Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪,

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

মোঃ সোহাগ বিশ্বাস

মোঃ সোহাগ বিশ্বাস

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩, ০৭:১১ পিএম


শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিয়ে এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিভিন্ন শিক্ষা  প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি পালন করে এমপিও ভুক্ত শিক্ষক কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট ও সহযোগী সংগঠনসমূহ।

এ সময় শিক্ষক নেতারা বলেন, এমপিওভূক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা নিরালস পরিশ্রম করলেও আমিরা সব ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমাদের একটাই দাবি এমপিওভূক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয় রেভিনিউতে নিয়ে আমাদের জাতীয়করণ করতে হবে।

বর্তমান দ্রব্যমূল্যের যেভাবে উর্ধমুখী অবস্থা তাতে করে আমাদের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়ছে। আমার পরিবারে একমাত্র আমিই উপার্জনক্ষম ব্যক্তি যা বেতন পাই তা দিয়ে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হয়। আমার বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনা করে আমাদের এমপিওভূক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয়করণ করার ব্যবস্থা করবে। কথা গুলো বলছিলেন জামালপুর থেকে আসা সহকারী শিক্ষক ইউসুফ বিন কাসিম।

অবস্থান কর্মসূচিতে সারা দেশ থেকে আসা প্রায় শতাধিক শিক্ষক কর্মচারী উপস্থিত আছেন। তাদের প্রত্যাশা, অতি দ্রুতই যেন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হয়। তাদের এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে কর্মসূচি থেকে জানানো হয়েছে।

অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষকরা বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পাঠ্যক্রম সিলেবাস, আইন এবং একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হলেও শিক্ষাব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ব্যাপক পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। অধ্যক্ষ থেকে কর্মচারী পর্যন্ত নামমাত্র ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং উৎসব ভাতা পান ২৫ শতাংশ। অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টে শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে বেতনের ১০ শতাংশ কেটে রাখলেও ৬ শতাংশের বেশি সুবিধা এখনও দেওয়া হয় না এবং বৃদ্ধ বয়সে যথাসময়ে এ টাকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নেই।

মহাজোটের সদস্য সচিব মো. জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৭৩ সালের ৭৩ দিনের শিক্ষক আন্দোলনের সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেটে ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন।

এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের বেতন ৫০ টাকা থেকে ৭৫ টাকায় উন্নীত করেন এবং উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকদের বেতন ১৫০ টাকার উন্নীতকরণসহ রেশনিং ব্যবস্থা চালু করেন। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আগামী কিছুদিনের মধ্যে আমি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ করে দেব। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আর এ পর্যন্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবি পূরণ হয়নি। তবে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালে আরও ২৬ হাজার একশোর বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করেন। তাছাড়া বর্তমান সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ২০১৮ সালের জুলাই থেকে বার্ষিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা দিচ্ছেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের আহ্বায়ক মো. মাঈন উদ্দিন, মহাজোটের অন্যতম শিক্ষক নেতাদের মধ্যে তালুকদার আব্দুল মন্নাফ, মো. আফজলুর রশিদ, অধ্যক্ষ আফজল হোসেন, বেনী মাধব দেবনাথ, বাংলাদেশ এমপিওভুক্ত শিক্ষক অনলাইন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. শাহ আলম প্রমুখ।

Link copied!