মে ২৩, ২০২৩, ০৬:১০ পিএম
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, দেশে জনগণের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা নাই। সমাজে দুর্বৃত্তায়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। কেউ কাউকে সম্মান করে না।
সমাজ-বিভক্ত। মানুষের মৌলিক অধিকার নাই। ব্যক্তিগত সত্যতা, দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। মনুষ্যত্ব হারিয়ে ফেলেছি। অর্থনৈতিক দূরবস্থা। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোন সামঞ্জ্য নাই। রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে, আমদানির তুলনামূলক বেশি।
প্রবাসীর পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা হ্রাস পেয়েছে। ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক মিল কল কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বৈদেশিক বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে। দুর্নীতি ও টাকা পাচার সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ঘুষ ছাড়া কোন কাজ হয় না।
সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে মাদক ঘরের বিস্তার লাভ করেছে। সব মিলিয়ে পেট্রোল, ডিজেল, কিরোসিন, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ এবং নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। মানুষের এখন নুন আনতে পানতা ফুরায়।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা এলডিপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্নেল অলি আহমদ বলেন, জনগণ বাজেট বুঝে না তার পেটে ভাত নাই। নিজের ও পরিবারের সূচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে না। ছেলে/মেয়েদের স্কুল/কলেজের লেখা পড়ার খরচ দিতে পারে না।
তিনি বলেন, নিজের ভোট বিনা বাধায় নিজে দিয়ে, নিজের পছন্দ মতো প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে চাই। অস্ত্রবাজ মুক্ত/ সন্ত্রাসমুক্ত বাংলাদেশ চাই, শান্তিতে ঘুমাতে চাই, ন্যায় বিচার চাই, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন চাই।
কর্নেল অলি বলেন, বিগত ১৫ বছর যাবত জনগণ গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। সরকার ইমানদার, দেশপ্রেমিক, জনদরদী না হলে দেশে কখনও গণতন্ত্র কায়েম হবে না। উন্নয়ন গণতন্ত্রের বিকল্প হতে পারে না।
তিনি বলেন, দেশে ৪ ধরনের কর্মকর্তার হাতে বন্দী গণতন্ত্র। ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসি। তারা যদি সৎ না হয় ইমানদার না হয়, দেশপ্রেমিক না হয় এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকে তাহলে দেশ নৈরাজ্যের দিকে এগিয়ে যাবে। প্রত্যেক নাগরিক, বিচার বিভাগ, সরকারি/আধা-সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী বিশেষভাবে পুলিশ ও র্যাবকে জনদরদী হয়ে দায়বদ্ধতার সঙ্গে ইমানদারি, সততা, দেশপ্রেম, পক্ষপাতহীন হয়ে আইনের শাসন কায়েম করার ব্যবস্থা নিতে হবে তাহলেই শুধু গণতন্ত্র কায়েম হবে, সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে। মনুষ্যত্ব ফিরে আসবে।
কর্নেল অলি আহমদ বলেন, বেঈমান কখনও অনুতপ্ত হয় না। স্বার্থপর কখনও কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না। আর সুবিধাবাদী কখনও কারো আপন হয় না, মিথ্যা দুর্নীতিবাজ এবং অন্যায়কারী কখন মুসলমান হতে পারে না। তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বন্ধ করুন। রাজনৈতিক নেতাদেরকে স্বাভাবিক গতিতে চলতে দিন। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন/জেলে আটক নেতাকর্মীদের ছেড়ে দিন। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন।
তিনি বলেন, আসুন সবাই মিলে উৎসব মুখল পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করি। অন্যথায় দেশে কখনও শান্তি ফিরে আসবে না। দেশও এগিয়ে যাবে না। উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে দুর্নীতির মহাউৎসব হবে। শুধু উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড গণতন্ত্রের বিকল্প নয়। জনগণ বাঁচান, দেশ বাঁচান, দেশ সকলের।
চান্দিনা উপজেলা এলডিপির সভাপতি এ কে এম শামসুল হক মাস্টারের সভাপতিত্বে কাউন্সিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন এলডিপি মহাসচিব ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও চান্দিনা থেকে বারবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য ড. রেদোয়ান আহমেদ।
উপস্থিত ছিলেন এলডিপি প্রেসিডিয়াম সদস্য ডক্টর নেয়ামূল বশির, ডক্টর আওরঙ্গজেব বেলাল, উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, আইন সম্পাদক এড.আবুল হাসেম,প্রচার সম্পাদক এড. নিলু,মুক্তিযোদ্ধা সম্পাদক সাহাদাত হোসেন মানিক, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক অবাক হোসেন রনি, প্রকাশনা সম্পাদক মেহেদী হাসান মাহবুব, সহদপ্তর সুমন, গণতান্ত্রিক যুবদলের সভাপতি আমান সোবহান, গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি খালিদ বিন জসিম, আইনজীবি ফোরামের সভাপতি এড.নুরে আলম, ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি সোলায়মান হোসেনসহ প্রমূখ।
এইচআর