ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩, ০৪:৪৭ পিএম
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, সরকার ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বলছে, আইএমএফ থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ঋণ পেয়েছি। এই টাকা শুধু সংস্কার ও প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয় হবে। এই টাকা অন্য খাতে ব্যয় হবে না। যেমন আমদানি-রপ্তানী ও উন্নয়ন মূলক কাজে ব্যয় করা যাবে না। অন্যদিকে দুর্নীতি ও দুঃশাসন সর্বস্তরে ব্যাপকতা লাভ করেছে। মনে হয় সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা গরীবের টাকা লুট পাটের জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী দেশের উপজেলা ও পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সভা সমাবেশ মিছিল মিটিং করতে দিচ্ছে না। তারা সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে কাজ করছে। পুলিশ বাহিনী জনগণের পুলিশ হতে পারেনি। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে দেশে সকলের প্রতি সমান আচরণ করা হচ্ছে না। জনগণকে মনের কথা প্রকাশ করতে দিচ্ছে না। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এই অবস্থায় দেশে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে দল মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের পতনের জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে হবে।
তিনি আজ শুক্রবার বিকালে রাজধানীর পূর্বপান্থপথস্থ এফডিসি সংলগ্ন এলডিপির কার্যালয়ের সামনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পদযাত্রা কর্মসূচি এলডিপির কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মালিবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
কর্নেল অলি বলেন, কেউ আমাদের শত্রু না। কারো প্রতি আমাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ নেই। দেশে গণতন্ত্র, শান্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন দেশপ্রেমিক সরকার।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের খেলাফি ঋণের শীর্ষে আছে ১০টি ব্যাংক। যার মধ্যে ৩টি ব্যাংকই সরকারি। মুদি এবং পান দোকানদারের নামে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ উত্তোলনের প্রমাণ রয়েছে। এগুলোর সঙ্গে সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা জড়িত না থাকলে তা কখনই সম্ভব নয়। দেশে আমদানী হ্রাস পেয়েছে। অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। রপ্তানীও কমে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গরের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ি প্রায় ১১ টি জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। কয়েকমাস যাবত তারা জরিমানা দিয়ে আসছে। ডলারের অভাবে মালামাল খালাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন কমে যাচ্ছে। প্রবাসীরা আগের মতো সরকারকে বিশ্বাস করতে পারছে না। পূর্বের ন্যায় বৈধ পথে টাকা পাঠাচ্ছে না। কারণ তারা মনে করে আমরা গরীবেরা অমানসিক পরিশ্রম করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশে পাঠাই। আর ধনীরা বিলাস বহুল জীবন যাপনের জন্য তা বিদেশে পাচার করে।
কর্নেল অলি বলেন, দিন দিন বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্য বাড়ছে। সর্বোপরি বিদেশি ঋণের কিস্তি ও সুদ নিয়মিত পরিশোধ করা হচ্ছে না। যাতে করে অর্থনীতিতে অব্যাহতভাবে ধস নামছে। বর্তমানে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৭৪০ টাকা।
তিনি আরও বলেন, সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের জন্য বিভিন্নভাবে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ৫০ থেকে শতভাগ বাড়ার কারণে ব্যয়ের পরিমাণও ২ থকে ৪ গুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই টাকা তারা মিলে মিশে লোপাট করছে।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদের সভাপতিত্বে পদযাত্রা কর্মসূচিতে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. নেয়ামূল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, এড. এসএম মোরশেদ, ভাইস- প্রেসিডেন্ট মাহে আলম চৌধুরী, উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপিকা মোছাঃ কারিমা খাতুন, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, আইনবিষয়ক সম্পাদক এড. আবুল হাসেম, প্রচার সম্পাদক এড.নিলু, ঢাকা মহানগর পশ্চিম এলডিপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাদাত হোসেন মানিক, উত্তর এলডিপির সাধারণ সম্পাদক অবাক হোসেন রনি, ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি মোঃ সোলায়মান , গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি আমান সোবহান, গণতান্ত্রিক শ্রমিক দলের সভাপতি মামুন, গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি খালিদ বিন জসিম, গণতান্ত্রিক আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ্যাড. নূরে আলম, গণতান্ত্রিক ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদী হাসান মাহবুব, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি খোকন এলডিপির সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আজগর বাবুসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এবি