আমার সংবাদ ডেস্ক
জানুয়ারি ৩০, ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম
আমার সংবাদ ডেস্ক
জানুয়ারি ৩০, ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম
আবেদন করা তো দূরের কথা, মুচলেকা দিয়ে সরকারের কাছে মুক্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে দাবি করেছেন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানান।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ‘গুম’ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, যেহেতু আযমী একজন সেনা কর্মকর্তা ছিলেন, তাই শেখ হাসিনার কাছে তিনি মুক্তি দেওয়ার আবেদন জানাতে থাকেন। কিন্তু প্রতিবারই তার আবেদন নাকচ করে হাসিনা। সেনা কর্মকর্তার বরাতে প্রকাশিত ওই বক্তব্যটি সর্বৈব মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে প্রথম কথা হলো, আবেদন জানাতে হলে সেনা কর্মকর্তা কেন, যেকোনো ব্যক্তিই তো আবেদন জানাতে পারেন। আবেদন জানানোর জন্য সেনা কর্মকর্তা হতে হবে এ ধরনের কোনো বিধান নেই। তাই, বক্তব্যটি হাস্যকর।
তিনি বলেন, আট বছরের বন্দী জীবনে আমি কখনো প্রধানমন্ত্রী বা অন্য কারো কাছে মুক্তির জন্য কোনো ধরনের আবেদন করিনি। এটা সবাই জানেন যে, আমাকে ডিজিএফআই অপহরণ করে ঢাকা সেনানিবাসের পশ্চিম প্রান্তে, কচুক্ষেতে ডিজিএফআই কমপ্লেক্ষের ভেতরে আয়নাঘরে দীর্ঘ আট বছর প্রাকৃতিক আলো-বাতাসহীন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বন্দী করে রেখে মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য করে সীমাহীন মানসিক নির্যাতন করেছে। সুতরাং, যদি কোনো সেনা কর্মকর্তার কাছে আমি আবেদন করেছিলাম মর্মে বক্তব্য দিয়ে থাকেন, তাহলে তিনি ডিজিএফআইয়ের অফিসারই হবেন।
আযমী বলেন, আমি বন্দী থাকাকালীন ডিজিএফআইয়ের পাঁচ জন ডিজি (যাদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে) এবং ডিজিএফআইয়ের যে শাখায় আমাকে অপহরণ করে বন্দী করে রেখেছিল সেই শাখার ৫ জন ডাইরেক্টর ছিলেন। আমি যদি মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে থাকি তাহলে এই ১০ জনের মধ্য হতে দুই বা তার অধিক অফিসারের মাধ্যমেই তো প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর কথা। আমি এই ১০ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, আমি আবেদন করেছি মর্মে যেই দাবি করা হয়েছে সেই ধরনের কোন দলিল/ প্রমাণ আপনাদের নিকট থেকে থাকলে তার মূল কপি জনসম্মুখে প্রকাশ করে আপনাদের বক্তব্যের সত্যতা প্রমাণ করুন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বন্দী থাকাকালীন ২০২১ সালের ২৩শে মে বিকেলে সেখানকার এক কর্মকর্তা আমাকে বলেছিলেন যে, আমি দেশে থাকবো না, রাজনীতি করবো না, নিজের পরিবার নিয়ে বিদেশ চলে যাবো এই মর্মে একটি মুচলেকা দিলে তারা আমাকে মুক্তি দিতে পারে। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছি যে, আমি স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমি রাজনীতি করবো কি করবো না, দেশে থাকবো কি থাকবো না সেটা আমার সিদ্ধান্ত। আমি মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পেতে চাই না। সেই কর্মকর্তা কয়েকবার বললেও আমি আমার বক্তব্যে অটল থাকি।
তিনি বলেন, আমি ডিজিএফআই’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার এ ধরনের নির্লজ্জ মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাই। ভবিষ্যতে এ ধরনের মিথ্যাচার না করার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
ইএইচ