Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

ফিরে দেখা কাতার বিশ্বকাপ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ডিসেম্বর ২৯, ২০২২, ০৬:২২ পিএম


ফিরে দেখা কাতার বিশ্বকাপ

কাতার বিশ্বকাপই মেসির শেষ বিশ্বকাপ; এমন গুঞ্জনই চাওড় হচ্ছিল ফুটবল পাড়ায়। মেসিও অবশ্য ফাইনালের আগে জানিয়ে দিয়েছিলেন এটিই বিশ্বকাপে তার শেষ বিশ্বকাপ। তবে এখনো নিশ্চিত নয় যে আগামী বিশ্বকাপে মেসি খেলবেন কি না। কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা অংশ নিয়েছিল ফেভারিট হিসেবেই। তবে প্রথম ম্যাচেই হেরে যায় সৌদি আরবের কাছে। হতবাক করা অঘটন। শুধু কাতার নয়, এটা বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্যতম বড় অঘটনও। বিশ্বকাপের শুরুটাই যে হয়েছিল অঘটন দিয়ে। পুরো বিশ্বকাপ ছিল অঘটনে ভরপুর। কাতারে ইতিহাস রচনা করেছে তিউনিশিয়া। বিশ্বসেরা ফ্রান্সকে হারিয়ে অবিশ্বাস্য জয় পায় তারা। বিশ্বকাপে অঘটনগুলোই যেন বাড়িয়ে দিয়েছে উন্মাদনা। স্নায়ুচাপ, উত্তেজনা, কথার লড়াই কিংবা হতাশা চেপে বসে অঘটনের ফলেই। কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনই এবার অনেকের কাছে ছিল বিস্ময়ের। মরুর বুকে বিশ্বকাপ আয়োজন। উদ্বোধনের পরও হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। বিশ্বকাপ শুরুর নিয়মিত সময় বদলে শীতকালে আয়োজনসহ অনেকের কাছে বিস্ময়ের বটে। শুরুতেই যেখানে আয়োজন নিয়ে সমালোচনা, সেখানে ঘটনাবহুল বিশ্বকাপ হওয়াই যেন প্রত্যাশা। আগের সব আসরকে ছাপিয়ে এবার যেন অঘটনের ঝাঁপি নিয়ে বসেছিল।

সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনার হার: বিশ্বকাপের প্রথম অঘটন সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনার হার। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পরও সেই ম্যাচ ২-১ গোলে জিতে নেয় সৌদি আরব। টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপে এসেছিল আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের বিপক্ষে হারের আগে তারা সর্বশেষ ২০১৯ সালে কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের কাছে হেরেছিল। আড়াই বছরে কোনো ম্যাচ না হারা দলটি পুঁচকে সৌদি আরবের কাছে হেরে অঘটনের জন্ম দেয়। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই আর্জেন্টিনার রেকর্ডের ইতি টেনে অঘটন ঘটায় সৌদি আরব। অবিশ্বাস্য হারের পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ পথচলা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা। তবে ওই ম্যাচটা যেন তাতিয়ে তোলে আর্জেন্টিনাকে। দুর্দান্ত খেলে দলটি জায়গা করে নেয় ফাইনালে।

জার্মানিকে হারিয়ে জাপানের অবিশ্বাস্য জয়: বিশ্বকাপে দ্বিতীয় বড় অঘটন জার্মানদের গুঁড়িয়ে দিয়ে জাপানের অবিশ্বাস্য জয়। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপেও প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছিল জার্মানি। কাতার বিশ্বকাপে তাদের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। জাপানের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সামনে কার্যত মাথা নোয়াতে বাধ্য হন জার্মান ফুটবলাররা। প্রথমার্ধে তারা ১-০ গোলে এগিয়ে থাকে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আট মিনিটের ঝড়ে হেরে যায় জার্মানি। জাপানের কাছে এ হারের পর আর সেভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। প্রথম রাউন্ড থেকেই তারা বিদায় নেয়।

ডেনমার্ককে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার চমক: ডেনমার্ককে হারিয়ে ১৬ বছর পর নকআউট পর্বে উঠে যায় অস্ট্রেলিয়া। ২০০৬ সালের পর আর নকআউট পর্ব নিশ্চিত করতে পারেনি তারা। কাতার বিশ্বকাপে কেটে যায় তাদের ১৬ বছরের খরা। গ্রæপে অন্যতম ফেভারিট ডেনমার্ককে ১-০ গোলে হারায় অসিরা। দ্বিতীয় রাউন্ডে অবশ্য প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনার সঙ্গে লড়াই করতে পারেনি তারা।

স্পেনকে হারিয়ে গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন জাপান: জার্মানিকে হারানোর পর দুর্বল কোস্টারিকার কাছে হেরে যায় জাপান। তবে বাঁচা-মরার ম্যাচে স্পেনকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেয় এশিয়ার দলটি। স্পেনকে হারিয়ে জাপানের গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ঘটনাও কম অঘটন নয়। তবে দ্বিতীয় রাউন্ডেও তারা নিজেদের দারুণভাবে চিনিয়েছেন। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নির্ধারিত সময়ে ড্র করে জাপান। পরে অবশ্য তারা টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নেয়।

পর্তুগালের বিপক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ার নাটকীয় জয়: অন্যদিকে পর্তুগালের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়ার নাটকীয় জয়ের সাক্ষী থাকল ফুটবল বিশ্ব। ইনজুরি টাইমে গোল দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া ২-১ এ ম্যাচ জিতে নেয়। এরপর মাঠের মধ্যেই তারা অন্য ম্যাচের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকে। উরুগুয়ে জিতলেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে বিদায় নিতে হয়। এশিয়ার দ্বিতীয় দল হিসাবে দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করে দক্ষিণ কোরিয়া।

ক্যামেরুনের কাছে ব্রাজিলের হার: নেইমারের নেতৃত্ব ব্রাজিলকে এবার দারুণ ছন্দময় দেখাচ্ছিল। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে যায়। কিন্তু বড় অঘটন ঘটে ক্যামেরুনের বিপক্ষে হেরে। যদিও ওই ম্যাচে ব্রাজিল প্রথম সারির দল নামায়নি। হেরে যায় ১-০ গোলে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে আফ্রিকান দল হিসাবে এই প্রথম ব্রাজিলকে হারায় ক্যামেরুন।

আফ্রিকান শক্তি মরক্কো চমক: ক্রোয়েশিয়া ও বেলজিয়ামের গ্রæপে পড়েছিল মরক্কো। গ্রæপ পর্বে কোনো ম্যাচই হারেনি তারা। শুরুতে মরক্কোকে মনে হচ্ছিল অঘটনের জন্ম দিয়েছেন। বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট বেলজিয়ামকে তারা গ্রæপ পর্ব থেকেই বিদায় করে দেয়। নকআউট পর্বেও চলে আফ্রিকান দেশটির দাপট। দুর্দান্ত খেলে তারা জায়গা করে নেয় সেমিফাইনালে। কিন্তু সেখানে ফ্রান্সের কাছে দারুণ খেলে বিদায় নেয়।

বিতর্কিত রেফারি: আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ডসের কোয়ার্টার ফাইনালে হয়েছে চরম বিতর্কিত রেফারিং। ম্যাচ শেষে দুদলের খেলোয়াড়রাই রেফারির সমালোচনা করেন। খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফ মিলে একটি লাল কার্ডসহ ১৮টি কার্ড দেখান রেফারি।

এবি
 

Link copied!