Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

লোডশেডিং, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে সরকারের সক্ষমতার ব্যাখ্যা দিলেন আমিনুল ইসলাম

মো. মাসুম বিল্লাহ

জুলাই ২৮, ২০২২, ০৫:২৮ পিএম


লোডশেডিং, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে সরকারের সক্ষমতার ব্যাখ্যা দিলেন আমিনুল ইসলাম

লোডশেডিং, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপপ্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। 

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এসব বিষয়ে সরকারের সক্ষমতা তুলে ধরেন তিনি। তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

ব্যক্তিগত ফেসবুকে আমিনুল ইসলাম আমিন লিখেন-‘বিদ্যুতে নিয়ন্ত্রিত লোডশেডিং শুরু হওয়ার পর কিছু মিডিয়া ভয়াবহ প্রোপাগান্ডা করছে। 

এসব মিডিয়ার তথ্য ফেইসবুকে ভাইরাল হয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক, ভীতি, শঙ্কা তৈরি করছে। গণমাধ্যমে লোডশেডিং, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্টের বড় অংশই ভয়াবহ মিথ্যা ও অনুমানের ওপর ভিত্তি করে লেখা। আসুন এবার মিলিয়ে নিই কিছু মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ ও বাস্তবতা! 

১. ভারতের আদানি গ্রুপ এখনো বিদ্যুৎ উৎপাদনে যায় নি। ২০১৭ সালে পিডিবি তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তি করে। ওই চুক্তির কারণে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের কাছে তাদের পাওনা হয়েছে এক হাজার ২১৯ কোটি টাকা। (প্রকাশিত হয়েছে ডয়েচেভেলে ২০ জুলাই ২০২২, বিজনেজ স্ট্যান্ডার্ডও একই সংবাদ ছেপেছে)

আসল সত্য: চুক্তি অনুযায়ী বাণিজ্যিক উৎপাদন বা সিওডি (কমার্শিয়াল  অপারেশন ডেট) শুরু হবার আগে কোন বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ বা বিদ্যুতের জন্য পেমেন্ট দেয়ার কোন সুযোগ নেই। ভারতের  আদানি গ্রুপের ক্ষেত্রেও একই শর্ত প্রযোজ্য বিধায় এখনো উৎপাদনে না আসা আদানি গ্রুপকে ক্যাপাসিটি চার্জ বা বিদ্যুতের জন্য কোন অর্থ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।

২. বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি অনুযায়ী উৎপাদন না হলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে শুধু সক্ষমতার জন্য নির্দিষ্ট হারে অর্থ (ক্যাপাসিটি চার্জ) পরিশোধ করতে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগকে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে গিয়েই প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের। 

বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধের এ তালিকায় নতুন করে যুক্ত হতে যাচ্ছে সামিট, ইউনিক ও রিলায়েন্সের ১ হাজার ৯০০ মেগাওয়াটের বেশি সক্ষমতার এলএনজিভিত্তিক আরো তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র। ( বণিকবার্তা, ২৩ জুলাই ২০২২)

আসল সত্য: বাণিজ্যক উৎপাদন বা সিওডি (কমার্শিয়াল অপারেশন ডেট) হবার আগ পর্যন্ত কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সিওডি ঠিক করা হয়নি, নির্মাণ কাজও শেষ হয়নি।  এসব তথ্য একদমই অনুমান নির্ভর। বরং কেন্দ্র তিনটি উৎপাদনে এলে সাশ্রয়ীমূল্যে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের গড় ব্যয় কমবে। 

৩. বলা হচ্ছে তেলের মজুদ তলানীতে । আছে মাত্র ৩৬ দিনের মজুদ! 

আসল সত্য হচ্ছে: বাংলাদেশে সব মিলিয়ে ৪০/৪২ দিনের তেল মজুদ রাখার সক্ষমতা আছে। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী ৩৬ দিনের তেলের মজুদ থাকলেও ভয়ের কি আছে তাই বুঝলাম না! কারণ আমাদের আমদানিকৃত তেল দেশে আসতে সময় লাগে ১৫/১৬ দিন। 

বর্তমানে বেশ কয়েকটি তেলের জাহাজ বাংলাদেশের পথে, যা কিছুদিনের মধ্যে দেশে পৌঁছাবে। চাহিদা শুরু হবার আগেই তেলে আমদানির এলসি খোলা হয় এবং আমদানি চলমান থাকে, এটাই নিয়ম। সুতরাং আমাদের তেল সংকটের কোন সম্ভাবনাই নেই।

৪। প্রকাশিত সংবাদ: ডলারের অভাবে পেট্রোল ও অকটেন আমদানি করা যাচ্ছে না।

আসল সত্য হচ্ছে: বাংলাদেশ পেট্রোল আমদানিই করে না, নিজেরা উৎপাদন করে ঠিক তেমনিভাবে চাহিদার ৫০% শতাংশের বেশি অকটেনও উৎপাদন করে বাংলাদেশ। যেখানে আমদানিই করে না সেখানে ডলারের অভাবে আমদানি করা যাচ্ছে না এমন সংবাদ একেবারেই অবান্তর নয় কি?

তবু কিছু মানুষ থেমে নেই মিথ্যা, বানোয়াট অপপ্রচার আর প্রিয় মাতৃভূমিকে শ্রীলঙ্কা বানানোর মনস্কামনায়! 
প্রাণের বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কা বানানোর স্বপ্নে বিভোর ক্ষমতা লোভী মিথ্যাবাদী এইসব অপপ্রচারকারীদের জন্য ধিকঃ শতধিক। 
জাগ্রত হও বিবেক,
রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ’।

Link copied!