ডিসেম্বর ৬, ২০২২, ০৬:০২ পিএম
চলতি আসরটি নিজের ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। ৩৫ বছর বয়সী লিওনেল মেসি কাতারে পা রাখার আগেই ঘোষণা দিয়েছেন। নিজের শেষ বিশ্বকাপের মিশনে শুরুর ১০ মিনিটেই গোল পেয়ে যান। যদিও এই পিএসজি ফরোয়ার্ড সৌদির অবিশ্বাস্যভাবে ফেরা আসার ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে অঘটন থেকে বাঁচাতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে এক অসাধারণ গোল আর এনজো ফার্নান্দেজকে অ্যাসিস্ট করে গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে আসেন অধিনায়ক মেসি। এরপর পোল্যান্ডের সঙ্গেও ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ ষোলোতে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় আলবিসেলেস্তেরা।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মেসি তার সেরা খেলা খেলেছেন। আল রাইয়ানের আহমাদ বিন আলী স্টেডিয়ামে গ্রাহাম আর্নল্ডের শিষ্যদেরকে প্রায় উড়িয়ে দিয়েছেন। ম্যাচের গোলের খাতা খুলেছিল তার পা ধরেই। আরও দুটো অ্যাসিস্ট তার বিশ্বকাপ খাতায় যোগ হতে পারতো, যদি তার সহযোগীরা সহজ সুযোগ অপচয় না করতেন। - এমএসএন
বিবিসি ওয়ানের এক প্রোগ্রামে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং ইংল্যান্ডের সাবেক তারকা রিও ফার্ডিন্যান্ড মেসির পারফরম্যান্সকে ‘এখনো পর্যন্ত এই বিশ্বকাপের সেরা পারফর্মার’ হিসেবে অ্যাখ্যা দেন। অনেকেই এর সঙ্গে একমত হবেন। পেশাদার ফুটবলার হিসেবে নিজের একহাজারতম ম্যাচে মেসি বেশ কিছু অসাধারণ কাজ করেন।
কাতার বিশ্বকাপে মেসির হাঁটার পরিসংখ্যান
ম্যাচ শুরুর আগে বিবিসি মেসিকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেটি দর্শক-ভক্তদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। বিষয়টি ছিল মেসি কেন এত বেশি হাঁটেন?
গ্রুপপর্বের ম্যাচগুলোতে কে সবচেয়ে বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেছেন, এরকম একটি পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, মেসির পর্বের ৩টি ম্যাচের দূরত্বই সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছে যথাক্রমে দ্বিতীয়, পঞ্চম এবং নবম স্থানে।
ইংল্যান্ডের সাবেক তারকা রিও ফার্ডিন্যান্ড বলেন, মেসি ভান করে যে সে খেলায় খুব একটা আগ্রহী নয় এবং তারপরেই নিজের আসল রূপ দেখায়। ও যেকোনো পজিশন থেকেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে, যে বিষয়টি বাকি সবার থেকে ওকে আলাদা করে।
মাঠে মেসির হাটা নিয়ে সাবেক বস পেপ গার্দিওলার ব্যাখ্যা
সাতবারের ব্যালন ডি`অর জয়ী মেসি ম্যাচ চলাকালীন সময়ে কেন এত বেশি হাঁটেন সে বিষয়ে জানেন তার একসময়ের এবং বর্তমান সময়ের অন্যতম সফল কোচ পেপ গার্দিওলা। অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর ‘দিস ইজ ফুটবল’ সিরিজে মেসিকে নিয়ে এক পর্বে গার্দিওলাকে বলতে দেখা যায়, ও হাঁটছে... ওর মধ্যে এই জিনিসটিই আমি সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি। ও কখনোই খেলার বাইরে থাকে না, ও সবসময়েই খেলার ভেতরে থকে। ও মাথা ঘুরিয়ে দেখতে থাকে, ডানে বামে কী চলছে। ও খুব ভালোমতোই জানে কী কী হতে চলেছে। ওর মাথা সবসময় ঘুরতে থাকে, ও সবসময় নড়তে থাকে।
তিনি আরও বলেন, ও কিন্তু দৌড়াচ্ছে না, কিন্তু ও দেখছে সবসময়। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের কোথায় দুর্বলতা আছে সেটি খুঁজে বের করে ও। পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মধ্যে ও মাথায় একটি মানচিত্র তৈরি করে ফেলেছে, কোথায় ফাঁকা জায়গা আছে। এটা অনেকটা জঙ্গলের মতো, আপনাকে টিকে থাকতে হবে। আর ও জানে, আমি যদি এখান থেকে এখানে যাই, তাহলে আমার জন্য আরও জায়গা তৈরি হবে।
মেসি মাঠে অলসতার জন্য হাঁটে কিংবা সবসময় দৌড়ানোর জন্য ওর শরীর ফিট নয়, এরকম নয়। সে হাঁটে কারণ সে এর মাধ্যমে চিন্তা-ভাবনা করে প্রতিপক্ষের কয়েক ধাপ আগে এগিয়ে থাকতে চায়। এবং তারপরেই সেই মুহূর্ত আসবে গোল।
এসএম