নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ৪, ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ৪, ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম
যারা রাজনীতির নামে আগুন সন্ত্রাস করে, রাজনীতির নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে, তাদের এই দেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না। এরা রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত, রাজনীতিবিদ নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তাদের যারা আর্থিক সহায়তা দেয়, নেতৃত্ব দেয়, তারা দুর্বৃত্তদের নেতা। সুতরাং বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে বিভিন্ন সময়ে যে আগুন সন্ত্রাস হয়েছে এবং এখনো ওঁত পেতে বসে আছে, তাদের নেতারা হচ্ছে, এই দুর্বৃত্তদের নেতা। তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীমের মৃত্যুতে আয়োজিত এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি এ স্মরণ সভার আয়োজন করে।
আগুন সন্ত্রাস যারা চালায় তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজনীতির নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা গত দুই তিন দশকে দুনিয়ার কোথাও আমি দেখিনি। শুধু মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা নয়, আপনারা জানেন গত নির্বাচনের আগে কীভাবে ট্রেনের মধ্যে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। যাত্রী বেশে ঢুকে সেখানে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে বের হয়ে গেছে। তারা জানে, সেখানে নারী-শিশু আছে। সেই আগুনে পুড়ে নারী ও শিশু অঙ্গার হয়ে গেছে। এই যে আগুন সন্ত্রাস, এটা কল্পনারও বাইরে। সুতরাং আজকে যেমন কোনো জায়গায় আগুন না লাগে, সে বিষয়ে সচেতন হতে হবে, তেমনি যারা দেশে রাজনীতির নামে আগুন সন্ত্রাস চালায়, তাদের বিরুদ্ধেও ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার।
মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে জন্য সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আসলে বাংলাদেশে অগ্নিনির্বাপণের জন্য ঘরবাড়িতে এবং বিশেষ করে রেস্টুরেন্টগুলোতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাখা হয় না। আপনারা জানেন, ঢাকা শহরে যথাযথ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকার কারণে অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যাতে এই ধরনের অগ্নিকাণ্ড আর না ঘটে।
মানুষের সচেতনতার অভাব থাকলে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেও অগ্নিনির্বাপণ করা সম্ভব নয় মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফায়ার সার্ভিসকে কিন্তু ঢেলে সাজিয়েছেন। আমরা যখন সরকার গঠন করি ২০০৯ সালে, তখন দেশের মাত্র ৪০টা উপজেলায় ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ছিল। এখন প্রত্যেকটা উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন আছে। এটা একটা বিরাট অগ্রগতি।
তিনি বলেন, আগে ২০ তালায় উঠতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটিং করার ব্যবস্থা ছিল না। ২০ তলা বা আরও উচু ভবনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যাতে ফায়ার ফাইটিং করতে পারেন, সে জন্য তাদের সেইভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এমনকি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যাতে আকাশ থেকেও অগ্নিনির্বাপণ করতে পারেন, সেজন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সবশেষে যেটি প্রয়োজন, সেটি হলো মানুষের সচেতনতা। মানুষের সচেতনতার যদি অভাব থাকে, তাহলে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেও অগ্নিনির্বাপণ করা সম্ভব নয়। আমাদের দেশ একটি গরমের দেশ। আমাদের দেশের প্রত্যেকটি ঘরবাড়িতেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।
সাপ্তাহিক গণবাংলার প্রধান উপদেষ্টা এম এ করিমের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এছাড়া স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রয়াত আতাউর রহমানের একমাত্র কন্যা ফারদিন রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির সদস্য মশিউর আহমেদ, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটির চেয়ারম্যান মো. সুমন সরদার, মহাসচিব এম এ বাশার, প্রমুখ।
বিআরইউ