আমার সংবাদ ডেস্ক
মার্চ ৩, ২০২৫, ০৭:৫৫ পিএম
আমার সংবাদ ডেস্ক
মার্চ ৩, ২০২৫, ০৭:৫৫ পিএম
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁও বন ভবনে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস- ২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন পরিবেশ উপদেষ্টা। ছবি: পিআইডি
ঢাকা, ৩ মার্চ, ২০২৫ (বাসস) : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বনভূমি ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
তিনি সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘আগুনের পুনরাবৃত্তি রোধে আমাদের আরও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা চাই, চিড়িয়াখানাগুলো প্রাণীদের জন্য আরও উন্নত বাসস্থান হোক। সাফারি পার্কগুলোর কাঠামো পুনর্বিন্যাস করে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে; যাতে প্রাণীগুলো মুক্ত পরিবেশে চলাফেরা করতে পারে। পাশাপাশি, সাফারি পার্কগুলোতে চিকিৎসা সুবিধা বাড়াতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে।’
আজ রাজধানীর আগারগাঁও বন ভবনে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস- ২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ছিল: ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অর্থায়ন, মানুষ ও ধরিত্রীর উন্নয়ন’।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাওয়া প্রাণীগুলোকে প্রাকৃতিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ময়ূর পুনঃপ্রবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছি। সাফারি পার্কে ময়ূর অবমুক্ত করা হয়েছে এবং প্রকৃতিতেও তাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে। মধুপুর শালবনে নতুন করে ১৫০ একর এলাকায় প্রকৃতিবান্ধব বনায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য আমাদের গর্বের বিষয় কিন্তু একইসঙ্গে এটি নানা হুমকির মুখে রয়েছে। তবে আশার বিষয়, ইতিবাচক অনেক পরিবর্তনও ঘটছে। একটি সুসংবাদ দিতে চাই- আমাদের বন অধিদপ্তরের জন্য নতুন ৩৬০টি পদের অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এটি আমাদের বন সংরক্ষণ ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষার প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করবে।’
উপদেষ্টা বলেন, মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হাতির করিডোর তৈরির প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী মাস থেকে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর আমরা বহু মেছোবিড়াল উদ্ধার করেছি এবং প্রথমবারের মতো ‘মেছোবিড়াল দিবস’ পালন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে জনসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে; যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা কেবল বন্যপ্রাণী ফিরিয়ে আনাই নয়, তাদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থলও নিশ্চিত করতে চাই। প্রকৃতি, বন এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে মানুষের সচেতনতা ও অংশগ্রহণই আমাদের মূল শক্তি।’
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন মো. খায়রুল হাসান, অতিরিক্ত সচিব (সচিবের রুটিন দায়িত্বে), পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং দুবাই সাফারি পার্ক, দুবাই’র বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ, সাবেক প্রিন্সিপাল ওয়াইল্ড লাইফ স্পেশালিস্ট ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান।
বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপন করেন ড. মোহাম্মদ ফিরোজ জামান, অধ্যাপক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, কান্ট্রি ডিরেক্টর, ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটি, বাংলাদেশ এবং ইমরান আহমেদ, বন সংরক্ষক, খুলনা অঞ্চল, বন অধিদপ্তর; মো. ছানাউল্যা পাটওয়ারী, বন সংরক্ষক, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, বন অধিদপ্তর এবং এ বি এম সারোয়ার আলম, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, আইইউসিএন বাংলাদেশ।
এসময় বিশেষজ্ঞরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্যপ্রাণী বিষয়ে স্বতন্ত্র বিভাগের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা ‘এসো চিনি বন্য প্রাণী’ এবং ‘ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
আরএস