ক্রীড়া ডেস্ক
মার্চ ৩১, ২০২৪, ০৫:০১ পিএম
ক্রীড়া ডেস্ক
মার্চ ৩১, ২০২৪, ০৫:০১ পিএম
সিলেটে বাংলাদেশকে ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হারানোর পর সিরিজ নিশ্চিতের লক্ষ্যেই চট্টগ্রামে মাঠে নেমেছিল শ্রীলংকা। শেষ টেস্টের প্রথম দিনশেষেই বড় স্কোরের আভাস দিয়েছিল লংকানরা। ব্যাটারদের দারুণ পারফরম্যান্সে দ্বিতীয় দিনে শক্ত অবস্থানে পৌঁছে গেছেন ডি সিলভারা। শেষ সেশনে মেন্ডিসের সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপের পরেও প্রথম ইনিংসে ৫৩১ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করিয়েছে লংকানরা।
৭ উইকেটে ৪৭৬ রান নিয়ে শেষ সেশনে ব্যাটিংয়ে নামে শ্রীলংকা। শুরু থেকেই বেশ আক্রমণাত্মক ছিলেন মেন্ডিস ও ফার্নান্দো। এই সেশনে তাই রানের গতিও বেড়েছে। পুরো ম্যাচের মতো এবারও ক্যাচ মিস করেছে বাংলাদেশ। তাইজুলের বলে মিড উইকেটে মেন্ডিসের ক্যাচ ছেড়েছেন হাসান মাহমুদ। মেন্ডিস-ফার্নান্দোর ২১ রানের জুটি ভাঙ্গে রান আউটে। দারুণ এক থ্রোতে ১১ রান করা ফার্নান্দোকে ফিরিয়েছেন শান্ত।
এরপর লাহিরু কুমারাকে সাথে নিয়ে দলের স্কোর ৫০০ রান পার করেছেন মেন্ডিস। এই দুজনও গড়েছেন ২১ রানের জুটি। ৬ রান করা কুমারাকে বোল্ড করে ফিরিয়েছেন মিরাজ। শেষ উইকেটে আসিথা ফার্নান্দোকে নিয়ে নিজের সেঞ্চুরির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন মেন্ডিস। তবে টানা তিন ইনিংসে সেঞ্চুরিটা পাওয়া হয়নি তার। অন্য প্রান্তে থাকা ফার্নান্দো শূন্য রানে রান আউট হয়েছেন তাইজুলের থ্রোতে। আর এতেই এক প্রান্তে ৯২ রানে অপরাজিত থেকে সেঞ্চুরি মিসের হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে মেন্ডিসকে। শ্রীলংকার ইনিংস থামে ৫৩১ রানে।
লাঞ্চের পর শুরুটা দারুণ হয়েছিল বাংলাদেশের। চান্ডিমাল ফেরেন তৃতীয় বলেই। খালেদের বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় আগের ম্যাচের সেরা ব্যাটারকে। ফেরার আগে চান্ডিমাল করেছেন ৭০ রান। কিছুক্ষণ পর নিজের দ্বিতীয় উইকেট পেতে পারতেন খালেদ। তবে জয়সুরিয়ার ক্যাচ স্লিপের তিন ফিল্ডারের কেউই ধরতে পারেননি। তাইজুলের বলে সেশনের শেষের দিকে আবারও জীবন পেয়েছেন জয়সুরিয়া। তার ক্যাচ মিস করেছেন লিটন।
কামিন্দু মেন্ডিসও জীবন পেয়েছেন। মিরাজের বলে কট বিহাইন্ড আউট দেওয়া হয়েছিল তাকে। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান মেন্ডিস। ভাগ্য সহায় হওয়া এই জুটি এরপর ঠাণ্ডা মাথায় ব্যাটিং করেছেন। চান্ডিমাল ফেরার পর থেকে রানের গতি কিছুটা কম হলেও একেবারে মন্থর হতে দেননি। এই জুটি গড়ার সময় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন আগের ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি পাওয়া মেন্ডিস।
চা বিরতির অল্প কিছুক্ষণ আগে মেন্ডিস-জয়সুরিয়া জুটি ভাঙ্গেন সাকিব। ২৮ রান করা জয়সুরিয়াকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন সাকিব। জয়সুরিয়া ফিরলে ভাঙ্গে ৬৫ রানের জুটি। এরপর সেশনের শেষ ১০ মিনিটে আর উইকেট পায়নি বাংলাদেশ। ৫৪ রানে অপরাজিত আছেন মেন্ডিস। এই সেশনে শ্রীলংকা তুলেছে ৬৫ রান।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতে চান্ডিমালকে সাথে নিয়ে দিনের প্রথম ঘণ্টাটা বিপদ ছাড়াই পার করেছেন ডি সিলভা। বাংলাদেশের বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে এটি জুটি আজকের দিনের প্রথম ভাগে তুলেছে ৬১ রান। প্রথম ঘণ্টায় আকাশ অনেকটাই মেঘলা থাকায় পেসারদের বাড়তি সুবিধার সম্ভাবনা দেখছিল বাংলাদেশ। তবে হাসান মাহমুদ ও খালেদ তেমন কিছুই আদায় করতে পারেননি পিচ থেকে। সাকিব-মিরাজ-তাইজুলদেরও তেমন ভয়ংকর মনে হয়নি। সবাইকে অনায়াসেই খেলেছেন দুই লংকান ব্যাটার। পেসারদের দারুণভাবে সামলে ফিফটি পূর্ণ করেন চান্ডিমাল।
৮৬ রানের জুটি আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই আঘাত হানেন সাকিব। চান্ডিমাল ৫৯ রান করে ফিরেছেন লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে। ৩৭৫ রানের মাথায় ৫ম উইকেট হারায় শ্রীলংকা। সাকিবের এই উইকেটে কিছুটা আশার আলো দেখেছিল বাংলাদেশ। লাঞ্চের আগে আরও একটি ধাক্কা দিয়ে ম্যাচে ফেরার আশায় ছিলেন শান্তরা।
তবে চান্ডিমাল ফিরলেও ক্রিজে অবিচল আছেন ডি সিলভা। তাকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন কামিন্দু মেন্ডিস। আগের ম্যাচের দুই নায়কের জুটি লাঞ্চের আগ পর্যন্ত আর বিপদ হতে দেননি। ৬টি চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ইনিংসে ডি সিলভা অপরাজিত আছেন ৭০ রানে। মেন্ডিস করেছেন ১৭ রান, মেরেছেন ৩টি চার। এই জুটি যোগ করেছে ৩৬ রান।
আরএস