Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫,

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিদের তালিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ৩১, ২০২১, ০১:০৫ পিএম


বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিদের তালিকা

বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হলেন বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার প্রধান ব্যক্তি। অন্যভাবে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের প্রধান ও সর্ব্বোচ্চ বিচারপতি। বাংলাদশের বিভিন্ন সঙ্কটজনক সময়ে তিনি প্রধান নির্বাহী হিসাবেও দায়িত্ব পালন করে থাকেন। সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ দিয়ে থাকেন। সংবিধানের ৯৬ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি সহ সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা ৬৭ বছর পর্যন্ত পদে থাকতে পারেন। বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি ছিলেন আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম। ১৯৭২ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ২৩ জনকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিচে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিবৃন্দের তালিকা দেয়া হলো-
 
বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম: আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ এবং প্রথম প্রধান বিচারপতি। তিনি বাংলাদেশের ৬ষ্ঠ রাষ্ট্রপতি হিসাবে ১৯৭৫ সালের ৬ নভেম্বর থেকে ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বিচাপতি সায়েমকে ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ তে দেশের প্রথম প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর এর সামরিক অভ্যুত্থানের পর খালেদ মোশাররফ, শাফায়াত জামিল এবং অভ্যুত্থানকারী কতিপয় সেনা অফিসারের অনুরোধে ৬ নভেম্বর বিচারপতি সায়েমকে দেশের ৬ষ্ঠ রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণের পরই তিনি সংসদ ও মন্ত্রিপরিষদ ভেঙ্গে দিয়ে সারাদেশে সামরিক আইন জারি করেন এবং নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা করেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়ে সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করেন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল তিনি সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের হাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দিয়ে অবসর গ্রহণ করেন। 

সৈয়দ এ. বি. মাহমুদ হোসেন: বাংলাদেশের প্রখ্যাত আইনবিদ সৈয়দ এ. বি. মাহমুদ হোসেন ছিলেন দেশের দ্বিতীয় প্রধান বিচারপতি। বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান বিচারপতি হিসাবে সৈয়দ এ. বি. মাহমুদ হোসেনকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ১৯৭৫ সালের ১৮ নভেম্বর তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ১৯৭৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তারিখে উক্ত পদ হতে অবসর গ্রহণ করেন।   

কামালউদ্দিন হোসেন: বাংলাদেশের প্রখ্যাত আইনবিদ কামালউদ্দিন হোসেন ছিলেন দেশের তৃতীয় প্রধান বিচারপতি। তিনি বাংলাদেশ আইন সংস্কার কমিটির প্রথম চেয়ারম্যান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তারিখে বিচারপতি সৈয়দ এ. বি. মাহমুদ হোসেনের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ৩য় প্রধান বিচারপতি হিসাবে কামালউদ্দিন হোসেনকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ১৯৭৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। ১৯৮২ সালের ১১ এপ্রিল তারিখে তৎকালীন সামরিক সরকার তাকে প্রধান বিচারপতির পদ হতে জোর পূর্বক অপসারণ করে। 

ফজলে কাদেরী মোহাম্মদ আবদুল মুনিম: ফজলে কাদেরী মোহাম্মদ আবদুল মুনিম ছিলেন বাংলাদেশের ৪র্থ প্রধান বিচারপতি। তিনি সংক্ষেপে এফ. কে. এম. এ. মুনিম নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিচারপতি মুনিম হাইকোর্টে বিচারক হিসাবে নিয়োগ পান। সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৩ সালের ২০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহ (ট্রাইব্যুনালস) আইন-১৯৭৩ পাস হয়, যা প্রণয়নের জন্য ১৯৭২ সালে তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে একটি সেল গঠন করেন যার অন্যতম সদস্য ছিলেন বিচারপতি এফ. কে. এম. এ. মুনিম। ১৯৮২ সালের ১১ এপ্রিল তারিখে বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেনের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ৫ম প্রধান বিচারপতি হিসাবে ফজলে কাদেরী মোহাম্মদ আবদুল মুনিমকে নিয়োগ প্রদান করলে তিনি ১৯৮২ সালের ১২ এপ্রিল তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ১৯৮৯ সালের ৩০ নভেম্বর তারিখে ঐ পদ হতে অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি এফ. কে. এম. এ. মুনিম ছিলেন বাংলাদেশ আইন কমিশনের প্রথম চেয়ারম্যান। তিনি ১৯৯৬ সালের ৬ আগস্ট চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত হন; তবে ১৯৯৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্বাস্থ্যগত কারণে পদত্যাগ করেন। 

