নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ৬, ২০২৪, ১২:১১ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
জুন ৬, ২০২৪, ১২:১১ এএম
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সফল তৎপরতায় একদিকে যেমন বেড়েছে দেশীয় ফলের উৎপাদন, তেমনি অন্যদিকে কমেছে বিদেশি ফলের আমদানি নির্ভরতা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফল উৎপাদনে পৃথিবীর প্রথম সারির ১০টি দেশের মধ্যেই বাংলাদেশের অবস্থান। দ্রুত উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় ফলের মাথাপিছু প্রাপ্যতাও বেড়েছে কয়েকগুণ। যেখানে ২০০৬ সালে মাথাপিছু দৈনিক ফল গ্রহণের পরিমাণ ছিল ৫৫ গ্রাম, ২০১৮ সালে তা বৃদ্ধি পেয়েছে ৮৫ গ্রামে। মাথাপিছু ফল গ্রহণের এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখায় এবং বিগত কয়েক বছরে আরও বৃদ্ধি হওয়ায় হ্রাস পেয়েছে পুষ্টিহীনতাও।
আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ফল চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও তিন দিন ব্যাপী জাতীয় ফল মেলা ২০২৪ পালন করতে যাচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়। ‘ফলে পুষ্টি অর্থ বেশ-স্মার্ট কৃষির বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি) চত্বরে আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে এই মেলা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ মেলা শেষ হবে শনিবার।
এবারের ফল মেলায় অংশগ্রহণ করবে আটটি সরকারি ও ৫৫টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। মোট ৬৩টি স্টলে বিভিন্ন ধরনের ফল ও ফল চাষ প্রযুক্তি প্রদর্শন করা হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে মেলা। আগত দর্শনার্থীরা ফল চাষের বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্পর্কেও জানতে পারবেন এবং রাসায়নিকমুক্ত বিভিন্ন জাতের ফল কিনতেও পারবেন।
মেলা উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে কেআইবি চত্বর পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা হবে। সকাল ১০টায় কেআইবি চত্বরে মেলার উদ্বোধন করবেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ। এরপর কেআইবি মিলনায়তনে ফল নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
শনিবার শেষদিন বিকালে বিএআরসি মিলনায়তনে ফল মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে মোট ফল উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ ৩৩ হাজার টন। এর মধ্যে আম উৎপাদন হয়েছে ২৭ লাখ টন, লিচু ২ লাখ ৩০ হাজার টন, কাঁঠাল ১৮ লাখ ২৪ হাজার টন ও আনারস উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৮০ হাজার টন।
এদিকে কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ফলের উৎপাদনে দেশে সম্প্রতি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমানে দেশে ফলের উৎপাদন প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টন। গত ২ দশক ধরে দেশে ফল উৎপাদন বৃদ্ধির হার ছিল বছরে গড়ে ১১ শতাংশের ওপরে।
বর্তমানে দেশে আমের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বেড়েছে। চিরায়তভাবে গড়ে ওঠা রাজশাহী, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুরের বাগানগুলো ছাপিয়ে এখন প্রচুর আম উৎপাদিত হচ্ছে সাতক্ষীরা ও চট্টগ্রামের পার্বত্য এলাকায়। তা ছাড়া বরেন্দ্র অঞ্চলের অনেক ধানিজমিও পরিণত হয়েছে আম বাগানে। অধিকন্তু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা হচ্ছে নতুন ফল স্ট্রবেরি। আরও চাষ করা হচ্ছে রাম্বুতান, ড্রাগন ফল ও অ্যাভোকেডো। মানুষ আপেলের পরিবর্তে বেশি করে খাচ্ছে কাজী পেয়ারা। তাতে বিদেশি ফলের আমদানি যেমন হ্রাস পাচ্ছে তেমনি সাশ্রয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রাও।
আরএস