Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

দ্বাদশ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায় পশ্চিমা দেশগুলো

মো. মাসুম বিল্লাহ

জুলাই ৪, ২০২২, ০৩:০২ এএম


দ্বাদশ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায় পশ্চিমা দেশগুলো

অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী ৩৮টি দেশের সংগঠন অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) প্রতিনিধিরা সিইসিসহ অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। গতকাল রোববার বিকেল ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সংগঠনটির ১৪ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

নাগরিকদের ভোটাধিকার নিশ্চিত, দেশের গণতন্ত্র আরও কার্যকর ও শক্তিশালী করার পক্ষে বৈঠকে মত দিয়েছে ওইসিডি। সেই সঙ্গে আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিতে সহায়ক অবস্থা তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।

 বৈঠক শেষে প্রতিনিধিদলের পক্ষে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড বলেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হোক। অংশীজনদের যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমাদের দেশগুলো নির্বাচন কমিশনকে যেকোনো সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত। 

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারাকে আরও শানিত করার মধ্য দিয়ে নাগরিকদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সহায়তা করতে চায় ওইসিডি সদস্য দেশগুলো। এজন্য নির্বাচন কমিশন চাইলে আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব।

সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড ছাড়াও প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন— ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাস, কানাডার হাইকমিশনার লিলি নিকোলস, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি ইস্ট্রুপ পিটারসেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ননের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, ফ্রান্সের সহকারী রাষ্ট্রদূত গুইলাম অড্রেন ডি কেরড্রেল, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আছিম ট্রস্টার, ইতালির রাষ্ট্রদূত এনরিকো নুনজিয়াটা, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত অ্যান ভ্যান লিউয়েন, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন, স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকো ডি আসিস বেনিটেজ সালাস, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তোরান এবং জাপানের ডেপুটি হেড অব মিশন ইয়ামায়া হিরোয়ুকি। 

এ ছাড়া বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.), বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, চলতি বছর ৮ জুন ও ২৬ জুন যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত সিইসির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

ইসিতে প্লিজড ১৪ দেশের কূটনৈতিক : সিইসি 
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ১৪ দেশের কূটনৈতিক নির্বাচন কমিশনে এসে প্লিজড (খুশি)। আমরা ওনাদের বলেছি, ভবিষ্যতে ইসিতে প্রয়োজন হলে আসবেন।

গতকাল রোববার বিকেল ৩টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) ১৪ দেশের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করে ইসি। বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। সিইসি বলেন, ওনারা এসেছেন এটা একটা ট্র্যাডিশন। আগেও এসেছিলেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আইন-কানুন, আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আমরা আমাদের কার্যক্রমগুলো জানিয়েছি। ওনারা সাধারণত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ওপর জোর দিয়ে থাকেন। সেজন্যই ওনারা বলেছেন, ইলেকশনটা যদি ইনক্লুসিভ, একসেপ্টবল, ফ্রি এবং ফেয়ার হয়, তাহলে ওনারাও খুশি হবেন। সেই সঙ্গে পুরো দেশবাসী খুশি হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তারা। আমরা আমাদের দিক থেকে ইলেকশন কমিশন হিসেবে আমাদের যা যা করণীয় আমরা করব। ওনারা প্লিজড। বলেছি ভবিষ্যতেও যখন প্রয়োজন হয়, আসবেন।

কোনো সহযোগিতা করার বিষয়ে তারা কিছু বলেছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওরা যেটা বলেছে সহযোগিতা করার কথা। আমরা চট করেই নিজেরা কিছু বলিনি। আমরা বলেছি আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দেখব। কোনো টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে আমরা ওনাদের জানাব। আমরা বলেছি সেটা আমরা বিবেচনা করে দেখব। আমরা এখনো সহযোগিতা চাইনি। সক্ষমতা বাড়ানোর সহযোগিতা নাকি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহযোগিতা করবে এমন প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল আউয়াল বলেন, এটা ইলেকশন রিলেটেড। যেটা হতে পারে ভোটার এডুকেশন, ইসির সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয় হতে পারে। আমি তো বলেছি আমরা ওনাদের জানাইনি এখনো। আমরা যদি মনে করি, কোনো রকম সহযোগিতা বা ট্যাকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট বা ট্রেনিং প্রয়োজন হয়, তখন ওনাদের জানাব। এজন্য নিশ্চিত করে বলতে পারছি না কী ধরনের সহযোগিতা ওনারা দেবেন বা আমরা কী ধরনের সহযোগিতা চাইব। ওনারা পর্যবেক্ষকের কথা বলেছেন, আমরা বলেছি আমাদের এদিক থেকে কোনো বাধা নেই। তবে এ বিষয়ে ডিপ্লোমেটিক্যালি আলোচনা করে দেখতে পারেন। ফরেন অবজারভারদের বিষয়ে আপনারা ফরেন মিনিস্ট্রিতে একটু কথা বলে দেখতে পারেন।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্বের বিষয়ে কোনো কথা বলেছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে ওনারা তেমন কিছু বলেননি। ওনারাও খুব ভালো করেই জানেন এখনো কিছু কিছু দল ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। ওনারাও বিশ্বাস করেন, আমরাও চেষ্টা করে যাব, যেন ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়।
 

Link copied!