অক্টোবর ১২, ২০২২, ০৪:১৩ পিএম
- মাঠে রয়েছে আ.লীগ, সহিংসতার সৃষ্টি হলে প্রতিরোধ
- কথা রাখেনি বিএনপি লাঠি হাতে সমাবেশে নেতাকর্মীরা
- পুলিশের কড়া নজরদারি সমাবেশস্থল ও আশপাশ এলাকা
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত গণসমাবেশ শুরু হওয়ার আগে হামলা বাধার পরও জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছে। সকাল থেকেই আসতে শুরু করে দলের নেতাকর্মীরা। মাঠে রয়েছে আ.লীগও। সহিংসতার সৃষ্টি হলে প্রতিরোধ করা হবে বলে ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। তবে কথা রাখেনি বিএনপি ।লাঠি হাতে সমাবেশে নেতাকর্মীরা উপস্থিত হতে দেখা গেছে। এর আগে বিএনপি বলেছিল কেউ লাঠি হাতে আসবে না ।এদিকে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে কঠোর নজরদারিতে রেখেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ।
বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুর ২টায় নগরীর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে সমাবেশ শুরু হয়।এতে প্রধান অতিথি রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া উপস্থিত রয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় ও চট্টগ্রামের বিএনপি নেতারা।
গণসমাবেশ মঞ্চে ইতোমধ্যে উপস্থিত হয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করসৈহ বেশ কয়েকজন নেতা। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিএনপিও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মাঠে চলে এসেছে। সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
এদিকে সমাবেশে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগ-যুবলীগের বাধার মুখে পড়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারা দাবি করছেন, মিরসরাই নিজামপুর কলেজের সামনে বিএনপির গাড়ি বহরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে। এতে সাতটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আহত হয়েছেন কয়েকজন নেতা-কর্মী।
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের চট্টগ্রামের মহাসমাবেশে না যেতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা মাইকিং করে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরেও নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, চট্টগ্রামে বিএনপির জনসমাবেশে উত্তাল জনস্রোত ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাড়িতে বাড়িতে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।
এদিকে পুলিশের পাশাপাশি বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশ নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রত্যেক ওয়ার্ডে অবস্থান নেওয়ার জন্য নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। সমাবেশের নামে কোনো ধরনের ‘বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা’ সৃষ্টি করলে জণগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিকে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
তবে ‘সমাবেশের নামে নৈরাজ্য করলে দাঁতভাঙা জবাব’এই হুঁশিয়ারিকে আওয়ামী লীগের দুর্বলতা হিসেবে দেখছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা আমাদের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাব। কে কী করছে, কে কী বলছে, কে কোথায় উস্কানি দিচ্ছে—এগুলো নিয়ে কেউ মাথা ঘামাবেন না। ওরা চাচ্ছে, আমাদের সেদিকে ডাইভার্ট করার জন্য। আমাদের সেদিকে ডাইভার্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই। জনগণের জোয়ার যেখানে নামে, সেখানে কোনো শক্তি বাধা দিতে পারে না। যেখানে জনগণের বাঁধভাঙা জোয়ার চলছে, সেখানে কেউ বাধা দিতে পারবে না। সুতরাং আমাদের এসব নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই, আমরা আমাদের কাজ নিয়ে এগিয়ে যাব। কিছু কিছু উস্কানি দিয়ে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে। সেদিকে কান দেবেন না। কান বন্ধ করে শুধু কাজটা করে যাবেন। কোনো বাধা এই জনস্রোতকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।’
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রামে বিএনপি যে কর্মসূচির ডাক দিয়েছে, তাকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। তারা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে সভা-সমাবেশ করবে। তবে এ সভা-সমাবেশের আড়ালে যদি তারা কোনো ধরনের সহিংসতার সৃষ্টি করতে চায়, এ ধরনের কোনো পরিস্থিতি তৈরি করে চট্টগ্রামবাসী ও সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তাদের সহিংসতার দাঁতভাঙা জবাব দেবে আওয়ামী লীগ।’
কথা রাখেনি বিএনপি লাঠি হাতে সমাবেশে :
বিএনপি’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসমাবেশে কোনোধরনের লাঠি বা অস্ত্রশস্ত্র আনবে না বলে জানিয়েছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। কিন্তু সমাবেশ স্থল ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের অনেকে লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান করছেন। কৌশলে ব্যানারের আড়ালে বাশ নিয়েও সমাবেশে প্রবেশ করতে দেখা গেছে অনেক নেতাকর্মীদের।
বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে পলোগ্রাউন্ড মাঠের আশপাশের এলাকা ও সিআরবি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সকাল থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশের আশপাশ এলাকায় অবস্থান করছে নেতাকর্মীরা। এদের অনেকের হাতে লাঠি রয়েছে। এছাড়া ব্যানারের আড়ালে বাঁশ নিয়ে প্রবেশ করছেন সভাস্থলে।
তবে পুলিশ বলছে, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে সমাবেশস্থল ও আশপাশ এলাকা। সমাবেশস্থলের প্রবেশ মুখে কাউকে লাঠি নিয়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মেইন গেইটে আমরা অবস্থান করছি। কাউকে লাঠি নিয়ে প্রবেশ করতে দেখিনি। এখনো পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
এর আগে মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সমাবেশে নেতাকর্মীরা লাঠি নিয়ে যোগ দেবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যে সভা-সমাবেশ করছি, দেশে-বিদেশে প্রমাণ হয়েছে আমরা খুবই সুন্দর-শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করছি। আমাদের নে
আবদুর
এর আগে মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) সমাবেশে নেতাকর্মীরা লাঠি নিয়ে যোগ দেবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যে সভা-সমাবেশ করছি, দেশে-বিদেশে প্রমাণ হয়েছে আমরা খুবই সুন্দর-শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করছি। আমাদের নেতৃত্ব থেকে পরিস্কারভাবে বলা আছে, প্রত্যেকটি সভা-মিছিল, কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হবে। এর একটাই কারণ, জনগণের ওপর আস্থা রেখে বিএনপি রাজনীতি করে। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। দেশের একেকজন নাগরিক লাঠির চেয়ে শক্তিশালী, চাইনিজ রাইফেলের চেয়েও শক্তিশালী। তারা যে অস্ত্রশস্ত্রের কথা বলে তার চেয়েও শক্তিশালী। আমাদের অস্ত্রশস্ত্রের দরকার নেই, লাঠিরও দরকার নেই। লাঠি নিয়ে কারা নামে- যারা নিজেরা দুর্বল তারা লাঠি নিয়ে নামে। প্রতিরোধ করতে কারা বলে– যারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেরা কিছু করতে পারে না তারা বলে।’
ইএফ