ক্রীড়া প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
ক্রীড়া প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম
৯০ মিনিট শেষ, চলছে অতিরিক্ত সময়ের খেলা। একের পর এক সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি স্বাগতিকরা। সেই সুযোগ কাজে না লাগাতে পারার আক্ষেপ কেবল বাড়ছিলই। তাই ড্রয়ের পথেই এগোচ্ছিল ম্যাচ। তবে শেষ মূহুর্তে যে বাংলাদেশের ঝলক দেখানোর বাকি! ৯২ মিনিটের খেলা চলছে, অধিনায়ক আফঈদার পায়ে বল। নিজেদের বক্সের উপর আচমকা সাগরিকাকে লক্ষ্য করে লম্বা করে বল বাড়িয়ে দিলেন আফঈদা। ভারতীয় দুই ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে বল নিয়ে ডি-বক্সের ভেতর থেকে নিখুত শঁটে গোলকিপারকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান সাগরিকা। সেই গোলেই সমর্থকদের ভাসালেন আনন্দের জোয়ারে। আফঈদা-সাগরিকারাও ভাসলেন আনন্দের জোয়ারে।
কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে রোববার ভারতকে ১-০ গোলে হারায় স্বাগতিক বাংলাদেশ। রোববারেও এদিন সমর্থকরা এসেছিলেন ভুভুজেলাসহ নানান সাজে। পুরো ম্যাচেই উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে তাদেরকে হতাশ করলেন না আফঈদা-সাগরিকারা। শক্তিশালী ভারতকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পা রাখল বাংলাদেশের মেয়েরা। এর আগে শক্তিশালি ভারত টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু করেছিল ভুটানকে ১০-০ গোলে উড়িয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে আর পেরে উঠলো না তারা।
ম্যাচের শুরু থেকেই স্বাগতিকদের ওপর চড়াও হতে থাকে ভারত। লিন্ডা-নেহারা লাল-সবুজের রক্ষণ ভেদ করার চেষ্টা করেছে বারবারই। কিন্তু সফল হতে পারেনি। বিপরীতে মাঝেমধ্যে প্রতি আক্রমণে উঠের গোল পাচ্ছিলেন না বাংলাদেশ। ৯ মিনিটে সুযোগ পায় ভারত। সুলান জানা বক্সের ভেতরে বল পেয়ে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। তার আগেই জটলা থেকে ক্লিয়ার করেন এক ডিফেন্ডার। তিন মিনিট পর নেহার বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট গোলকিপার স্বর্ণারানী মন্ডল বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে বলের দিক পরিবর্তন করে গোল বাঁচান। বাংলাদেশ ফাঁকে ফাঁকে আক্রমণ শানাতে চেষ্টা করে। ৩৭ মিনিটে বাংলাদেশের সামনে সুযোগ আসে। তবে সুরমা জান্নাতের হেড অনেক দূর দিয়ে গিয়ে সমর্থকদের হতাশ করে। ৪৪ মিনিটে আবার ভারতের নেহা বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শট নিলেও তা সরাসরি গোলকিপারের হাতে জমা পড়ে। একটু পর একই দলের লিন্ডার শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে বাংলাদেশ গোল পেতে পারতো। আফঈদার ফ্রি-কিক অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে গিয়ে গোল হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে দুই দলই খেলতে থাকে সাবধানী ফুটবল। ৭১তম মিনিটে সুযোগ পায় বাংলাদেশ। স্বপ্নার কর্নারে বল বাঁক খেয়ে ছুটছিল গোল মুখে, ভারত গোলরক্ষক অনিকা দেবী কোনোমতে ক্লিয়ার করেন। এরপর মুনকির ফিরতি শট উপরের জাল কাঁপায়। ৮৩তম মিনিটে গোলের ভালো নষ্ট হয় বাংলাদেশের। ফ্রি কিকে সুরমা ঠিকঠাক হেড করতে পারেননি, বল ড্রপ খেয়ে জালের দিকে ছোটার পথে কোনোমতে আটকান গোলরক্ষক। তবে তিনিও পারেননি পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে; দ্রুত গোলমুখ থেকে ক্লিয়ার করেন ডিফেন্ডার থৈবিসানা চানু তৈজাম। তিন মিনিট পরই গোলের সুবর্ণ সুযোগ নষ্টের হতাশায় পুড়তে হয় বাংলাদেশ। একক প্রচেষ্টায় আক্রমণে ওঠা মুনকি গোলরক্ষক অনিকাকে একা পেয়েও তার গায়ে মেরে বসেন। এর আগে ২০২২ সালে অবশ্য তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল। সেবার অনূর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সীদের প্রতিযোগিতায় গ্রুপ পর্ব ও ফাইনাল-দুই ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে ১-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ।
এএইচ/ইএইচ