Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪,

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে টাইগারদের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

স্পোর্টস ডেস্ক

স্পোর্টস ডেস্ক

ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪, ১০:২৩ এএম


ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে টাইগারদের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

ব্যাটিং ব্যর্থতায় স্কোরবোর্ডে বেশি রান তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। শামীম হোসেনের শেষের ঝড়ে আসে স্রেফ ১২৯ রানের পুঁজি। এই সংগ্রহ নিয়েই বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কাঁপিয়ে দেয় বাংলাদেশ। তাসকিন, শেখ মেহেদি, রিশাদ, সাকিবদের বোলিংয়ের সামনে এই অল্প রান তাড়াতেই মুখ থুবড়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের দারুণ বোলিংয়ের দিনে সিরিজে ফেরা আর সম্ভব হয়নি ক্যারিবীয়দের। স্বাগতিকদের তাদের মাঠেই গুড়িয়ে দিয়ে ঐতিহাসিক জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে ফিল সিমন্সের দল। সিরিজের শেষ ম্যাচ আগামী ১৮ ডিসেম্বর শুক্রবার।

১৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় ২৮ রানেই তিন উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। উইকেট উল্লাসের শুরুটা করেন তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে টানা দুটি উইকেট নেন তাসকিন। ডানহাতি পেসারের বলে খোঁচা মেরে লিটন দাসের গ্লাভসে ধরা পড়েন ব্র‍্যান্ডন কিং। ৫ বলে তিনি করেন ৮ রান। একই ওভারের পঞ্চম বলে ধরা আরেক ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার। ব‍্যাটের কানায় লেগে ক‍্যাচ যায় উইকেটের পেছনে। সেই ক‍্যাচও নেন লিটন।

দলীয় ২৮ রানে জনসন চার্লসকে ফেরান মেহেদি হাসান। বাংলাদেশি স্পিনারের এলবির ফাঁদে পড়ার আগে ১২ বলে ১৪ রান করেন চার্লস।

মেহেদির পরের শিকার নিকোলাস পুরান। বিপজ্জনক পুরানকে স্লিপে  সৌম্যের হাতে ক্যাচ বানিয়ে ৫ রানে সাজঘরে পাঠান মেহেদি। এরপর বোলিংয়ে এসে রভম্যান পাওয়েল ও রোমারিওকে বিদায় করেন হাসান মাহমুদ ও তানজিম সাকিব। মাত্র ৪২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

সেখান থেকে আকিলকে নিয়ে জুটি বেধে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন রস্টন চেজ। উইকেটে তিনি ভয়ানক হয়ে উঠলে রিশাদ এসে থামান তার ঝড়। বাংলাদেশি লেগ স্পিনারের বলে বোল্ড হয়ে ৩২ রানে ফেরেন চেজ। একই ওভারের পরে বলে মোটিকেও মাঠ ছাড়া করেন রিশাদ। গড়ে তোলেন হ্যাটট্রিকের চান্স। তবে হ্যাটট্রিক না করতে পারলেও বাংলাদেশকে ম্যাচ হাতের মুঠোয় এনে দেন রিশাদ। ফলে, অল্প রান তাড়ায় নেমে ১০২ রানেই থমকে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ১৬ রান দিয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। সমান দুটি করে উইকেট নেন তানজিম সাকিব, রিশাদ হোসেন ও মেহেদি হাসান। হাসান মাহমুদের শিকার একটি।

এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচ জেতা বাংলাদেশ আজ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর)  আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে তুলেছে ১২৯ রান।

কিংসটাউনের আর্নোস ভেলে স্টেডিয়ামে ম্যাচটিতে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরুতে হতাশ করেছেন অধিনায়ক লিটন দাস। দ্বিতীয় ম্যাচে পজিশন বদলে লিটন নেমেছেন ওপেনিংয়ে। কিন্তু লাভ হয়নি। আকিল হোসেনের তৃতীয় ওভারে বল এগিয়ে গিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাটে পাননি লিটন। হন স্টাম্পিংয়ের শিকার! ১০ বলে ৩ রানে আউট হয়ে শুরুতেই বাংলাদেশকে হতাশ করেন অধিনায়ক।

লিটনের বিদায়ের পর উইকেটে এলেন আর গেলেন তানজিদ তামিম। দলীয় ১১ রানে তিনিও ফিরে যান সাজঘরে। জোড়া ধাক্কা সামলে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় বাংলাদেশ। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয় সৌম্য সরকারের রান আউটে। দলীয় ৩৯ রানে রান আউট হন বাঁহাতি ব্যাটার। ১৮ বলে ১১ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি।

এত হতাশার মাঝে আশা হয়ে ধরা দেন একাদশে ফেরা মেহেদী হাসান মিরাজ। শট হাঁকিয়ে থিতু হওয়ার আশা জাগান তিনি। তবে সেই আশাও ভেস্তে দেন আলজারি জোসেফ। ইনিংসের ১০ম ওভারে আলজারির করা শেষ বলে পুল করে ছক্কা মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগের সীমানায় ক্যাচ দেন মিরাজ। তিন চার ও এক ছক্কায় ২৫ বলে ২৬ রানে শেষ হয় মিরাজের ইনিংস।

ক্যারিবীয়দের পরের শিকার রিশাদ হোসেন। গুডাকেশ মোটির লেগ স্টাম্পে থাকা ফুল লেংথ ডেলিভারি গায়ের জোরে লেগে খেলতে গিয়ে বিপদ বাড়ান রিশাদ। বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশি লেগ স্পিনার। ফেরার আগে করেন ৫ রান।

রিশাদের পর মেহেদি হাসানকেও একই কায়দায় বোল্ড করে মাঠছাড়া করেন মোটি। ১১ বলে ১১ রান করে ফেরেন মেহেদি।

একের পর এক উইকেট হারানো বাংলাদেশের হয়ে হাল ধরেন শামীম হোসেন। শেষ দিকে সাকিবকে নিয়ে দলের রান ১০০ পার করেন তিনি। তার অপরাজিত ৩৫ রানে ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে একশ ছাড়ানো লক্ষ্য দিতে পারে বাংলাদেশ। সর্বোচ্চ ৩৫ রান করতে শামীমের লেগেছে ১৭ বল। আর ১১ বলে ৯ রান করেন তানজিম সাকিব। নবম উইকেটে তাদের জুটিতে ২৩ বলে আসে ৪১ রান। এটাই সফরকারীদের সেরা জুটি।

বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুই উইকেট নেন মোটি। আকিল হোসেন, রোমারিও, রোস্টন চেজ ও আলজারি জোসেফ নেন সমান একটি করে উইকেট।

বিআরইউ

Link copied!