো ইলেক্ট্রিসিটি নো পে এরকম ভাড়ায় চুক্তি করবে। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির খুব কম অংশ ভোক্তার ওপরে দেওয়া যেতে পারে।
যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো ফেজ আউট হবে, সরকার বলছে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য বিদ্যুতে যেতে চায়, সে লক্ষ্যে যাওয়ার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে বন্ধ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতকেন্দ্র দিয়ে রিপ্লেস করতে হবে, যেটা সরকারের পরিকল্পনারই অংশ।
এই চারটি বিষয়কে বিবেচনায় নিয়ে যদি সরকার তার পরিকল্পনা ঘোষণা করে, তাহলে ২০২৯ সালের ভেতরে সরকারকে আর ভর্তুকি দিতে হবে না।
বিআরইউ