জুলাই ২২, ২০২২, ০১:২০ এএম
গুণগত শিক্ষা ও গবেষণায় সংকটকাল অতিক্রম করছে উচ্চশিক্ষা খাত। বেসরকারি উচ্চশিক্ষা খাতে এ সংকট তুলনামূলক আরও বেশি। দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেখভালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) থাকলেও মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণার এ সংকট দূর করা সম্ভব হচ্ছে না।
ইউজিসির নানা সীমাবদ্ধতার মাঝে জনবল সংকট, আইনগতভাবে পদক্ষেপ গ্রহণে অপারগতা ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন-২০১০ এর পরিবর্তন আনার কথা বারবার সামনে আসে। ফলে উচ্চশিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণে পৃথকভাবে একটি শক্তিশালী ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। উচ্চশিক্ষা খাতে ইউজিসির নানামুখী সীমাবদ্ধতা ও ক্ষমতাহীনতা প্রকাশ পাওয়ার পর নতুন করে আশা-নিরাশার অংক কষছে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল (বিএসি)।
উচ্চশিক্ষায় কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ও অ্যাক্রেডিটেশনের মাধ্যমে একাডেমিক উৎকর্ষ অর্জন ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সংক্রান্ত রীতি অনুযায়ী শুদ্ধাচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে বিএসি উচ্চশিক্ষার মানদণ্ড নির্ধারণের কথা বললেও তা কতটা ফলপ্রসূ হবে এ নিয়ে তা নিয়ে রয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
২০১৭ সালে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল আইন প্রণয়ন হলেও নানা গড়িমসিতেই পাঁচ বছর অতিক্রম করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ১০ লাখ টাকা মাসিক ভাড়ায় অফিস নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্তাব্যক্তিরা।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির মান নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তাদের মাঝে কয়েক জনের মান নিয়েও রয়েছে নানা সমালোচনা। তবে এসব সংকট মোকাবিলা করে দেশের উচ্চশিক্ষা খাতের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলেই প্রত্যাশা করছেন শিক্ষাবিদরা।
শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের উচ্চশিক্ষা খাতকে এগিয়ে নিতে হলে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের গুরুত্ব অনেক। এ প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একদিকে যেমন শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে; একই সাথে আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়েও এগিয়ে থাকতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে প্রতিষ্ঠানটি।
পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা স্তরে পাঠদান করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে যাচাই-বাছাই করে একটি নির্ধারিত ফ্রেমে আনতে পারলে মানহীন বিশ্ববিদ্যালয় শনাক্তকরণ সহজ হবে। শিক্ষার্থীরাও খুব সহজেই বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন।
অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল সূত্র জানায়, কাউন্সিলের কর্মপরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দেশের উচ্চশিক্ষা খাতের ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।
এদিকে প্রতিষ্ঠানটির তিন ও ছয় বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা বিশ্লেষণে দেখা গেছে— একাধিকবার সচেতনতা সৃষ্টি, একাডেমিক অডিট, প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও মতবিনিময় সভার মাঝেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। পাশাপাশি একই ধরনের কর্মকৌশল ও অডিট ইউজিসি থেকে করা হলেও দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা যায়নি। এ ক্ষেত্রে ইউজিসির একই কর্মপরিকল্পনা দিয়ে দেশের উচ্চশিক্ষা খাতে কিভাবে বিপুল পরিবর্তন আসবে তা নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ।
তবে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলকে গতিশীল ও গ্রহণযোগ্য করতে দেশের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা জরুরি বলে মনে করছেন তারা। পাশাপাশি কাউন্সিলকে এগিয়ে নিতে যথাযথ আইন; আইন প্রয়োগের ক্ষমতা ও পর্যাপ্ত জনবল দিতে হবে।
বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল সূত্র জানায়, একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিটি কোর্সের জন্য পৃথকভাবে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ নিতে হবে। আর প্রতি কোর্সের জন্য ফি দিতে হবে দুই লাখ টাকা। সাধারণত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি ৩০টি কোর্স থাকে তাহলে তাদের ফি দিতে হবে ৬০ লাখ টাকা।
