আমার সংবাদ ডেস্ক
নভেম্বর ৩, ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
আমার সংবাদ ডেস্ক
নভেম্বর ৩, ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ও বাউফল উন্নয়ন ফোরামের চেয়ারম্যান ডক্টর মু. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, দলমত ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশিষে আগামীতে সম্প্রীতি বাংলাদেশ গঠনে কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, নাগরিকে-নাগরিকে যেই বিভেদ, বিভক্তি ও বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে সেই বিভেদ, বিভক্তি, বৈষম্য মুক্ত জাতি গঠন করা হবে। বিভক্ত জাতি কখনো রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর হতে পারে না।
শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া স্যার সলিমুল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি নিরস্ত্র নিরীহ হেফাজতে ইসলামীর আলেমদের সহ সকল হত্যার বিচারের দাবি করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রধান টার্গেট ছিল আলেম-ওলামাদের নিঃশেষ করা। গত ১৫ বছর মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিন ঠিকমতো মসজিদে নামাজ পড়াতে পারেনি। রাতে নিজ ঘরে বা মসজিদেও ঘুমাতে পারেনি। ঘর থেকে, মসজিদ থেকে আলেমদের ধরে নিয়ে জঙ্গি সাজিয়ে মামলা দিয়ে জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে। জনগণের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে। ক্ষমতা ছেড়েই তারা দেশ থেকে পালিয়ে তাদের বিদেশের বাড়িতে গিয়ে উঠছে। জনগণ রাষ্ট্রের সাংবিধানিক মালিক হলেও তারা জনগণের মালিক সেজে জনগণকে দাস বানিয়ে রেখেছিল। জনগণকে কথা বলতে দেয়নি। জনগণের পক্ষে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ কথা বলায়, প্রতিবাদ করায়, আন্দোলন করায় তারা জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলায় বিচারক হত্যা করেছে। বহু নেতাকর্মীকে মামলা দিয়ে জুলুম নির্যাতন করেছে।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আগামী নির্বাচনে দুর্নীতিবাজদের ভোট না দিয়ে, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ভোট দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভোট দিয়ে যাকে নেতা নির্বাচন করা হবে তার দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, লুটপাট, চুরি করার কারণে ভোটারও আল্লাহর আদালত অপরাধী হবে। কারণ তাকে ভোট দেওয়ার কারণেই সে অপকর্মের সুযোগ পেয়েছে। সেজন্য নেতা নির্বাচন করতে হবে এমন ব্যক্তিকে যিনি আল্লাহকে ভয় পায়। যিনি জনগণের সম্পদ আমানত মনে করেন। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে ড. মাসুদ বলেন, সুদ, ঘুষ, চুরি, চাঁদাবাজি, লুটপাট, সন্ত্রাসী, ধর্ষণ যেমন ইসলাম ধর্মে অপরাধ। ভিন্ন ধর্মের মানুষও এসব অপরাধ হিসেবে বিশ্বাস করে। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় একজন মুসলমান নাগরিকের যতটুকু অধিকার একজন ভিন্ন ধর্মের নাগরিকেরও সমান অধিকার। এটাই ইসলামের সৌন্দর্য। তাই তিনি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় দলমত ধর্ম বর্ণ জাতি গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকল নাগরিককে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ড. মাসুদ বাউফল বাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, মহানবী (সা.) ইসলামের আদর্শে সোনার মানুষ তৈরি করে সোনার মদিনা প্রতিষ্ঠা করেছেন। আগামীতে ইসলামী আদর্শে বাউফলে সোনার মানুষ তৈরি করে একটি আধুনিক, মানবিক বৈষম্য মুক্ত মডেল বাউফল গঠন করা হবে। আর কোন দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলদার জনগণের নেতৃত্ব দিতে পারবে না। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে, জনগণের সাংবিধানিক মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এমপি মন্ত্রীরা জনগণের শাসক হবে না, খাদেম হবে। জামায়াতে ইসলামী ব্যতিত অন্য কোন দল দুর্নীতি ও বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ গঠন করতে পারবে না। তার প্রমান জামায়াতে ইসলামীর ২ জন মন্ত্রী ৩টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছে। জামায়াতের বহু নেতা এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে কিন্তু তাদের একজনেরও বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কেউ এক টাকা দুর্নীতি করেছে প্রমাণ দেওয়া তো দূরের কথা অভিযোগও করতে পারেনি। তাই বাংলাদেশকে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গঠন করতে তিনি জামায়াতে ইসলামীর প্রতি সমর্থন কামনা করেন।
্সমাবেশ শেষে, বৈষম্য বিরোধ ছাত্র আন্দোলনে দুই শহীদের পরিবারের মাঝে ড. মাসুদ ২ লাখ টাকা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন। এর আগে তিনি বাউফলের ৬ শহীদ পরিবারকে ১২ লাখ টাকা ও ১৪৭ জন আহত ব্যক্তির চিকিৎসা সহ সার্বিক সহযোগিতা করেন।
কনকদিয়া ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মাওলানা আবদুল করিম ফরিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্প্রীতি সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাউফল উপজেলা আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি খালিদ আহমেদ, ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী মুনতাসীর মুজাহিদ সহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ মদনপুরা ইউনিয়ন কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এতে বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
বিআরইউ