Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ০৩ মার্চ, ২০২৫,

রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন ও আলিঙ্গন করা জায়েজ কিনা?

ধর্ম ডেস্ক

ধর্ম ডেস্ক

মার্চ ২, ২০২৫, ১২:১৭ পিএম


রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন ও আলিঙ্গন করা জায়েজ কিনা?

ইসলামে রোজা পালন মুসলমানদের জন্য একটি ফরজ ইবাদত। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, অনাচার এবং যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা রোজার মূল শর্তগুলোর মধ্যে একটি। ফলে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করা, আলিঙ্গন করা বা শারীরিক ঘনিষ্ঠতা জায়েজ কি না।

শরিয়তের দৃষ্টিতে রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন ও আলিঙ্গন করা

রোজার মধ্যে এমন কিছু কাজ আছে, যা করলে রোজা ভঙ্গ হয়, আবার কিছু কাজ আছে, যা রোজার জন্য ক্ষতিকর নয় তবে তা থেকে বিরত থাকাই উত্তম।

রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন ও আলিঙ্গন করা জায়েজ।

হাদিসে এসেছে, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, "রাসূল (সা.) রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করতেন এবং আলিঙ্গন করতেন। তবে তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সক্ষম ছিলেন।" (বুখারি: ১৮৪১, মুসলিম: ১১২১)

তবে, যদি চুম্বন বা আলিঙ্গনের ফলে বীর্যপাত হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে এবং সেই রোজার কাজা করতে হবে। তবে কাফফারা দিতে হবে না।

যদি মজি (পানি সদৃশ তরল) বের হয়, তাহলে রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। এটি অধিকাংশ আলেমদের অভিমত।

যৌন উত্তেজনার ফলে সহবাসের সম্ভাবনা থাকলে চুম্বন বা আলিঙ্গন করা মাকরুহ (অপছন্দনীয়)।

এ বিষয়ে এক যুবক রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি নিষেধ করেন, কিন্তু এক বৃদ্ধ একই প্রশ্ন করলে তিনি অনুমতি দেন। (মুসনাদে আহমদ: ২/১৮০ ও ২৫০)
রোজা অবস্থায় সহবাসের বিধান

রোজা থাকা অবস্থায় স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণরূপে হারাম এবং এটি করলে রোজা ভেঙে যাবে। শুধু কাজা নয়, ৬০ দিন ধারাবাহিক রোজা রাখতে হবে বা ৬০ জন দরিদ্রকে খাওয়াতে হবে (কাফফারা)।

তবে, রোজার সময়ের বাইরে (রাতের বেলায়) স্বামী-স্ত্রী মিলন করা জায়েজ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন,
"রমজান মাসে রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে মিলিত হওয়া তোমাদের জন্য বৈধ করা হলো..." (সুরা আল-বাকারা: ১৮৭)

উপসংহার

রোজা অবস্থায় চুম্বন ও আলিঙ্গন করা জায়েজ, তবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বীর্যপাত বা সহবাসের সম্ভাবনা থাকলে তা থেকে বিরত থাকা উত্তম।

চুম্বন বা আলিঙ্গনের ফলে যদি বীর্যপাত হয়, তাহলে সেই রোজার কাজা আদায় করতে হবে, তবে কাফফারা লাগবে না।

রমজানের রাতে স্বামী-স্ত্রী মিলন করা সম্পূর্ণ হালাল, তবে সুবহে সাদিকের আগেই গোসল করে নিতে হবে।

তাই রোজার পবিত্রতা রক্ষা করে আত্মসংযম পালন করাই উত্তম।

ইএইচ

Link copied!