আশিকুজ্জামান লিমন, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)
জানুয়ারি ২৭, ২০২৫, ০২:২১ পিএম
আশিকুজ্জামান লিমন, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)
জানুয়ারি ২৭, ২০২৫, ০২:২১ পিএম
লবন উৎপাদনে নতুন এক সম্ভাবনাময় শ্যামনগর উপকূল অঞ্চল৷ উপকূল অঞ্চল কখনোই মিষ্টি মাটিতে পরিনত করা সম্ভব না৷ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে লবণাক্ততার প্রভাব কাটানো সম্ভব না৷ যার ফলে সেই সব এলাকার মানুষেরা জমিতে মৎস্যঘেরী প্রস্তুত করে আসছে৷
সাদা সোনাখ্যাত পরিচিত বাগদা চিংড়ি মাছ উপকূল অঞ্চলে চাষাবাদে খুবই জনপ্রিয়৷ দক্ষিণ অঞ্চল থেকে এই চিংড়ি মাছ চাষাবাদের মাধ্যমে রপ্তানি করা হয়ে থাকে৷ অপরদিকে এ অঞ্চলের মানুষেরা কর্মসংস্থানের অভাবে সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল৷
তবে লবণ উৎপাদনে নতুন এক সম্ভবনাময় শ্যামনগর উপকূল অঞ্চলকে নতুনভাবে প্রত্যাশা করছেন সচেতনমহল৷
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে উৎপাদিত লবণকে কেন্দ্র করে বৃহৎ শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সমুদ্রের লোনা পানি দ্বারা ডিসেম্বর থেকে মধ্য মে পর্যন্ত লবণ উৎপাদিত হয়ে থাকে।
বর্তমানে খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে লবণ উৎপাদন শুরু হয়েছে। পূর্বে মানুষ সমুদ্রের পানি চুলায় জ্বাল দিয়ে বা রোদে শুকিয়ে (সৌর পদ্ধতিতে) লবণ উৎপাদন করা হতো। ২০০০-২০০১ সাল থেকে পলিথিন পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদন শুরু হয়। সনাতন পদ্ধতিতে একর প্রতি লবণের উৎপাদন ছিল ১৭.২৫ মেট্রিক টন এবং নতুন পদ্ধতিতে প্রতি একরে লবণ উৎপাদিত হয়ে থাকে প্রায় ২১ মেট্রিক টন। এই পদ্ধতিতে সনাতন পদ্ধতির তুলনায় ৩৫ শতাংশের অধিক ও আন্তর্জাতিক মানের লবণ উৎপাদিত হয়, যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করার সম্ভবনা সৃষ্টি করে। একইভাবে শ্যামনগর উপকূল অঞ্চলেও লবণ উৎপাদন করা সম্ভব৷
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) সাতক্ষীরা ডেপুটি ম্যানেজার গৌরব দাস বলেন, বর্তমান সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী লবণ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আমরা শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নে বিসিকের লীজ নেয়া প্রায় ১০ একর জায়গায় পরিক্ষামূলক কার্যক্রম চলছে৷ পরীক্ষায় সফল হলে আমরা অন্যান দপ্তরের সাথে সমন্বয়ে পুরাপুরি কাজ শুরু করে দেবো ৷
বিসিকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত শ্যামনগরের গাবুরা, বুড়িগোয়ালীসহ কয়েকটি ইউনিয়নে লবণ উৎপাদন হতো ৷ কিন্তু দাম ও মান এবং আধুনিকতার ছোঁয়াতে সেগুলো বিলুপ্ত হয়ে যায় ৷ বর্তমানে লবণের ঘাটতি মেটাতে নতুন করে লবণ উৎপন্ন করার চিন্তা মাথায় নিয়েছেন সরকার৷
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রনি খাতুন বলেন, বিসিকের লবণ চাষের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গাবুরাবাসী নদীর লবণাক্ততাকে কাজে লাগিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলকভাবে লবণ চাষ করতে পারে। বাংলাদেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর লবণের চাহিদা মেটে কক্সবাজারের লবণ চাষের মাধ্যমে এবং কক্সবাজারে যারা আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ চাষ করে তারা একর প্রতি ২ থেকে ৩ লাখ টাকা প্রফিট করতে পারে বলে বিসিকের মাধ্যমে জানতে পারি। সঠিক পদ্ধতিতে লবণ চাষ করলে গাবুরাবাসীরও আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে যে সকল ভূমিতে লবণ পানি ইতোমধ্যে আছে সে সকল ভূমিকে পরীক্ষামূলকভাবে বেছে নিতে পারেন।
ইএইচ