জানুয়ারি ৮, ২০২৩, ০৪:৫৭ পিএম
ইতিমধ্যে চাঁদাবাজ ও অনুপ্রবেশকারী হিসেবে পরিচিত বিতর্কিত রিপন নামে একজনকে ঢাকা মেডিকেল ইউনিট আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি বানাতে নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, নেশায় আসক্ত রিপন আইসিউ সিট বাণিজ্য, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার বিনিময়ে হাসপাতালে ঢুকতে দেয়া, বেসরকারি ক্লিনিকে রোগী পাঠানোর বাণিজ্যসহ নানা রকম অবৈধ কর্মকান্ডে যুক্ত ঢাকা মেডিকেলের রেডিওলজি বিভাগের চতুর্থ শ্রেণির এই কর্মচারী। ঢাকা মেডিকেলের আশপাশে ফুটপাতে দোকান বসানো এবং নিয়মিত সেখান থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ আছে রিপনের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহম্মেদ মন্নাফী বলেন, ঢাকা মেডিকেল ইউনিটের কমিটি এখনো গঠন হয়নি। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির আমার সংবাদকে জানান ৩ মাস আগেই এই ইউনিটের কমিটি হয়ে গেছে।
ঢাকা-৮ সংসদীয় আসনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক টিমের একাধিক নেতা জানান, রিপনকে তারা রাজনীতির মাঠে কখনো সক্রিয় দেখেন নি। টিমের একজন সদস্য জসিম উদ্দিন জানান, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির অনেকটা নিজের ইচ্ছাতে ছেলেটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ।
রিপনকে নেতা বানাতে আর্থিক লেনদেন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী জানান, বিষয়টি অমূলক নয়। বিভিন্ন মাধ্যমে তিনিও এমন কথা শুনেছেন। তবে আমি একে চিনি না ও আগে রাজনীতির মাঠে দেখিনি।
মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ২০নং ওয়ার্ড সভাপতি মনু মিয়া বলেন, আমি রিপনকে আগে কখনো রাজনীতির মাঠে দেখিনি। বিএনপি পরিবারের ছেলে রিপন হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এসেছে। আমাদের সবার মতামতকে উপেক্ষা করে তাকে নেতা বানাতে চান ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের একটি শক্তিশালী পক্ষ। সেগুন বাগিচা ইউনিটসহ এই ওয়ার্ডের একাধিক ইউনিটের কমিটি গঠনে ওয়ার্ডের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মতামত উপেক্ষিত হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো ক’জন ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, একাধিক কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ওয়ার্ডের নেতাদের মতামত উপেক্ষা করা হচ্ছে। সঠিক যাচাই-বাছাই ব্যতিত এভাবে অনুপ্রবেশকারীরা হঠাৎ সুযোগ পেয়ে সংগঠনে ঢুকে গিয়ে বিতর্কিত কাজে যুক্ত হচ্ছে। এতে সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল ইউনিটের নেতা অভিযুক্ত রিপন বলেন, এসব অভিযোগের কোন কিছু সত্য নয়। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তদন্ত করলে প্রকৃত সত্যটা বেরিয়ে আসবে।
অনুপ্রবেশকারীদের সংগঠনে ভিড়ানো ও কমিটি গঠনে অর্থ লেনদেন সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির এই প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়গুলো সত্য নয়। এসব অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
উল্লেখ্য, রিপন মহানগর সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবিরের বিশেষ আনুকল্য পাওয়া লোক। মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মী এই প্রতিবেদককে এসব তথ্য জানান।
এসব অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মির্জা আজমকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
টিএইচ