সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২, ১২:৩৭ পিএম
জাতীয় রাজনীতিতে ছাত্র রাজনীতি সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আর সেই রাজনীতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে সামনে থেকে। বর্তমান সময়ে সমালোচনা যেন পিছু ছাড়ছে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির।
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যার এফ রহমান হলের সামনে ছাত্রদলের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। মুহূর্তেই হামলায় আহত হয়ে পড়ে ৭-১০ জন। ছাত্রদল প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও এক পর্যায়ে ব্যর্থ হয়ে পিছুহাটে। এই ঘটনার পর সড়কে পরে থাকে হামলায় ব্যবহৃত লাঠি যেখানে লেখা `এইটা শুধু বিশেষ বিশেষ দিন ব্যবহার করা হবে`। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এমন আতঙ্কের দেশীয় অস্ত্র দেখে স্থানীয় আম জনতার মাঝে ভয় ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের শেষে ছাত্রলীগ ঢাবির পুরো ক্যাম্পাসে শোডাউন দেয়। শ্লোগান দিতে থাকে `একটা একটা শিবির ধর , ধইরা ধইরা জবাই কর`, `ছাত্রদলের চামড়া তুলে নেবো আমরা`।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এর রহমান হলের পাশে পড়ে থাকা এই লাঠি গুলো দেখে নীলক্ষেত মোড়ের ব্যবসায়ী আতিকুল বলেন, আজ থেকে ৩০ বছর আগে আমিও এই ক্যাম্পাসের ছাত্র ছিলাম। প্রকাশ্যে এমন ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র এবং তার মধ্যে নির্দেশনা দেওয়া, এটি আর কখনোই দেখা হয়নি। ক্যাম্পাসে ভর্তি হয়েই এখন শিক্ষার্থীরা জানেন হলের আশেপাশে কেন লাঠি থাকে, আর এগুলো কি জন্য ব্যবহার হয়।
হলের পাশেই মজিদ নামের জুতা স্যালাই করেন জামান মিয়া। তিনি বলেন, এসব লাঠি দেখলে ভয় করে। এমন মহড়া দেখলে আগ থেকেই দোকান বন্ধ করে দিই। আজকেও দোকান বন্ধ করে দাড়িয়ে আছি। ঠান্ডা হলে খুলবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলে থাকা একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের কিছুই করার নেই। হলে থাকতে হলে বড় ভাইয়ের নির্দেশে বাহিরে আসতে হয়। আজকেও আমাদের নিয়ে আসা হয়েছে। দুপুর থেকে বসিয়ে রেখেছেন। এমন অনেক লাঠি, রড হল ও হলের আশেপাশে থাকে। প্রয়োজন হলে বের করে আনা হয়। অনেক সময় জুনিয়ররা খেলতে নিয়ে চলে যায়। এজন্যই বিশেষ কারণে আনা স্ট্যাম্প গুলোতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে ব্যবহারে সতর্ক থাকা হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাথে ফুল ও মিষ্টি নিয়ে সাক্ষাতের জন্য নীলক্ষেত তরুণ চত্বর থেকে ছাত্রদল যাত্রা শুরু করলে এফ রহমান হল এর কাছাকাছি আসলে ছাত্রদলের উপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় এখনো পাল্টাপাল্টি অভিযোগ চলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, কোন ধরনের হামলা বা অপ্রীতিকর ঘটনার দায় উপচার্যকে নিতে হবে। অন্যদিকে হামলার দায় অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীব চন্দ্রদাস।
হামলার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ছাত্রদলকে সাধারণ জনতা ধোলাই দিয়েছে, ছাত্রলীগ দায়ী নয়।
স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, যে ছাত্র সংগঠনের উচ্চপদস্থ নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
আআর্/ইএফ