এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ১০:৩১ এএম
জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। মানবতাবিরোধী অপরাধ ও দুর্নীতির অভিযোগে তিন ধাপে এই আবেদন পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) সূত্র জানায়, আদালত, তদন্ত সংস্থা ও রাষ্ট্রপক্ষের অনুরোধে এ আবেদন করা হয়। ইন্টারপোলের সদস্যভুক্ত ১৯৬টি দেশের কাছে পলাতক ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
যাঁদের বিরুদ্ধে আবেদন করা হয়েছে, তাঁরা হলেন—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, আ ক ম মোজাম্মেল হক, হাছান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মহিবুল হাসান চৌধুরী, শেখ ফজলে নূর তাপস, মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, নসরুল হামিদ, মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ।
বেনজীরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও আর্থিক অপরাধের অভিযোগে রেড নোটিশ চাওয়া হয়েছে। অন্যদের বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ততার অভিযোগ।
শেখ হাসিনাসহ অধিকাংশ আসামি বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই গত বছরের আগস্টের আগে-পরে দেশ ছাড়েন। শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান এবং এখনো সেখানে রয়েছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকায় তাঁকে ফেরানোর জন্য ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা চলমান। এর মধ্যে একটি মামলায় ২০২৩ সালের গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। আগামীকাল রোববার এ মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য রয়েছে।
ইন্টারপোল এখনো রেড নোটিশ জারি করেনি। কারণ হিসেবে কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনীতি সংশ্লিষ্ট অভিযোগে ইন্টারপোল সাধারণত বেশি যাচাই-বাছাই করে থাকে। তবে বেনজীরের বিরুদ্ধে আর্থিক অপরাধ হওয়ায় তাঁর ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
বর্তমানে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ তালিকায় বাংলাদেশি ৬২ জনের নাম রয়েছে। নতুন করে আবেদন করা ১২ জনের নাম এখনো তালিকায় যুক্ত হয়নি।
পুলিশের একাধিক সূত্র বলছে, রেড নোটিশ জারি হলেও এটি সরাসরি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নয়। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তির আন্তর্জাতিক ভ্রমণে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এবং কোনো দেশে প্রবেশ বা প্রস্থানে তাঁকে আটক করা হতে পারে।
অনেকে অন্য দেশের নাগরিকত্ব বা স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি পেয়েছেন। তাছাড়া প্রভাবশালী পলাতকরা লবিস্ট নিয়োগসহ নানা মাধ্যমে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশের সূত্রগুলো।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক বলেন, ‘আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করতে ইন্টারপোল সহযোগিতা করে থাকে। রেড নোটিশ সংক্রান্ত আবেদনের প্রক্রিয়া চলমান।’
বিআরইউ