ডিসেম্বর ১১, ২০২২, ০১:১৭ পিএম
বিএনপির বিদেশ বিষয়ক কমিটির সদস্য ও সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যেই আমরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করছি।
রবিবার (১১ ডিসেম্বর) পদত্যাগ পত্র জমা দিতে জাতীয় সংসদে প্রবেশের আগে তিনি এ কথা বলেন। এরপর বেলা ১১টার দিকে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন তারা।
রুমিন ফারহানা বলেন, গতকাল আমাদের দলের গণসমাবেশ থেকে ১০ টি গাইডলাইন দেয়া হয়েছে। তার প্রথম যে নির্দেশনা ছিল সংসদ ভেঙে দেয়া এবং সংসদ থেকে পদত্যাগ করার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা।
`এই সংসদ ভেঙে দেয়ার যে দাবি আমাদের দলের। সেই দাবির সাথে একাত্নতা প্রকাশ করে আমরা সাতজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করছি।`
তিনি বলেন, আজকে আমরা স্পিকার মহোদয়ের হাতে আমাদের পদত্যাগ পত্র তুলে দিব। আমরা গতকাল ইমেইলের মাধ্যমে এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে মাননীয় স্পিকারকে ফোন করে জানিয়েছি আমরা সাতজন সংসদ সদস্য পদত্যাগ করেছেন।
তিনি বলেছেন, তিনি ইতিমধ্যে অবগত আছেন। কারণ মিডিয়াতে ততক্ষনে এই খবর প্রচার হয়ে গেছে। সুতরাং এই সংসদ থেকে আমরা আজকে পদত্যাগ করছি।
রুমিন ফারহানা বলেন, আপনারা দেখেছেন এই সংসদে আমরা যতটুকু পেরেছি আমরা জনগণের কথা, দেশের কথা, মানুষের কথা, আপনাদের কথা বলবার চেষ্টা করেছি। আমাদেরকে বাধা দেয়া হয়েছে। আমাদেরকে সময় দেয়া হয়নি। আমাদের সুযোগ খুব সীমিত ছিল, তারপরেও আমরা আমাদের সর্বোচ্চ টা করার চেষ্টা করেছি।
`কিন্তু এখন বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষে আমরা সংসদ থেকে পদত্যাগ করছি। এবং আমি মনে করি সংসদে আর যে দল আছে যা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা মানুষের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে, যারা বিশ্বাস করে এই লুটপাটের উপর নির্ভর করা সরকারের ক্ষমতায় থাকার আর নূন্যতম নৈতিক অধিকার নেই। সেই সমস্ত দলেরই সংসদ থেকে পদত্যাগ করা উচিত।
এসময় তাদের সাতজনের পদত্যাগে সরকার দলীয় নেতারা বলছেন তাদের কোনো সংকট তৈরি হবে না এ বিষয়ে কি বলবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রুমিন ফারহানা বলেন, সংকট তৈরি হবে কি হবে না সেটা তী আপনারা নিজেরাই দেখবেন। সংসদে সত্যিকারের বিরোধী দল বলতে যদি কিছু বোঝা যায় সেটি হলো বিএনপি। সেটা দেশের মানুষ যেমন জানেন, সরকারও তেমন ভালো করেই জানেন। আর সংকট যে তৈরি হবে সেটা বুঝা যায় যখন প্রথমেই বলে সংকট তৈরি হবে না।`
সংসদে আসার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একদম ভুল ছিল না। আমরা বলেছিলাম যে সীমিত সুযোগ আমরা পাব সেই সীমিত সুযোগের সতব্যাবহার আমরা করব। আর সাড়ে তিন বছরে আপনারা দেখেছেন আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়েছি। সুযোগ দেয়নি, সময় দেয়নি, মাইক অফ করে দিয়েছে-এরমধ্যে থেকেও যতটা সম্ভব করেছি।
পদত্যাগ পত্র জমা দেয়ার সময় সশরীরে উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের মো. আমিনুল ইসলাম, বগুড়া-৪ আসনের মো. মোশাররফ হোসেন, বগুড়া–৬ আসনের গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের জাহিদুর রহমান এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা।
তবে বিদেশে থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ এবং অসুস্থতার কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না। তাদের পক্ষে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
এর আগে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গোলাপবাগে দলের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে বিএনপির দলীয় সাতজন এমপির পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দেন। গণসমাবেশে বিএনপির এমপিরা ধারাবাহিকভাবে বক্তব্য দিয়ে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন।
ইএফ