Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪,

পা রাখার জায়গা নেই বইমেলায়

আবু ছালেহ আতিফ

আবু ছালেহ আতিফ

ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৩, ০৮:৪৬ পিএম


পা রাখার জায়গা নেই বইমেলায়
  • শুধু ভিড় নয়,ক্রেতাও সন্তোষজনক 
  • বইয়ের দামে তেমন অভিযোগ নেই পাঠকের 
  • ১২৭ পৃষ্ঠার নতুন বইয়ের দাম পুরোনো ৩৯৯ পৃষ্ঠার সমান
  • নজর কেঁড়েছে শিশু চত্বরের সিসিমপুর 

দ্বিতীয় ছুটির দিন শুক্রবারে ও অমর একুশে বইমেলার দশম দিনে মনে হচ্ছে পা রাখা দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রতিটি স্টল ও অলিগলি গুলো। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে পাঠক,দর্শনার্থীদের নজরকাড়া ভিড়ে কানায়-কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে মেলা আঙিনা।এবং শুধু ভিড়ই নয় দর্শনার্থীদের রয়েছে বই কেনার আগ্রহও। এছাড়াও বাচ্চাদের নিয়ে শিশু চত্বরের সিসিমপুর আয়োজনেও কচিকাঁচাদের মন জুড়ানো উল্লাসে মেতে উঠেছে বাঙালি ঐতিহ্যের এ বইমেলায়। হালুম,টুকটুকি,ইকরির তালে- তালে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত বাচ্চাদের মন মাতানো উচ্ছ্বাস ফুটে উঠেছে। 

শুক্রবার (১০) ফেব্রুয়ারি বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত মেলার প্রবেশ গেইট গুলো দিয়ে দলে দলে পাঠক ও দর্শনার্থী বইমেলায় প্রবেশ করতে দেখা যায়।

মেলায় এত ভিড় কি শুধু দর্শনার্থী! নাকি তারা বই কিনতেও আসে এবং বইয়ের দাম নিয়ে  পাঠক ক্রেতার মনোভাব কেমন জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলা একাডেমি প্যাভিলিয়ন -৬ এর এক সেলস পার্সন বলেন, আসলে সবাইতো বই কিনবে না তবে আজকে আমরা ক্রেতা পাঠক ভালো পাচ্ছি, তারা বই দাম করছে এবং কিনছে।

কোন ধরনের বই কেনার চাহিদা বেশি জানতে চাইলে এ সেলস পার্সন বলেন, মোটামুটি সব ধরনের বই চলে তবে বঙ্গবন্ধু, ছোটোগল্প এবং ডিকশনারি আমাদের বাংলা একাডেমি স্টল থেকে বেশি বিক্রি হয়। এছাড়াও বইয়ের দাম কেমন জানতে চাইলে কেন্দ্র বিন্দু, অনুপ্রাবন,চারুলিপি প্রভৃতি প্রকাশনীর দায়িত্বশীলরা জানান, নতুন বইয়ের দাম বেড়েছে আর সেটা কাগজের দাম বাড়ার কারণে তবে পুরোনো বইয়ের দাম বাড়েনি। 

উদাহরণ সরূপ চারুলিপি প্রকাশনীর সেলস পার্সন সজিব আমার সংবাদকে বলেন, এই যে দেখেন শহীদুল্লাহ কায়সারের পুরোনো একটি বই রাজবন্দীর রোজনামচা,  পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩৯৯ যার দাম দুইশ পঞ্চাশ টাকা আবার শহীদুল্লাহ কায়সারের নতুন বই সংশপ্তক, পৃষ্ঠা ১২৭ যার দামও আড়াইশো টাকা। 

সজিব বলেন,এই দামটা আসলে কাগজের দাম বাড়ার কারণে বেড়েছে এখানে লেখকের আসলে কোনো হাত নেই।

বাংলা একাডেমির বিপরীতে, রমনা কালী মন্দির গেইট থেকে গাদাগাদি করে সিরিয়াল ধরে মেলায় প্রবেশ করতে দেখা যায় তরুণী হাফসা ও তার বান্ধবী সোনিয়া । তিনি আসছেন ওয়ারী থেকে। 

বইমেলায় প্রবেশের জন্য এত ঝামেলা পোহানোর কি দরকার জানতে চাইলে তারা বলেন, অন্যান্য দিন অফিস থাকে তাই আসার সুযোগ নেই, আজকে কষ্ট হলেও বইমেলার এই চিত্র দেখার খুব ইচ্ছে ছিলো আমাদের। একটু ঝামেলা হলেও বই কিনেতো বাসায় যেতে পারবো।

নতুন বই : আজ নতুন বই এসেছে ২৬০টি। এর মধ্যে গল্প ৩০ উপন্যাস ৪৬ প্রবন্ধ ১৩ কবিতা ৭৯গবেষণা ৪ ছড়া ৮ শিশুসাহিত্য ১৮ জীবনী ৬ রচনাবলি ২ মুক্তিযুদ্ধ ৩ নাটক ৩ বিজ্ঞান 
১ ভ্রমণ ৮ ইতিহাস ৫ রাজনীতি ১ চি:/স্বাস্থ্য ১ বঙ্গবন্ধু  ১ রম্য/ধাঁধা ২ ধর্মীয় ৩ অনুবাদ ২ অভিধান
০ সায়েন্স ফিকশন ৬ অন্যান্য ১৮ মোট ২৬০ বই প্রকাশিত হয়।

এবং মেলায় ছিল আজ শিশুপ্রহর। সকাল ১১:০০টা থেকে বেলা ১:০০টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়। শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা : অমর একুশে উদ্যাপনের অংশ হিসেবে সকাল ৮:৩০টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। 

এতে ক-শাখায় ১৯৫, খ-শাখায় ১৮৩ এবং গ-শাখায় ৬৮ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন শিল্পী হাশেম খান। শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতা : সকাল ৯:৩০টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তেন শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার প্রাথমিক বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুইশতাধিক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন কাজী মদিনা, আন্জুমান আরা এবং নূরুল হাসনাত জিলান। 

আলোচনা অনুষ্ঠান বিকেল ৪:০০টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : শিল্পী সফিউদ্দীন আহমেদ এবং জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : এস এম সুলতান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মলয় বালা এবং সৈয়দ নিজার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সুশান্তকুমার অধিকারী, ইমাম হোসেন সুমন, নাসির আলী মামুন এবং নীরু শামসুন্নাহার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুনতাসীর মামুন।

এবি
 

Link copied!