এরপর তিন সদস্যবিশিষ্ট বিএসির বিশেষজ্ঞ কমিটি পাঠদান ও শিখন পদ্ধতি মূল্যায়ন ব্যবস্থা, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রশ্নপত্র, উত্তরপত্র পর্যালোচনা পদ্ধতি, গবেষণা পদ্ধতি, পাঠদানের পরিবেশ প্রভৃতি পর্যবেক্ষণ করে একটি নম্বর দেবে কাউন্সিল। এ প্রক্রিয়ায় ১০০-এর মধ্যে ৭০ নম্বর পেলে ওই কোর্সের অ্যাক্রেডিটেশন সনদ দেবে কাউন্সিল। আর ৬০ শতাংশ থেকে ৬৯ শতাংশ নম্বর পেলে দেয়া হবে কনফিডেন্স সার্টিফিকেট। তবে ৬০ শতাংশের কম নম্বর পেলে কোনো সার্টিফিকেট দেয়া হবে না।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আমার সংবাদকে বলেন, ‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল শিক্ষাক্রমের তুলনামূলক মূল্যায়ন করা এবং সেগুলোকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়ার মধ্যে দিয়ে দেশের উচ্চশিক্ষাকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। উচ্চশিক্ষার মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি দিতে সারা পৃথিবীতেই এ কাউন্সিল রয়েছে। বাংলাদেশে এ কাউন্সিল কার্যক্রম শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভ্যন্তরীণ র্যাংকিং চালু হবে। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগ কোন পর্যায়ে আছে তার আসল চিত্র উঠে আসবে।
একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিভাগ চালু করলেই শুধু হবে না; ওই বিভাগ পরিচালনার জন্য তাদের দক্ষ শিক্ষক ও পর্যাপ্ত সরঞ্জাম আছে কি-না সেগুলোও নির্ধারণ করা সহজ হবে। তবে এ প্রক্রিয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের মাঝে সমন্বয়ের দরকার রয়েছে। এত দিন অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল না থাকায় ইউজিসি অডিট ও মান নিয়ন্ত্রণের কাজটি করলেও এ কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা হওয়াতে সে কাজগুলো আরও গতিশীল হবে।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিং পেতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো চলছে কি-না তার ওপর নজর রাখতে হবে। একই সাথে প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল ও অর্থবল নিশ্চিত করতে হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি, ইউজিসি একসময় বলেছে, তাদের যে আইন আছে তা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতি হলে ইউজিসি তদন্ত করে; কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনকে বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করতে হয়। ইউজিসি অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের তদন্ত করেছে এবং সেগুলো মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে কিন্তু তদন্তসাপেক্ষে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ অব্যবস্থাপনা উচ্চশিক্ষাকে সাংঘাতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমার মনে হয়, শুধু সংস্থা করলেই হবে না। তাদের সঠিকভাবে আইন দেয়া এবং আইন প্রয়োগ করার ক্ষমতা দিতে হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষা জিনিসটা কখনোই আমলাতান্ত্রিক হতে পারে না। সব কিছু মন্ত্রণালয়ে যাবে আর সেখান থেকে সিদ্ধান্ত হয়ে আসবে এবং তার ওপর নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চলবে তা হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গঠন করেছিলেন আমলাতান্ত্রিক এ প্রক্রিয়া তার পরিপন্থি হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা মাত্র ছয়টি তখন মঞ্জুরী কমিশন গঠন করা হয়েছিল।
এ ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় তো সরাসরি মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ রেখে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারত। কিন্তু বঙ্গন্ধু দেখলেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে যে স্বায়ত্তশাসন দেয়া হয়েছে তা সঠিক জায়গায় রাখতে হলে মন্ত্রণালয়ের সাথে তাদের যোগাযোগ করার দরকার নেই। এ কারণেই তিনি মাঝখানে একটি কমিশন (ইউজিসি) গঠন করলেন। একই সাথে দেশের খ্যাতিমান শিক্ষাবিদদের দ্বারা এ কমিশন যাতে চলতে পারে সেভাবেই তিনি আইন করে দিয়েছিলেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের মাঝেই তারা যে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে সেগুলোর