বদরুল হায়দার চৌধুরী: বদরুল হায়দার চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ এবং ৫ম প্রধান বিচারপতি। বদরুল হায়দার চৌধুরী ১৯৫৬ সালে ঢাকা হাইকোর্টে আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন এবং ১৯৭১ সালের এপ্রিলে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে ও পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে আপিল বিভাগে বিচারক হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন। ১৯৮৯ সালের ৩০ নভেম্বর তারিখে বিচারপতি এফ. কে. এম. এ মুনিমের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ৫ম প্রধান বিচারপতি হিসাবে বদরুল হায়দার চৌধুরীকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ১৯৮৯ সালের ১ ডিসেম্বর তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ১৯৮৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে অবসর গ্রহণ করেন।

শাহাবুদ্দিন আহমেদ: বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ ও ৬ষ্ঠ প্রধান বিচারপতি এবং দু'বার দায়িত্বপালনকারী রাষ্ট্রপতি। তিনি প্রথমে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর হতে ১৯৯১ সালের ৯ অক্টোবর পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে রাষ্ট্রপতি হিসাবে এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায় থাকা-কালীন ১৯৯৬ সালের ২৩ জুলাই থেকে ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। শাহাবুদ্দিন আহমেদের কর্মজীবনের সূচনা ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে। এরপর তিনি গোপালগঞ্জ ও নাটোরের মহকুমা কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।পরবর্তীতে তিনি সহকারী জেলা প্রশাসক হিসাবে পদোন্নতি পান। এর পর ১৯৬০ সালে তিনি প্রশাসন হতে বিচার বিভাগে বদলি হন। তিনি ঢাকা ও বরিশালের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হিসাবে এবং কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তাকে ঢাকা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ১৯৭২ সনের ২০ জানুয়ারি হাইকোর্টের বেঞ্চে তাকে বিচারক হিসেবে উন্নীত করা হয়। ১৯৭৩-১৯৭৪ সাল পর্যন্ত তিনি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর তাকে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে ফিরিয়ে আনা হয়। ১৯৮০ সনের ৭ ফেব্রুয়ারি তাকে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। 

মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান:  মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের সপ্তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে পর্যন্ত তিনি হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলেন। ১৯৮৫ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট-এর আপিল বিভাগে নিয়োগ লাভ করেন। তিনি ১৯৯৫ পর্যন্ত আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।। ১৯৯০-৯১ মেয়াদে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করলে হাবিবুর রহমান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন।  ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে বিচারপতি হাবিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। 

এ. টি. এম. আফজাল:  এ. টি. এম. আফজাল বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ এবং অষ্টম প্রধান বিচারপতি। ১৯৬০ সালে আইনজীবী হিসেবে ঢাকা হাইকোর্টে যোগ দেয়া এ. টি. এম. আফজাল ১৯৭৭ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন এবং ১৯৮৫ সালে আপীল বিভাগের বিচারপতি নিযুক্ত হন। ১৯৯৫ সালের ৩০ এপ্রিল তারিখে বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ৮তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে এ. টি. এম. আফজালকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ১৯৯৫ সালের ১ মে তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ১৯৯৯ সালের ৩১ মে তারিখে ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় অবসর গ্রহণ করেন। প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি বাংলাদেশ আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন। 

মোস্তফা কামাল: মোস্তফা কামাল ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ এবং ৯ম প্রধান বিচারপতি। বিচারপতি মোস্তফা কামাল বার এ্যাট ল' ডিগ্রি লাভ করে আইনজীবী হিসাবে বাংলাদেশ হাইকোর্টে যোগদান করেন। তিনি হাইকোর্টে বিচারপতি নিযুক্ত হন। সর্বশেষ প্রধান বিচারপতির দায়িত্বপালন শেষে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৭৯ সালে হাইকোর্টের এবং ১৯৮৯ আপীল বিভাগের বিচারপতি নিযুক্ত হন। দশবছর পর ১৯৯৯ সালের জুন মাসে প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২০০০ সালের পয়লা জানুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন। তিনি আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন।

