ডিসেম্বর ১২, ২০২২, ১০:১০ এএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে গত ১৪ বছরে স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস-২০২২’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে ফলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেক্টরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ১২ ডিসেম্বর ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস-২০২২’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘কাঙ্ক্ষিত পৃথিবী গড়ি: সুস্থ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করি’ যথার্থ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে তিনি চিকিৎসা সেবাকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য জেলা, থানা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের যুগান্তকারী উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হাতেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয়। তিনি স্বাস্থ্যকে সংবিধানের মূল অধিকারের অংশ হিসেবে সংযোজন, প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যকে গুরুত্বদান, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, চিকিৎসকদের চাকুরি প্রথম শ্রেণির মর্যাদা প্রদান এবং বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ গঠনসহ বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে সারা দেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা বৃদ্ধিসহ চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্টিং স্টাফের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। মেডিক্যাল শিক্ষার প্রসারে নতুন নতুন মেডিক্যাল কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। চিকিৎসা বিষয়ে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা ও প্রয়োজনীয় গবেষণা কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৫টি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি এবং প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি বলেন, গ্রামপর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারাদেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা চালু করা হয়েছে।
ফলে দেশের আপামর জনগণের প্রয়োজনীয় মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি সহজতর হয়েছে। গ্রামীণ দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা ও সর্বস্তরের জনগণের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সেবা প্রদান, স্বাস্থ্যখাতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিশু ও মাতৃমৃত্যু হ্রাস, মাঠপর্যায়ে মা ও শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদান, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং সকল স্তরের জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে আমরা অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত এবং এর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ও টিকা কার্যক্রম বাস্তবায়নে সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণেই সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ও দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট সকলে মেডিক্যাল শিক্ষা, চিকিৎসা, সেবাদান ও গবেষণা কার্যক্রমে আরও গতিশীল ও উন্নতকরণের মাধ্যমে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখবে বলে আমি আশা করি।’
প্রধানমন্ত্রী ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা দিবস-২০২২’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
টিএইচ