নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ২৮, ২০২৪, ১১:০৪ এএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
জুলাই ২৮, ২০২৪, ১১:০৪ এএম
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলমান অস্থিরতার মধ্যে ৬ দিনেও আসেনি ১ দিনের সমান রেমিটেন্স! কোটা আন্দোলনের উত্তাল সময়ে অর্থাৎ গত ১৯ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অথচ মাসের প্রথম ১৮ দিনে এসেছিল প্রতিদিন গড়ে ৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
দেশে প্রবাসী আয় আসা গত এক সপ্তাহে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবাসী আয়সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে, রেমিটেন্স কম আসার কারণ সম্পর্কে বলা হচ্ছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে ১৯ জুলাই শুক্রবার রাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। এরপর মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ ছিল। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় ব্যাংকে অনলাইন লেনদেনও বন্ধ ছিল। কয়েক দিন লেনদেন বন্ধের পর ২৪ জুলাই ব্যাংক চালু হয়। সেদিন লেনদেন চলে বেলা ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা। ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ১৯ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই বৈধ পথে তথা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে প্রবাসী আয় আসাও সম্ভব ছিল না। এ সময়ের মধ্যে যারা বিদেশ থেকে প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন, গত বুধবার ব্যাংক খোলার প্রথম দিনেই তা দেশের ব্যাংকে জমা হওয়ার কথা ছিল; কিন্তু সেটিও হয়নি।
অন্যদিকে, প্রবাসীদের পক্ষ থেকে রেমিটেন্স বন্ধের আহ্বানে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলেও মনে করেন অনেকে। এনিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পক্ষ-বিপক্ষ জোর প্রচারণা চলছে। প্রবাসীদের একটি গ্রুপ ছাত্র-জনতা হত্যার প্রতিবাদে ও সরকার পতনের দাবিতে রেমিটেন্স না পাঠানোর অঙ্গীকার করে অন্যদেরকেও নিরুৎসাহিত করে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
মল্লিক নামে একজন প্রবাসী সামাজিক মাধ্যমে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে লিখেছেন, ১ টাকাও বাংকে পাঠাবো না, ফ্যামিলি থেকে অনেক দূরে থাকি, এখানে আপনজন বলতে কেউ নাই, তার পরে আবার সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে ফ্যামিলি থেকে যোগাযোগ বন্ধ করে রেখেছে। এক টাকাও ব্যাংকে রেমিট্যান্স পাঠাবো না, হুন্ডিতেই পাঠাবো, তাছাড়া হুন্ডিতে রেটও বেশি, আবার টাকা পাঠাতে ডিউটি বন্ধ করে ব্যাংকে যেতে হয়না, টাকা বাড়িতে গিয়ে দিয়ে আসে, আর হুন্ডিতে টাকা পাঠাতে খরচও লাগে না।
ফেসবুকে ফুরকান পাঠান লিখেছেন, শ্রীলঙ্কার প্রবাসীরা কি করছিল মনে আছে? ঠিক ঔ রকম করতে হবে,
তারা তিন মাস টাকা পাঠানো বন্ধ রাখছে, সবাই ভাবছে শ্রীলঙ্ক দেউলিয়া হয়ে গেছে, কিন্তু সরকার পরিবর্তন হওয়ার ২ মাসের মধ্যে শ্রীলঙ্কা ঘুরে দাঁড়িয়েছ, সবাই ভাবছে ম্যাজিক, আসলে দুই মাসে তাদের প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি শক্তিশালী করেছে, এটাই প্রবাসী দের শক্তি।পরিবারকে বলুন কষ্ট করে তিন মাস জমানো টাকা দিয়ে চলতে..!
কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতি নৃশংসতায় ক্ষোভ জানিয়ে ফখরুল লিখেছেন, আমাদের টাকা দিয়ে বুলেট কিনে ওই বুলেট আমার ভাইদের বুকে মারা হয়। আমার ভাইদের হত্যার বিচার না হলে একটা টাকাও ব্যাংকে যাবে না। আমার সাথে কে কে একমত।
মশিউর রহমান লিখেছেন, বিদেশের মাটিতে বসে দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশের সুবর্ণ সুযোগ এসেছে। রেমিট্যান্স বন্ধ করে স্বৈরাচার হটাবার আন্দোলনের এমন সুযোগ আর পাব না। সো এক কোটি রেমিট্যান্স যোদ্ধার সাথে আমিও একজন।
অন্যদিকে, রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করে মো. সামিম লিখেছেন, দলপ্রেমীরা কখনো রেমিটেন্স দেশে পাঠাবে না। দেশের পরিচয় বহন করে অথচ দেশের প্রতি ভালোবাসা নেই। দেশের অর্থনীতির সমস্যা হলে সেটা আমাদের দেশের গরিব আসহায় মানুষ কষ্ট করবে..। সেটা কয়জনে বুঝে। দলকে নয় দেশে ভালোবাসি তাই আমি প্রবাসি ব্যাংকে টাকা পাঠাই।
এআর কায়সার লিখেছেন, আমি একজন প্রবাসী আপনাদের দুঃখ আমি বুঝি। তারপর বলবো আপনারা ভুল সিদ্ধান্ত নিবেন না। এই দেশ কারো একার না এদেশ আপনার আমার আমাদের। যদি ভুল সিদ্ধান্ত আমরা নেই কোন রাজনৈতিক দলের ক্ষতি হবে না ক্ষতি হবে আমাদের নিজের। তাই আসুন কারো কথাই কান না দিয়ে আমাদের দেশকে আমরা বাচাই। ধন্যবাদ।
মো. খলিল লিখেছেন, আমরারে রেমিটেন্স না পাঠালে সরকার হয়তো প্রাথমিক অবস্থায় কিছুটা চাপে পড়বে,, কিন্তু পরে এটার মাসুল আমরা সাধারণ মানুষ দিতে হবে,, কারণ সবকিছু দাম বেড়ে যাবে এবং সবকিছুতে সরকার ট্যাক্স বাড়িয়ে দেবে।
বিআরইউ