লতিফুর রহমান: লতিফুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের দশম প্রধান বিচারপতি ও ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। পেশাজীবনের শুরুতে লতিফুর রহমান কায়েদে আজম কলেজ (বর্তমান শহিদ সোহরাওয়ার্দি কলেজ)ও জগন্নাথ কলেজে (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) প্রভাষক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬০ সাল থেকে তিনি ঢাকা হাই কোর্টে আইন পেশা শুরু করেন। তিনি শুরুতেই এম.এইচ. খন্দকারের নিকট শিক্ষানবিশ ছিলেন। জনাব খন্দকার বাংলাদেশের প্রথম এটর্নি জেনারেল ছিলেন। ১৯৭৯ সালে লতিফুর রহমান সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ১৯৮১ সালে তার বিচারকের চাকুরি স্থায়ী হয়। ১৫ জানুয়ারি ১৯৯১ তিনি সুপৃম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি তিনি দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রধান বিচারপতি থাকাকালীন অবসর গ্রহণ করেন।

মাহমুদুল আমিন চৌধুরী: মাহমুদুল আমিন চৌধুরী  বাংলাদেশের একাদশ প্রধান বিচারপতি ছিলেন। ১৯৮৭ থেকে ২০০২ পর্যন্ত দীর্ঘ কাল তিনি বাংলাদেশের উচ্চ আদলতে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তৎপূর্বে তিনি ১৯৬৩ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত তিনি আইনপেশায় নিযুক্ত ছিলেন। ২০০১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে বিচারপতি লতিফুর রহমানের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ১১-তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে মাহমুদুল আমিন চৌধুরীকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ২০০১ সালের ১ মার্চ তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ২০০২ সালের ১৭ জুনে অবসর গ্রহণ করেন।

মাইনুর রেজা চৌধুরী: মাইনুর রেজা চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের ১২-তম প্রধান বিচারপতি। মাইনুর রেজা ১৯৭৩ সালে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন এবং ১৯৯০ সালে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে এবং ২০০০ সালে আপীল বিভাগে নিয়োগ পান। ২০০২ সালের ১৭ জুন তারিখে বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরীর অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ১২-তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে মাইনুর রেজা চৌধুরীকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ২০০২ সালের ১৮ জুন তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ২০০৩ সালের ২২ জুনে অবসর গ্রহণ করেন।

কে. এম. হাসান: বিচারপতি কে. এম. হাসান ছিলেন বাংলাদেশের ১৩-তম প্রধান বিচারপতি। ২০০৩ সালের ২২ জুন তারিখে বিচারপতি মাইনুর রেজা চৌধুরীর অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ১৩-তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে কে. এম. হাসানকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ২০০৩ সালের ২৩ জুন তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ২০০৪ সালের ২ জানুয়ারিতে অবসর গ্রহণ করেন।  

সৈয়দ জে. আর. মোদাচ্ছির হোসেন: বিচারপতি সৈয়দ জে. আর. মোদাচ্ছির হোসেন ছিলেন বাংলাদেশের ১৪-তম প্রধান বিচারপতি। ২০০৪ সালের ২৬ জানুয়ারি তারিখে বিচারপতি কে. এম. হাসানের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ১৪-তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে সৈয়দ জে. আর. মোদাচ্ছির হোসেনকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ২০০৪ সালের ২৭ জানুয়ারি তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ২০০৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে অবসর গ্রহণ করেন তিনি।

রুহুল আমিন: মোঃ রুহুল আমিন ছিলেন বাংলাদেশের ১৫-তম প্রধান বিচারপতি। ২০০৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে বিচারপতি সৈয়দ জে. আর. মোদাচ্ছির হোসেনের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ১৫-তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে মোঃ রুহুল আমিনকে নিয়োগ প্রদান করেন ও তিনি ২০০৭ সালের ১ মার্চ তারিখে শপথ গ্রহণ করেন এবং ২০০৮ সালের ৩১ মে মাসে অবসর গ্রহণ করেন।

