Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫,

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান

ষড়যন্ত্র মিথ্যাচার করে জামায়াত-ছাত্রশিবিরকে আর শেষ করা যাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

জানুয়ারি ২৪, ২০২৫, ০৫:১৪ পিএম


ষড়যন্ত্র মিথ্যাচার করে জামায়াত-ছাত্রশিবিরকে আর শেষ করা যাবে না

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, আমি বাস্তবতা থেকে দেখেছি জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের সাথে যারাই লাগতে এসেছে ইতিহাসের চরম আস্তাকুঁড়ে তারাই নিক্ষিপ্ত হয়েছে। অনেককে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের সাথে বিরোধিতা করতে গিয়ে চরম পরিণতির শিকার হতে দেখেছি। জুলুম নির্যাতন মোকাবেলা করে সঠিক ইসলামি আন্দোলনের কর্মী হিসেবে সব সময়ে আমরা মহান আল্লাহর সাহায্য পেয়েছি। জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা সকল ধরনের ষড়যন্ত্র চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই সামনে এগিয়ে যাবে। কোনো ষড়যন্ত্র মিথ্যাচার করে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে আর শেষ করা যাবে না।

বলেন, সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা একথা এক বাক্যে স্বীকার করেন নিজামী সাহেবের মতো পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ বাংলাদেশে আর কেউ ছিলেন না। তারপরও তাকে ফাঁসি দিয়ে শহিদ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল জামায়াতের নেতৃত্ব শেষ করার মাধ্যমে পুরো সংগঠনকে শেষ করে দেওয়া যাবে। কিন্তু না তা হয়নি বরং জামায়াতে ইসলামি বর্তমান বাংলাদেশে সবচেয়ে সুশৃঙ্খল ও সুগঠিত রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে আজ দাঁড়িয়ে গেছে, আলহামদুলিল্লাহ।

শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের চকবাজার-বংশাল জোনের উদ্যোগে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স হলে বার্ষিক পরিকল্পনা ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চকবাজার-বংশাল জোন পরিচালক কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. দেলাওয়ার হোসেন।

বার্ষিক পরিকল্পনা ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চকবাজার-বংশাল জোনের সহকারী পরিচালক এস.এম. আহসান উল্লাহ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও বংশাল দক্ষিণ থানা আমির মাহবুবুল আলম ভুঁইয়া, কোতয়ালী থানা আমির মাওলানা মতিউর রহমান, চকবাজার দক্ষিণ থানা আমির মাওলানা আনিসুর রহমান, মাওলানা মাহফুজুর রহমান, মাওলানা তাজুল ইসলাম, মাওলান বিলাল হুসাইন, আবুল হোসেন রাজন, মো. রফিকুল ইসলামসহ অত্র জোনের বিভিন্ন থানা সেক্রেটারি ও কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ।

প্রধান অতিথি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশে কিছুদিন পূর্বেও যারা জুলুম চালিয়েছে তারা আজ অন্ধকারে পালিয়ে গেছে। তাদেরকে কেউ পালাতে বাধ্য করেনি তবুও ফ্যাসিবাদের সেসব দোসরেরা ক্ষমতাধর দাবি করা ব্যক্তিরা পালিয়ে গেছে। এখন আর তাদের খুঁজেও পায়না দেশের মানুষ। যারা বিদেশের মাটিতেও বাড়িঘর তৈরি করেছে তারাও আজ সেখানে থাকে না জনগণের ভয়ে লজ্জায়। দুনিয়ায় এসব রাজনীতি করে তাহলে তাদের কি লাভ হয়েছে! যুগে যুগে যারাই জনগণের উপরে জুলুম করেছে তাদের শেষ পরিণতি খুবই লজ্জাজনক হয়েছে এটাই বাস্তব।

রফিকুল ইসলাম খান বলেন, যে ট্রাইবুন্যালে জামায়াত নেতাদের ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস আজ সেই ট্রাইবুন্যালেই আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিচারের সম্মুখীন হতে হয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগ ও পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র এদেশ থেকে ইসলাম নির্মূলের ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত করতেই জামায়াত নেতাদের ফাঁসির রায় দিয়েছিল। শুধু তাই নয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির ১নং হতে ১১নং পর্যন্ত শীর্ষ নেতাদের উপরে জুলুম চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল আওয়ামী লীগ। তখন সাজানো সাক্ষী এনে প্রহসনের রায় দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ দেখেছে জনগণ। আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে, বিচারের রায় অন্য স্থান থেকে লিখে নিয়ে এসে তা কার্যকর করা ছিল, যা ইতিহাসের চরম নিষ্ঠুরতা। আজকের আয়োজন থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাতে চায়, যারাই এসব জুলুম অন্যায়ের সাথে জড়িত ছিল, যারাই ফ্যাসিবাদের সাথে জড়িত, তারা বাংলাদেশে থাকুক কিংবা বিদেশে থাকুক তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসে ট্রাইবুন্যালে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এখনো যারা সরকারের ভিতরে বাহিরে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে রয়েছে তাদেরকেও দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে। গোজামিলের ভোটার তালিকা সবার আগে সংশোধন করতে হবে, ভুয়া সব ভোটার বাদ দিতে হবে। যারা আয়নাঘর তৈরি করে খুন এবং গুমের রাজনীতি চালু করে বাংলাদেশের মানুষের উপরে জুলুমতন্ত্র চাপিয়ে দিয়েছিল তাদের ক্ষমা নেই। আজকে বাংলাদেশে ইসলামপন্থিদের জাগরণ শুরু হয়েছে। আমাদের ঐক্য হবে আরও সুদৃঢ়। মনে রাখবেন ষড়যন্ত্রকারীদের পরিণতি কোনোদিনই ভালো হয় না, এটাই মহান আল্লাহর ওয়াদা।

সভাপতির বক্তব্যে দেলাওয়ার হোসেন বলেন, যুব সমাজের মাঝে আমাদের আহ্বান বেশি বেশি পৌঁছে দিতে হবে। বাংলাদেশে নতুন স্বাধীনতা পরবর্তী এই সময়ে আমরা যে আয়োজন করতে পারছি এর জন্য মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হবে। এই উন্মুক্ত পরিবেশে কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে আগামীতে এই বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিবর্তনে আমাদের প্রত্যেককে ভূমিকা পালন করতে হবে। সেই প্রত্যয় প্রেরণা নিয়ে এদেশের প্রত্যেক মুসলিম যুবককে কুরআনের সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা পালনের আহ্বান করছি।

ইএইচ

Link copied!