Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪,

৭ মে জননেত্রী শেখ হাসিনা না ফিরলে দেশে গণতন্ত্রও ফিরতো না : তথ্যমন্ত্রী

মো. মাসুম বিল্লাহ

মে ৭, ২০২৩, ০৭:০৮ পিএম


৭ মে জননেত্রী শেখ হাসিনা না ফিরলে দেশে গণতন্ত্রও ফিরতো না : তথ্যমন্ত্রী

২০০৭ সালের ৭ মে শেখ হাসিনা যদি সব রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে, জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে দেশে না ফিরতেন তাহলে গণতন্ত্রও ফিরতো না।

রোববার (৭ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বাংলার স্থপতি’ শীর্ষক ৭ খণ্ড বইয়ের প্রকাশনা এবং গ্রন্থাকার অ্যালভীন দীলিপ বাগচীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে তিনি (শেখ হাসিনা) প্রথম আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশে পদার্পণ করেছিলেন। আজ ৭ মে তার বিদেশ থেকে দ্বিতীয় দফা প্রত্যাবর্তনের দিন এবং প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্রের মানসকন্যার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।

আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজ ৭ মে একটি ঐতিহাসিক দিন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে আজকের দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছিল, এরপর তার দেশে আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেছিলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে, আমি ঢাকায় গিয়ে মামলা লড়বো।’ আমি তখন তার বিশেষ সহকারী হিসেবে কাজ করতাম। বিমানবন্দরে আমি নিজেও গিয়েছিলাম। বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় কোনো মানুষ দেখিনি, বিমানবন্দর থেকে তিনি যখন আসছিলেন তখন রাস্তার দু’ধার ছাপিয়ে হাজার হাজার, লাখ লাখ মানুষ চলে আসলেন শেখ হাসিনাকে বরণ করার জন্য।

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন অসীম সাহসী ছিলেন, আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যাও শেখ হাসিনা অসীম সাহসী। তার সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে তিনি প্রচণ্ড সংকটের মধ্যে ধৈর্য্য হারান না, যেমন বঙ্গবন্ধু হারাননি। বঙ্গবন্ধুকে ২৫ মার্চ যখন গ্রেফতার করা হয় তখন শুধু সেনাবাহিনী গিয়েছিল তা নয়, তাকে গ্রেফতারের আগে চারপাশে বিভিন্ন বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, ধানমন্ডি এলাকায় গোলাগুলি করা হয়। তিনি সেসময় ধৈর্য্য হারাননি। বঙ্গবন্ধু বরং পাকিস্তানিদের বলেছিলেন, ‘তোমাদের এত গোলাগুলি-বিস্ফোরণ ঘটানো, মানুষকে কষ্ট দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। আমার কাছে আসলেই তো আমাকে নিয়ে যেতে পারতে।’ তাকে গ্রেফতারের পূর্ব মুহূর্তে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও প্রচণ্ড সংকটে ধৈর্য্য হারাননি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিবিসির অনলাইন জরিপে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন। এর কারণ বিশ্লেষণে বলতে হয়, বাঙালি জাতিসত্তার উন্মেষের ৫ হাজার বছর ইতিহাসে বাঙালি কখনো স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। বাংলা ভাষাভাষীর কিছু অঞ্চল নিয়ে কোনো কোনো সময় স্বাধীন রাজা ছিলেন, কিন্তু কোনো স্বাধীন রাষ্ট্র কখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কিন্তু বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ছিল। তিতুমীর, সূর্যসেন, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু- অনেকেই স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন, বিদ্রোহ করেছেন, কিন্তু স্বাধীনতা আসেনি।

‘বঙ্গবন্ধুই সেই নেতা যিনি বাঙালি জাতিকে ধীরে ধীরে, পলে পলে আন্দোলনের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতার লক্ষ্যে মনন তৈরি করে চূড়ান্তভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন এবং তার সেই ঘোষণার মধ্যদিয়ে একটি জাতি রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্যদিয়ে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে এনেছে, জয় বাংলা স্লোগানে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছে। বিশ্ব ইতিহাসে এমন উদাহরণ বিরল। এজন্যই ইতিহাসের পাতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, জাতির পিতা মুজিব তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।’

তথ্যমন্ত্রী এসময় ‘বাংলার স্থপতি’ বইয়ের গ্রন্থাকার অ্যালভীন দীলিপ বাগচীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ওপর বিশ্লেষণধর্মী ইতিহাসভিত্তিক এ গ্রন্থ রচনার জন্য দীলিপ বাগচী এবং তার পরিবারকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং আগামীতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে গ্রন্থ রচনার জন্য তাকে অনুরোধ জানাই।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এখন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন জন প্রচুর বই লেখেন, অনেক ক্ষেত্রে লেখার প্রতিযোগিতাও তৈরি হয়েছে এবং সেটি করতে গিয়ে অনেক ইতিহাস বিকৃতি হচ্ছে এবং বইয়ের মান রক্ষিত হচ্ছে না। এ বিষয়ে আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর ওপর দেশে-বিদেশে যেসব বই রচিত হয়েছে সেগুলো নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলা প্রয়োজন এবং বইতে কোনোভাবেই যেন ন্যূনতম ইতিহাস বিকৃতি না ঘটে সে ব্যাপারে সচেতন থাকা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ খ্রিস্টান যুব কল্যাণ সমিতির সভাপতি ইলারিশ আর গোমেজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লাহ খন্দকার, বিশপ থিওটোনিয়াস গোমেজ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন।

আরএস

Link copied!