Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

‘বস্তায় করে ঘুষ নিতেন আসাদুজ্জামান খান’

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ১৬, ২০২৪, ১১:৩২ এএম


‘বস্তায় করে ঘুষ নিতেন আসাদুজ্জামান খান’

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বস্তায় করে ঘুষ নিতেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসে নিয়োগ দিতেন তিনি বস্তা ভর্তি টাকা ঘুষ নিয়ে। শুধু তার বিরুদ্ধেই নয়, এমন অভিযোগ উঠেছে তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধেও।

এমন গুরুতর অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সংস্থাটির উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

আসাদুজ্জামান খান ছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তারা হলেন- মন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব (পিএস) ও অতিরিক্ত সচিব ড. হারুন অর রশিদ বিশ্বাস, যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেন, সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মনির হোসেন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু।

দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দুদকের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম জানান, কমিশন সভায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে বস্তায় বস্তায় ঘুষ-বাণিজ্যের অভিযোগ শিরোনাম একটি অভিযোগ জমা হয়। সেটা অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিন্ডিকেটের অন্য সদস্য ছিলেন যুগ্মসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মনির হোসেন, জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেনের বিরুদ্ধেও অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আবুল ফজল মীর ওরফে বাদল, যুগ্মসচিব মোহাম্মদ হোসেন ও উপসচিব মাহবুবুর রহমান শেখের বিরুদ্ধে একই সিন্ডিকেট থেকে দুর্নীতি, অনিয়মের অংশীদার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে বলে কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

দুদকের আরেক কর্মকর্তা জানান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এ তদন্ত কমিটি পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের দুর্নীতির খোঁজখবর নেবে ৷ কোনো কোনো কর্মকর্তা তাদের লাভজনক পদে পোস্টিংয়ের জন্য, সাবেক স্বরাষ্ট্রন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন সময় ঘুষ ও উপহার দিয়েছেন, সেটিরও একটি তালিকা করা হবে। এ তালিকায় পুলিশের অন্তত অর্ধশত বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার নাম রয়েছে।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকে জমা হওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ঘুষ হিসেবে বস্তায় ভরে টাকা নিতেন। পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, কারা অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস থেকে এ টাকা আদায় করা হতো। এজন্য তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাসের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন তিনি৷ টাকা আদায় বা উত্তোলনে মূল ভূমিকা পালন করতেন ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাস। হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এ কামাল-হারুন সিন্ডিকেট।

কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভে ফাইভ স্টার হোটেল নির্মাণের জন্য আসাদুজ্জামান খান কামাল ৩০ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। ঢাকায় রয়েছে একাধিক বাড়ি ও গাড়ি। এসব সম্পদ তিনি তার ছেলে জ্যোতির নামে করেছেন। ড. হারুন অর রশীদ অবসরে গেলেও এ মন্ত্রণালয়ের সব ঘুষ, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। ঝুঁকি এড়াতে টাকাগুলো পাঠানো হয়েছে দেশের বাইরে ৷

অভিযোগ আরো রয়েছে, বিভিন্ন জেলায় পুলিশ সুপার নিয়োগে সর্বনিম্ন ১ কোটি টাকা থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত নিত এই চক্র৷ এই সিন্ডিকেটের আশীর্বাদ ছাড়া পুলিশের কেউ কোনো জেলায় বা গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন পেতেন না।

বিআরইউ

Link copied!