সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২, ০৫:০৪ পিএম
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশকে ব্যর্থ বানাতে সবসময় ষড়যন্ত্র করছে।
তাদের দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনো চাইনা বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় আসুক কারণ তারা জানে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নাকি মারা যাবে।
আমি বলতে চাই মির্জা ফখরুল আপনি কি আমাদের হুমকি দিচ্ছেন? আপনি কি বলতে চাচ্ছেন আপনারা ক্ষমতায় গেলে আমাদের হত্যা করা হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে হত্যা করে রক্তের গঙ্গা বইয়ে দিয়ে মির্জা ফখরুল আপনি কি সন্ত্রাসীদের নেতায় পরিণত হতে চাইছেন?
মির্জা ফখরুল উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা এতদিন জানতাম না আপনি নিজেও হত্যাকারী হতে চান। আপনি সন্ত্রাসীদের ভাষায় সাক্ষাৎকার দিয়ে বলেন, আমাদের মৃত্যু হবে, আমাদের হত্যা করা হবে।
আমি বলতে চাই, আমাদের হত্যা করা যায় কিন্তু আমাদের পথ রোধ করা যায় না ও বাংলাদেশকে এগিয়ে যাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করা যায় না।
কারণ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সন্তানরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের হত্যা করলে আমরা শহীদ হবো, গাজী হব। বীরের রক্ত আমাদের শরীরে। আমাদের হত্যার ভয় দেখিয়ে থামানো যাবেনা।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভ জন্মদিন উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন ভবনে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভা, ক্রীড়া সামগ্রী ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা টুংগীপাড়ায় সেই অজপাড়াগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই তিনি মাটি ও মানুষের সাথে বেড়ে উঠেছিলেন এবং পরবর্তীতে বঙ্গমাতার সাথে তিনি পারিবারিকভাবে ঢাকায় আসেন ছয় বছর বয়সে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা অত্যন্ত সাদামাটা পরিবেশেই সুখ আনন্দ বেদনার মধ্য দিয়েই বেড়ে উঠেন। তার জীবনের সব থেকে মর্মান্তিক দিনটি হলো ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট।
ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে সেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেদিন স্বাধীন বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানানোর সব আয়োজন করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ১৯৮১ সালের ১৯ মে ভারতের ৬ বছর রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সেদিন অবৈধ রাষ্ট্রপতি সেনা শাসক জিয়াউর রহমানের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে তিনি দেশে আসেন।
সে দিন তার আগমনকে নিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসবিদ আনোয়ার হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার বাংলাদেশে আগমনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ তার অস্তিত্ব ফিরে পেয়েছে।
শেখ হাসিনার আগমনের আগে বাংলাদেশ তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়া শুরু হয়েছিল।
তিনি ফিরে এসে দেশের জনগণকে উদ্ধার করেছেন। বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিনত করতে খুনি মোস্তাক ও জিয়া গংরা সব আয়োজন করেছিলো।
শেখ হাসিনা ফিরে আসার পর দেশের মানুষ আশার আলো দেখে, অন্ধকার থেকে আলোতে ফিরে আসে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে পথে প্রান্তরে ও দেশের মানুষের কাছে ঘুরে বেড়িয়েছেন।মানুষের সুখ দুঃখের ও অভাব অভিযোগের কথা শুনেছেন। মানুষ কি চায় সেটা জেনেছেন।
একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে তিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে দেশকে গড়ে তোলার জন্য সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের লড়াইয়ে নেমেছিলেন।
সে সময় দেশের মানুষ তার পাশে দাঁড়িয়েছিলো। পরবর্তীতে তিনি দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সফল হয়ে আজকে বাংলাদেশকে উন্নতশীল রাষ্ট্রে পরিনত করেছেন।
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, আজকে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল। এটি সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনার জন্য। আমাদের উন্নয়ন ও আদর্শের নেত্রী হলেন শেখ হাসিনা। তিনি হলেন সততার নেত্রী ও যোগ্য নেত্রী, যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অন্ধকার থেকে আলোর দিকে এসেছে।
শেখ হাসিনার কারণে আমরা বিশ্ব দরবারে সন্মানিত ও সন্মানের জাতি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি।একজন শেখ হাসিনার কারণে আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেয়েছি। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে মানুষকে ভালোবাসতে হয়।
আজ তার নেতৃত্বে আমরা উচ্চ শিক্ষায় এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি গরিব শিক্ষার্থীদের জন্য উপ-বৃত্তির ব্যবস্থা করেছেন। জানুয়ারির ১ তারিখে সকল প্রতিষ্ঠানে বই পৌঁছে দিচ্ছেন। তার কারণে দেশে ঝরে যাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা শূন্যের কোটায় এসেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা করোনা সংকট মোকাবেলা করেছি। তার দক্ষ নেতৃত্বের কারণে বর্তমানে বৈশিক যে অর্থনৈতিক সংকট তা আমরা মোকাবেলা করছি এবং দেশ বিরোধী অপশক্তি বিএনপি জামাত যে মিথ্যাচার করছে তাদের মুখে চুনকালি দিয়েছি।
আমরা প্রমাণ করেছি যে শেখ হাসিনা যতদিন নেতৃত্বে থাকবেন ততদিন আর যাই হোক বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে না।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহিদ উল্যার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি।
টিএইচ