ডিসেম্বর ১৮, ২০২২, ১২:১৮ পিএম
২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে প্রস্তুত হচ্ছেন লিওনেল মেসি। এবার যদি শিরোপাটা নিজের করে নিতে পারেন তবে ফুটবলের ইতিহাসে পেয়ে যাবেন অমরত্ব।
গত দুই দশকের ফুটবল মেসিকে ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। ফুটবল ইতিহাসেও পেলে-ম্যারাডোনাদের পাশেই থাকবে তার নাম। প্রায় দুই দশক ধরে মাঠ মাতিয়ে চলেছেন এই ফুটবল জাদুকর।
মেসির জয়যাত্রা শুরু বার্সেলোনা থেকে। এর আগে তিনি খেলতেন জন্মভূমি আর্জেন্টিনার নিউয়েলস ওল্ড বয়েজ ক্লাবে। ১৩ বছর বয়সে দেশ ছেড়ে বার্সেলোনায় পাড়ি জমান মেসি।
ইউরোপে পাড়ি জমানোর কয়েক মাস আগেই জীবনের প্রথম সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন রোজারিওভিত্তিক (জন্মস্থান) স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ডায়ারিও লা ক্যাপিটাল-কে।
সেই সাক্ষাৎকারের পেপারকাটিং আর্জেন্টিনা ও স্পেনজুড়ে ভাইরাল হয়ে গেছে। সাক্ষাৎকারটি থেকে কিশোর মেসির ব্যাপারে অনেক অজানা কথা জানা গেছে।
সাক্ষাৎকারটিতে মেসিকে তার নায়ক থেকে শুরু করে স্বপ্ন নিয়ে অনেকগুলো প্রশ্ন করা হয়।
লা ক্যাপিটাল-এর সাক্ষাৎকারটির শুরু এরকম:
`লিওনেল মেসি ১০ম বিভাগের খেলোয়াড় এবং তার দলের অ্যাটাকিং প্লেমেকার। সে শুধু নিউয়েলস অ্যাকাডেমির অন্যতম আপকামিং খেলোয়াড়ই নয়, তার সামনে বিপুল সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎও আছে। কারণ কম উচ্চতা নিয়েও সে এক-দুজনকে পাশ কাটিয়ে যায়, ড্রিবল করে, গোল করে—তবে সবচেয়ে বড় কথা, বল নিয়ে সময় কাটাতে সে ভালোবাসে।`
১৩ বছর বয়সে দেওয়া মেসির প্রথম সাক্ষাৎকার
কেমন ছিল ১৩ বছরের অখ্যাত এক কিশোরের স্বপ্ন? তখন সবে একটি ক্লাবে যোগ দিয়েছে ছোট্ট মেসি। ওই সময়ের এই কিশোরের আশা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা—এসব কেমন ছিল? চলুন দেখে নেওয়া যাক।
নায়ক: দুজন, আমার বাবা হোর্হে এবং আমার গডফাদার ক্লডিও।
প্রিয় কোচ: এখন পর্যন্ত যাদের পেয়েছি তাদের সবাই, কারণ তাদের সবার কাছ থেকেই আমি কিছু না কিছু শিখেছি (গ্যাব্রিয়েল, মোরেলস, ডমিংগুয়েজ, ভেচ্চিও এবং কোরিয়া)।
প্রিয় ফিটনেস কোচ: পাবলো সানচেজ।
প্রিয় খেলোয়াড়: দুজন, আমার ভাই আর আমার কাজিন।
প্রিয় দল: নিউয়েলস।
প্রিয় শখ: গান শোনা।
যে ধরনের গান প্রিয়: কোয়ারটেটো এবং কাম্বিয়া।
একটি প্রিয় টিভি প্রোগ্রাম: প্রিমিসিয়াস।
প্রিয় ম্যাগাজিন: প্যাসিয়ন রোহিনেগ্রা (নিউয়েলসের ফ্যান ম্যাগাজিন)।
একটি প্রিয় বই: বাইবেল।
প্রিয় সিনেমা: বেবিজ ডে আউট।
ফুটবলের বাইরে অন্য একটি প্রিয় খেলা: হ্যান্ডবল।
প্রিয় মডেল: নিকোল নিউম্যান।
প্রিয় খাবার: চিকেন ও সস।
প্রিয় বিষয়: স্প্যানিশ।
প্রিয় চাকরি: পিই শিক্ষক।
একটি লক্ষ্য: সেকেন্ডারি স্কুল শেষ করা।
একটি আনন্দের উপলক্ষ: আমরা যখন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম।
একটি শোকাবহ ঘটনা: আমার দাদির মৃত্যু।
একটি আশা: নিউয়েলসের হয়ে প্রথম বিভাগ খেলা।
একটি প্রিয় স্মৃতি: আমার দাদি যখন প্রথমবার আমাকে ফুটবল খেলতে নিয়ে গিয়েছিলেন।
একটি স্বপ্ন: আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা।
বলার মতো একটি গল্প: আমরা যখন পেরুতে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম।
মানবতা: যে জিনিস মানুষের কখনও হারানো উচিত নয়।
আর্জেন্টিনার যুবদল: ওদের জন্য খেলতে পারলে খুব ভালো লাগবে।
পরিবার: আমার বাবা হোর্হে, মা সিলিয়া এবং আমার ভাইবোন রড্রিগো, নাটালিয়া ও মারিসল।
বন্ধু: আমি ভাগ্যবান, আমার অনেক বন্ধু আছে। নাম বলতে গেলে কারও না কারও নাম নিতে ভুলে যাব।
তোমার জীবনে নিউয়েলসের মানে কী?: সবকিছু, সত্যি সত্যি সবকিছু।
সমস্ত আশা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা অর্জন করেছেন মেসি
কল্পনা করুন মেসি এখন শারীরিক শিক্ষার (পিই) শিক্ষক…
মেসির আশা ছিল আর্জেন্টিনার প্রথম বিভাগে খেলবেন—আর স্বপ্ন ছিল জাতীয় দলে খেলা।
তাই মোটামুটিভাবে বলাই যায় যে, মেসি তার সমস্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষা অর্জন তো করেছেনই, সেগুলো ছাড়িয়েও গেছেন। যদিও কাগজে-কলমে নিউয়েলসের হয়ে প্রথম বিভাগে খেলার আশাটা পূরণ হয়নি। যদিও সেটা করার সময় এখনও আছে…
এসএম