আমার সংবাদ ডেস্ক
ডিসেম্বর ৩, ২০২৪, ০৫:৩৪ পিএম
আমার সংবাদ ডেস্ক
ডিসেম্বর ৩, ২০২৪, ০৫:৩৪ পিএম
একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক আটকে থাকার কারণ নেই, আমাদের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক গঠনমূলক সম্পর্ক নির্মাণ করতে চায় ভারত।
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দেশটির হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হলে সেখানে হাজির হন তিনি। পরে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আধা ঘণ্টার এই বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহর সঙ্গে কথা হয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার।
তিনি আরও বলেন, ভারত পারস্পারিক আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে এবং শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক। আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখব। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক আটকে থাকবে না। আমরা দুই দেশের মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে আগ্রহী।
এর আগে বিকেলে চারটায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন প্রণয় ভার্মা। ঠিক সে সময়ই অফিস ছেড়ে যাচ্ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
এসময় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকে হাইকমিশনার কথা বলুক। বাংলাদেশ ভারত সম্পর্কে আন্তরিকতা বাড়াতে বাংলাদেশের যতটুকু যা করার আমরা তা করবো।
প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার দুপুরে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় সেখানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা টেনে হিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়। হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামের একটি সংগঠনের সমর্থকরা এই হামলা চালান বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সোমবার হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির সভা ছিল আগরতলার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের সামনে। সভা শেষে সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল হাইকমিশন কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে যায়। এসময় বাইরে থাকা কয়েক যুবক হঠাৎ সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে ঢুকে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিড়ে ফেলে। তারা হাইকমিশন কার্যালয়ের কিছু সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে ও আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সহকারী হাইকমিশনে হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আগরতলার হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে হিংসাত্মক বিক্ষোভ ও আক্রমণের কারণে বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে ক্ষুব্ধ।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রাপ্ত তথ্য চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করে যে বিক্ষোভকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। এসময় স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে তারা পতাকার খুঁটি ভাঙচুর করে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করে এবং সহকারী হাইকমিশনের অভ্যন্তরের সম্পত্তিও ক্ষতিগ্রস্ত করে। দুঃখের বিষয়, হাইকমিশন প্রাঙ্গণ রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা শুরু থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা রাখেনি। সহকারী হাইকমিশনের সব সদস্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।’
‘বাংলাদেশ সরকার আরও জানাতে চায় যে, বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনের ওপর এই জঘন্য হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অসম্মান একটি প্যাটার্নে এসেছে, গত ২৮ নভেম্বর কলকাতায় একই ধরনের হিংসাত্মক বিক্ষোভ হয়েছিল। আগরতলায় কূটনৈতিক মিশনের ওপর এমন হামলা ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোমেটিক রিলেশন, ১৯৬১ লঙ্ঘন হয়েছে।’
আরএস