আমার সংবাদ ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম
আমার সংবাদ ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫, ০৭:৫৪ পিএম
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বক্তব্যের পাল্টা জবাবে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। আশপাশ থেকে দু’চারজন কি বলল, না বলল সেটাতে মনোযোগ না দিয়ে আমরা বরং আমাদের সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করি।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জয়শঙ্করের বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
তৌহিদ হোসেন বলেন, উনি (জয়শঙ্কর) বলেছেন, কেমন সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ; সেটা বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অবশ্যই বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। একইভাবে ভারতকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়। এটা দুই পক্ষেরই বিষয়, এটা বলাতে দোষের কিছু নাই।
ভারতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপদেষ্টা জানান, আমার মনে হয়, আমাদের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত আছে এ ব্যাপারে। আমরা ভারতের সঙ্গে গুড ওয়ার্কিং রিলেশনস, আমরা সেটা চাই একটা পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং যার যার আগ্রহের বিষয় আছে, এ ব্যাপারে আমাদের কোনো অস্পষ্টতা নেই।
উপদেষ্টা বলেন, তবে উনি (জয়শঙ্কর) কিছু বলেছেন, বাংলাদেশের বিভিন্নজন বিভিন্ন আপত্তিকর কথা বলছে, সরকারের ভেতর থেকে। আমি এটা নিয়ে ন্যায়-অন্যায় উচিত-অনুচিত বিচার করতে চাই না। কিন্তু আমার কথা হলো, এ রকম কথা আমাদের এখান থেকে বলছে, ওনাদের ওখান থেকেও বলছে।
পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী পাঠানোর প্রসঙ্গ টেনে তৌহিদ হোসেন বলেন, ওনাদের মুখ্যমন্ত্রী তো পারলে এখানে জাতিসংঘ ফোর্স পাঠিয়ে দেন। ওনাদের একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অহরহ বাংলাদেশ বিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। এগুলো চলতে থাকবে ধরে নিয়ে আমরা চেষ্টা করছি সম্পর্ক ভালো করা যায় কিনা, কাজেই আমাদের অবস্থান সেটাই। আশপাশ থেকে দু’চারজন কি বলল না বলল সেটাতে মনোযোগ না দিয়ে আমরা বরং আমাদের সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করি।
ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ঢাকা-দিল্লির সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর অভিযোগ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সম্পর্ক ভালো করতে গেলে আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী যে ওখানে ভারতীয় আতিথেয়তায় থেকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলছেন, এগুলো আসলে সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। ওনার বক্তব্য যে সেটা আগুনে ঘি ঢালছে এটা তো স্বীকৃত ব্যাপার, এটা সবাই জানে।
ভারতীয় ভিসা প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, ভিসা তাদের অধিকার। তারা কাউকে ভিসা না দিলে আমাদের কিছু বলার নাই। যখন ভিসা দেওয়া হচ্ছে না তখন আমরা তো বিকল্প খুঁজে নেব। কোনো সমস্যা থাকলে আমাদের বিকল্প দেখতেই হবে।
ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, সংখ্যালঘু সম্পর্কে উনি আবার বলেছেন। এই অভিযোগ প্রধানত ভারতীয় মিডিয়ার যে বিবৃত তথ্য প্রবাহ সৃষ্টি করেছে তার ভিত্তিতে এইগুলো বিভিন্নজন বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ভারতের বিষয় হতে পারে না। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু বাংলাদেশের বিষয়। ভারতের সংখ্যালঘুর বিষয়টি আবার তাদের বিষয়। কাজেই এ ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপে যেতে হবে।
রোববার নয়াদিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য উৎসবে দেওয়া বক্তব্যে জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা নয়াদিল্লির সঙ্গে কোন ধরনের সম্পর্ক চায়। এই দুই প্রতিবেশী দেশ খুবই বিশেষ ইতিহাস ধারণ করে, যার শিকড় ১৯৭১ সালে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
আরএস