রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৮, ২০২৪, ০৬:০৮ পিএম
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ৮, ২০২৪, ০৬:০৮ পিএম
রাজারহাট উপজেলাজুড়ে মানসম্মত আলু বীজের তীব্র সংকট দিশেহারা কৃষক।বিএডিসি থেকে বীজ সরবরাহ করা হলেও চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়ছে আলু চাষীরা।অপরদিকে বি গ্রেড আলুর চাহিদা বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত মুল্যবৃদ্ধিতে বিক্রি হচ্ছে বীজ আলু।উপজেলাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে বোরো ধান কাটা শেষ পর্যায়ে।বোরো ধান কেটে আলু চাষের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে কৃষিজমি। জমি তৈরি শেষ করে বীজ আলু ও সার সংগ্রহে তৎপর কৃষক।
বাজারে সময়মতো বীজ ও আলু সরবরাহ না পেয়ে কমদরে জমি বর্গা দিচ্ছে চাষি। চাহিদার সুযোগ কাজে লাগিয়ে নীতিমালা উপেক্ষা করে উপজেলা বিএডিসির তালিকাভুক্ত ডিলাররা নিজেদের খেয়াল-খুশি মতো উচ্চ মূল্যে আলু বীজ বিক্রির অভিযোগ তুলেন কৃষকরা।নীতিমালা অনুযায়ী ডিলাররা ৫৮টাকা কেজি দরে আলু বীজ ক্রয়ের পর কৃষকদের নিকট সর্বোচ্চ ৬৬টাকা কেজি দরে বিক্রির নিয়ম থাকলেও এই নীতিমালা কেউ মানছেন না। বরং অধিকাংশ ডিলাররা প্রতি কেজি বীজ আলু ১শ টাকার উপরে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
রাজারহাট উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২হাজার ৫শ ৮৫হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।এতে আলু চাষ করতে প্রতি হেক্টর জমিতে দেড় মেট্রিক টন হিসেবে ৩হাজার ৮৭৭মেট্রিক টন আলু বীজের প্রয়োজন।অথচ! উপজেলার ২৫জন বিএডিসি ডিলারকে ২.৫৬মেট্রিক টন হিসেবে সর্বমোট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ৬৪মেট্রিক টন আলু বীজ। যা চাহিদার তুলনায় ৬০ভাগের এক ভাগ মাত্র।উপজেলা সদরের গোবর্ধন দোলা গ্রামের কৃষক নুর কামাল বলেন,আমার নিজের এবং ভাড়া নেয়া জমি সহ ২একর জমিতে আলু বীজ বপনের প্রস্তুতি নিয়েছি,তবে ডিলাররা ৫৮টাকা কেজির আলু বীজ ১থশ টাকার উপরে বিক্রি করায় বীজ সংগ্রহ করতে পারিনি।একই গ্রামের আকরাম হোসেন বলেন,দুই একর জমিতে আলু বপনের প্রস্তুতি নিয়েছি।অনেক দিন ডিলারের পিছনে ঘুরেছি সবাই বলে বীজ নাই। পরে ডিলার তপু ও শাহিন কেজি ১১০টাকা করে হলে বীজ দিতে রাজী হন। শেষে বাধ্য হয়ে বাবু মিয়া নামের একজন ব্যবসায়ী`র কাছ থেকে ১০০টাকা কেজি দরে ৩০বস্তা আলু বীজের জন্য অর্ধেক টাকা বায়না দিয়েছি।
উপজেলা সদরের দূর্গারাম গ্রামের আলু চাষি আবু সাঈদ, গোবর্ধন দোলা গ্রামের আলম মিয়া,ফুলবাড়ি উপনচৌকি গ্রামের আরিফুল ইসলাম, উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের পীর মামুদ গ্রামের নজির হোসেন,আব্দুল মজিদ,আক্কাছ আলী সহ শতশত কৃষক আলু বপনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করলেও বাজারে আলু বীজ পাওয়া যাচ্ছে না।
ডিলাররাও বলছেন বিএডিসিথর বীজ নেই।বিএডিসিথর ডিলার শাহিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অভিযোগ অস্বীকার করে ডিলার তপু বলেন,সামান্য বরাদ্দ পাওয়ায় অনেক আগেই আলু বীজ বিক্রি শেষ হয়েছে। কারো কাছে বেশি দাম নেয়া হয়নি।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুন্নাহার সাথী বলেন,বিএডিসিথর বরাদ্দ কম দেয়ায় কোন কোন ডিলার অন্যান্য কোম্পানির আলু বীজ বিক্রি করছেন,সেক্ষেত্রে মূল্য কিছুটা বেশি হতে পারে। তবে তদারকি করা হচ্ছে,বিএডিসি বীজ কেউ বেশি মূল্যে বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান বলেন,অতিরিক্ত মূল্যে বিএডিসিথর আলু বীজ বিক্রির অভিযোগ উঠায় আমি এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি)কে নির্দেশ দিয়েছি।
আরএস