জুলাই ২১, ২০২৩, ০৯:২২ পিএম
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে বিদেশিদের মন্তব্য অযাচিত। বিদেশে প্রায় লোক মেরে ফেলে, কিন্তু এগুলো নিয়ে আমরা কখনো হইচই করি না।
আমাদের দেশের মিডিয়া ওদের (বিদেশিদের) খুব বেশি পাত্তা দেয়। ওরা বললেই বড় করে দেখে। এর ফলে ওরা মজা পায়। মনে করে, তারা এই দেশের সম্রাট। তাই তারা যেকোনো বিষয়ে কথা বলে।’
আজ শুক্রবার দুপুরে সিলেট শিল্পকলা একেডেমিতে সম্মাননা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ইলেকশনে ৪০ জনের মতো লোক মারা গেল। একটা দেশও কোনো কথা বলেনি। কিন্তু আমাদের দেশে কারে কী করল, সেটি নিয়ে চিৎকার শুরু করে। এইটা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ, যা জেনেভা কনভেনশনের ধারেকাছে নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করব, বিদেশি অ্যাকটিভিস্ট রাষ্ট্রদূত যাঁরা, তাঁরাও আগামীতে এ ধরনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমি যা বলতে চাচ্ছি, বিভিন্ন দেশে লোক যে মারা যায়, ইউএন কিংবা বিভিন্ন দেশ দল বেঁধে বা অ্যাকটিভিস্ট রাষ্ট্রদূতদের কখনো কোনো স্টেটমেন্ট দিতে আমি দেখিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘আপনারা কি কেউ দেখেছেন, দেখে থাকলে বলেন, কোন কোন দেশ দল বেঁধে বা অ্যাকটিভিস্ট রাষ্ট্রদূতরা স্টেটমেন্ট দিয়েছেন?’
বিএনপির চলমান আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্বেগের বিষয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বহু বছর সদস্য ছিলেন। এটি ব্রিটিশ অর্গানাইজেশন। ব্রিটিশরা তাদের মতো অনেক সময় কাজ করে। তবে হ্যাঁ, প্রাইভেট ফান্ডিংও হয়। ব্রিটিশরা মোটামুটি চালায়।
আন্দোলন-সংগ্রামে পুলিশ বাধা দেয় না দাবি করে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বিএনপি যখন পাবলিক ও প্রাইভেট প্রপারটি ধ্বংস করে, তখন পুলিশের রেসপনসিবিলিটি টু প্রটেক্ট এবং সেটা আমরা নেব। সরকার হিসেবে সেটা আমাদের দায়দায়িত্ব। ইংল্যান্ডে পুলিশ কীভাবে অত্যাচার করে দেখেছেন? আর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কথা বলে! আমেরিকাতে দেখেছেন, পুলিশ কীভাবে গলাচিপে মেরে ফেলে। আমাদের পুলিশ অত্যন্ত সহনশীল। একটা-দুইটা হয়তো কেস ডিফারেন্ট (ভিন্ন) হতে পারে। দে ফলো রুলস।’
সাংবাদিকদের বিদেশিদের পাত্তা না দেওয়ার পরামর্শ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁদের দেশের পুলিশ কী করে, সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেটে জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে পাঁচজন গুণী শিল্পীকে সম্মাননা পদক দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে আবৃত্তিশিল্পী রোহেনা সুলতানার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা সংস্কৃতি কর্মকর্তা অসিত বরণ দাশ গুপ্ত।
জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা-২০২২ পদকপ্রাপ্ত গুণী শিল্পীরা হলেন মিহিরকান্তি চৌধুরী (লোকসংস্কৃতি), পূর্ণিমা দত্ত রায় (কণ্ঠসংগীত), চম্পক সরকার (নাট্যকলা), জ্যোতি ভট্টাচার্য্য (আবৃত্তি) ও মো. মিনু মিয়া (যন্ত্রসংগীত)। অনুষ্ঠানে সম্মাননাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সম্মাননা পদক, সম্মাননা চেক, সনদ ও উত্তরীয় তুলে দেন অতিথিরা।
এইচআর