জুলাই ১৭, ২০২২, ০১:৫৮ এএম
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে শিক্ষা খাতে বেশ িকছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে একবার অটোপাস দেয়া হয়। এর পর থেকে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। চলতি বছর সব কিছু ঠিক ছিল।
তবে ১৭ জেলার ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সব কিছু তছনছ করে দেয়। বন্ধ হয়ে যায় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলেও আগস্টের মাঝামাঝিতে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এদিকে কবে হবে এসএসসি পরীক্ষা আজ জানাতে পারেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তাড়াহুড়ো করে পরীক্ষা না নিয়ে সময় নিতে হবে। ভালো করে পড়িয়ে তারপর পরীক্ষা নেয়া দরকার। তারা এও বলছেন, গুরুত্ব দিয়ে না পড়ার কারণে উচ্চ শিক্ষায় গিয়ে বড় বিপদে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ৯০ শতাংশ ফেল এর বহিঃপ্রকাশ। এ বছর ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেয়ার কথা। তবে বন্যাদুর্গত এলাকায় অনেক শিক্ষার্থীর বইপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন বন্যায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে দেয়ার ১৫ দিন পর পরীক্ষার আয়োজন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে। এবং আগস্টের মাঝামাঝি যেকোনো সময়ে এসএসসির পরীক্ষার ঘোষণা আসতে পারে সে ক্ষেত্রে রুটিনে পরিবর্তন আসবে বলেও জানা গেছে।
গত বুধবার শিক্ষা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে আলোচিত বিষয় নিয়ে তারা শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সাথেও দেখা করেন। এসময় আগামী ১৮ আগস্ট থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, সিলেট অঞ্চলের বন্যা পরিস্থির কারণে সারা দেশের পরীক্ষা পিছিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে শিক্ষা সচিব সকল বোর্ড চেয়ারম্যানদের কাছে আগামীতে অঞ্চলভিত্তিক দুর্যোগ হলে তা কিভাবে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব এর একটি রূপরেখা চেয়েছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো: আবু বকর ছিদ্দীক আমার সংবাদকে বলেন, আগস্টের মাঝামাঝি এসএসসি পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। সময় চূড়ান্ত করে খুব শিগগিরই আমরা এটা জানিয়ে দেবো। বন্যায় আক্রন্ত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে শিক্ষা বিভাগের সচিব বলেন, আমাদের কিছু স্টক বই আছে সেগুলো ওইখানে যাচ্ছে। বই দেয়ার পর দুই সপ্তাহ বা ১৫ দিন সময় দিয়ে তারপরে পরীক্ষা নেয়ার চিন্তা আছে।
দুর্যোগকালীন সময়ের কথা উল্লেখ করে আবু বকর ছিদ্দীক আরও বলেন, আগামী বছর থেকে একটি কৌশল তৈরি করছি। পাবলিক পরীক্ষায় দুর্যোগকবলিত অঞ্চলের জন্য অতিরিক্ত একটা প্রশ্ন সেট করা হবে। কোনো অঞ্চলের জন্য সারা দেশের পরীক্ষা বন্ধ না করে, যখন কোথাও দুর্যোগ হবে সেখানে পরবর্তীতে ওই সেটে পরীক্ষা নেয়া হবে। এটা আগামী বছর থেকে করা হবে বলে জানান সরকারের এ কর্মকর্তা।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরই চাহিদার চেয়ে কিছু অতিরিক্ত পাঠ্যবই ছাপানো হয়।
এবার চট্টগ্রামের জন্য ছাপানো অতিরিক্ত বই থেকে সিলেটে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত বই সুনামগঞ্জের বানভাসি এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক পরিসংখ্যানে শুধু সিলেট জেলায়ই এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য আট হাজার সেট পাঠ্যবই লাগবে বলে জানা গেছে। বানভাসি এসব এলাকায় চলতি সপ্তাহে বই চলে যাবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশব্যাপী এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল গত ১৯ জুন। তবে সিলেটসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হওয়ায় ১৭ জুন এসএসসি পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা আসে।
এর আগে সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ১৯ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পরীক্ষা স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ১৯ জুন থেকে এসএসসি জেনারেল, এসএসসি ভোকেশনাল এবং দাখিল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানানো হবে।