এম. এম. রুহুল আমিন: এম. এম. রুহুল আমিন ছিলেন বাংলাদেশের ১৬-তম প্রধান বিচারপতি। ২০০৮ সালের ৩১ মে তারিখে বিচারপতি মোঃ রুহুল আমিনের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ১৬-তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে এম. এম. রুহুল আমিনকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ২০০৮ সালের ১ জুন তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ২০০৯ সালের ২২ ডিসেম্বরে অবসর গ্রহণ করেন।

তাফাজ্জাল ইসলাম: মোঃ তাফাজ্জাল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ এবং ১৭-তম প্রধান বিচারপতি। মোঃ তাফাজ্জাল ইসলাম ১৯৬৯ সালে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন এবং ১৯৯৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে এবং ২০০৩ সালের আগস্টে আপীল বিভাগে নিয়োগ পান। ২০০৯ সালের ২২ ডিসেম্বর তারিখে বিচারপতি এম. এম. রুহুল আমিনের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ১৭-তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে মোঃ তাফাজ্জাল ইসলামকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ২০০৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ২০১০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন।

মোহাম্মদ ফজলুল করীম: মোহাম্মদ ফজলুল করীম ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ এবং ১৮-তম প্রধান বিচারপতি। ফজলুল করীম ১৯৭০ সালে হাইকোর্টে আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন এবং ১৯৯২ সালের নভেম্বরে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি তারিখে বিচারপতি মোঃ তাফাজ্জাল ইসলামের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ১৮-তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে মোহাম্মদ ফজলুল করীমকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ২০১০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরে অবসর গ্রহণ করেন।

এ. বি. এম. খায়রুল হক: এ. বি. এম. খায়রুল হক ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ এবং ১৯-তম প্রধান বিচারপতি। তিনি বাংলা ভাষায় রায় প্রদান করে উচ্চ আদালতে বাংলা প্রচলনে ভূমিকা রাখার জন্য প্রশংসিত হয়েছেন। ১৯৭০ সালে জেলা জজ আদালতে আইন পেশায় যুক্ত হওয়া খায়রুল হক হাইকোর্টে আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন ১৯৭৬ সালে এবং ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান, যার পরবর্তীকালে তিনি ২০১০ সালে আপিল বিভাগে নিযুক্তি লাভ করেন। ২০১০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখে বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করীমের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের ১৯-তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে এ. বি. এম. খায়রুল হককে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন ও ২০১১ সালের ১৭ মে অবসর গ্রহণ করেন।

মোঃ মোজাম্মেল হোসেন: মোঃ মোজাম্মেল হোসেন ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আইনবিদ এবং ২০তম প্রধান বিচারপতি। ১৯৭১ সালে জেলা জজ আদালতে আইন পেশায় যুক্ত হওয়া মোজাম্মেল হোসেন হাইকোর্টে আইনজীবী হিসাবে কাজ শুরু করেন ১৯৭৮ সালে এবং ১৯৯৮ সালের এপ্রিলে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ, যার পরবর্তীকালে তিনি ২০০৯ সালে আপিল বিভাগে নিযুক্তি লাভ করেন। ২০১১ সালের ১৭ মে তারিখে বিচারপতি এ. বি. এম. খায়রুল হকের অবসর গ্রহণের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ২০তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে মোঃ মোজাম্মেল হোসেনকে নিয়োগ প্রদান করেন এবং তিনি ২০১১ সালের ১৮ মে প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন।

সুরেন্দ্র কুমার সিনহা: বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ছিলেন বাংলাদেশের ২১-তম প্রধান বিচারপতি। রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে গত ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর তারিখে বিদেশে ছুটিতে থাকা অবস্থায় তিনি পদত্যাগ করেন। সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ছুটি ও পদত্যাগের কারণে মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা  বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে ১২ নভেম্বর, ২০১৭ হতে ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

সৈয়দ মাহমুদ হোসেন:  সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ছিলেন ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর অবসরে যান। তিনি অবসরে যাওয়ায়  বাংলাদেশের ২৩ তম প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পান হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি দুই বছর প্রধান বিচারপতির আসনে অধিষ্ঠিত থাকছেন।  

 আমারসংবাদ/এআই