মাসুদ রানা, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
অক্টোবর ১, ২০২২, ০২:৩৫ পিএম
মাসুদ রানা, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
অক্টোবর ১, ২০২২, ০২:৩৫ পিএম
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, এ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিলো না, আর মোবাইল তো কল্পনার বিষয়। সব উন্নয়ন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দ্বারা সম্ভব হয়েছে। কিছু দুষ্কৃতকারীরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে। তা কখনো সফল হবে না।
যারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান মনে করে তাদের উদ্দেশ্য মন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাবা মির্জা রুহুল আমিন যিনি চকা রাজাকার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সময় যিনি যুদ্ধাপরাধী হিসেবে কারাগারে বন্দী ছিলেন। জিয়াউর রহমান তাকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন। আজও তার পরিবার দেশ সম্পর্কে উল্টা পাল্টা কথা বলছে।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী (ছাতির বাজার) উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ছাত্র সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ঘটনা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, জিয়াপুত্র তারেক রহমান হাওয়া ভবনে বসে মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করে পাকিস্তান থেকে আনা গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। ১৫ ও ২১ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জিয়া পরিবার জডড়িত। তাদের সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। এদের বিচার বাংলার জনগণ করবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখতে ছাত্রলীগকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
পাকিস্তান নাকি ভালো ছিল? কোন দিক দিয়ে ভালো ছিল? সেই দিন শ্রীপুরে বর্ষাকালে জুতা পায়ে দিয়ে হাঁটা যেতো না। কারণ, কোন রাস্তাঘাট’ই ছিল না। কার্তিক মাস আসলে মানুষ খেতে পারত না। ফেন (ভাতের মাড়) খেয়ে থাকত। আজ ভিক্ষে দেওয়ার লোক খুঁজে পাওয়া যায় না। আজকে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ৫০ টাকা কেজি চাল, বিজিএফ কার্ড প্রদানের মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রার মান’ই পাল্টে দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির জন্য আশীর্বাদ উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষযক মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার বিকল্প শুধু শেখ হাসিনা’ই। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার জন্য এ দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। আজকে তার এই রক্তের উত্তরাধিকার ও আদর্শের উত্তরাধিকার সফল রাষ্ট্রনায়ক দেশর্নে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এই সোনার বাংলা বাস্তবায়র করব। শেখ হাসিনার জন্ম হয়েছিল বলে বাংলাদেশ এই পর্যায়ে এসেছে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন বিশ্বের জন্য রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা কিনা জাতিসংঘের থেকে স্বীকৃত।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় তার বক্তব্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া ছাত্র সংগঠন এখন পর্যন্ত তার গৌরব, ঐতিহ্য, সংগ্রাম এবং সাফল্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে এগিয়ে যাচ্ছে। ছাত্রলীগ বাংলাদেশের প্রতিটি অর্জনে ভূমিকা রেখেছে। আজকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গৌরবের জায়গায়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রশংসার জায়গায়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যতদিন থাকবে, ততদিন এদেশের মানুষ ছাত্রলীগকে স্মরণ করবে।
ছাত্রলীগ সভাপতি আরও বলেন, গুটি কয়েক নেতা আগেও ছাত্রলীগে ছিল, বর্তমানেও আছে। যারা এ সংগঠনকে বিতর্কিত করতে চায়, তারা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে। তাদের সেই ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুযোগ ছাত্রলীগে হবে না। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারপরও শুনতে হচ্ছে ছাত্রলীগ নাকি কমিটি বাণিজ্য করে। এ ধরনের মিথ্যা অপবাদ যারা দেয়, তাদের আমরা বলতে চাই। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কখনোই পদ বাণিজ্য করে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে যারা, তাদের মধ্য থেকেই নেতৃত্ব আনে।
ছাত্রদলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিল জাতির পিতা। কিন্তু, অপরপক্ষে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এখন পর্যন্ত কোন গঠণতন্ত্র তৈরি করতে পারেনি। যেই ছাত্র সংগঠনে কোন ছাত্রত্বর বালাই নেই, যে সংগঠনে এখন পর্যন্ত অছাত্রদের নিয়ে নেতৃত্ব দেয়া হয়, যে সংগঠনে বাবাদের দ্বারা নেতৃত্ব দেয়া হয়, সে সংগঠনের কেউ যদি কোন ষড়যন্ত্র করে সে ষড়যন্ত্র ছাত্রলীগ মেনে নেবে না।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ সম্পর্কে জয় বলেন, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করতে বহিরাগতদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এনে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করছে ছাত্রদল। আজকে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে আমরা বলতে চাই, ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে তাদের দাবি দাওয়ায় কাজ করে যাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের গুন্ডারা যদি গুন্ডামি করতে আসে তাদেরকে শিক্ষার্থীরা কোন ভাবেই মেনে নেবে না।
গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুলতান মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির মোড়লের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজ, বঙ্গতাজ কণ্যা সিমি হোসেন রিমি এমপি। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়, বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্য়ায়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীবৃন্দ।
এআই