যাতে তদন্ত হয় এবং তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া যায় অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল ও ইউজিসিকে সে ক্ষমতা দিতে হবে। সব কিছু যদি আমলাকেন্দ্রিক হয় তাহলে তো সমস্যা বাড়বেই। আমরা দেখেছি, যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দুর্নীতি হচ্ছে সেগুলোর সুরাহা কোথায় হচ্ছে বা কারা করছে তা দেখা যাচ্ছে না; এটি দুঃখজনক। তদন্ত ও পদক্ষেপ নেয়ার এ কাজ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের করার কথা থাকলেও তাদের কাছে সাংবাদিকরা গেলে বলেন, আমরা তদন্ত করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। এখন মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখবে।
এদিকে মন্ত্রণালয় তো শুধু উচ্চশিক্ষা নিয়েই কাজ করে না। তাদের কাজের পরিধি অনেক। আমাদের দেশে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা একটি মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা আরেকটি মন্ত্রণালয়। এই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে আবার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, কারিগরি, বৃত্তিমূলক, মাদ্রাসা এবং উচ্চশিক্ষা সব এক জায়গায়। ফলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সবগুলো বিভাগ যথাযথভাবে দেখা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে উচ্চশিক্ষা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র্যাংকিংয়ে পিছিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় কারণ। সুতরাং অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল করার পাশাপাশি তাদের যথাযথ আইন ও আইন প্রয়োগের ক্ষমতা দেয়া প্রয়োজন। তা না হলে এসব প্রতিষ্ঠান করে কোনো লাভ হবে না।’
এ প্রসঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, ‘দেশের উচ্চশিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন রয়েছে। অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল উচ্চশিক্ষায় এই মানদণ্ড নির্ধারণের কাজটি করবে। কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর পাশাপাশি পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই উচ্চশিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণের জন্য এ কাউন্সিল রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে জন্য যেমন বিএসটিআই কাজ করছে তেমনি বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে যে ডিগ্রি দেয়া হচ্ছে তা মানসম্মত কি-না তার স্বীকৃতির জন্য বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল কাজ করবে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোর্স পড়ানোর জন্য তাদের পর্যাপ্ত অবকাঠামো, যুগোপযোগী কারিকুলাম, পাঠদান পদ্ধতি, ফলাফল ও দক্ষ শিক্ষকের ভিত্তিতে এ সনদ দেয়া হবে। তবে কাউন্সিলের নিজস্ব ভবন বা যে অবকাঠামো প্রয়োজন তা নেই। জনবলও নেই আর জায়গাও নেই; ভাড়া বাড়িতে কার্যক্রম চালাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ভবন ও স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য যে জনবল প্রয়োজন তা নিশ্চিত করা গেলে দেশের উচ্চশিক্ষায় বিপুল পরিবর্তন আসবে।’
জানতে চাইলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী আমার সংবাদকে, উচ্চশিক্ষার মানদণ্ড নিয়ন্ত্রণে ইউজিসি তাদের দায়িত্ব অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অর্থ জোগান দেয়া এবং একটি নির্ধারিত মাত্রার মনিটরিং করে। কিন্তু উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় যে বৈশ্বিক মানদণ্ড রয়েছে সে অনুযায়ী আমাদের দেশের ইউনিভার্সিটিগুলো কতটুকু অর্জন করতে পেরেছে এটার একটা পরিমাপ করা এবং একটি বাৎসরিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল। এ প্রক্রিয়ায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথক পৃথক মানদণ্ড দাড় করানো সম্ভব হবে। যে সব বিশ্ববিদ্যালয় খারাপ করবে পরবর্তীতে তাদের ইমপ্রুভ করার সুযোগ থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল বর্তমান বিশ্বের প্রতিটি দেশে আছে। বিশেষ যারা উন্নয়নশীল দেশ রয়েছে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশে অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের কার্যকারিতা উপলব্ধি করার মতো পরিবেশ এখনো সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু এই কাউন্সিলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি খুব আশাবাদী। এ কাউন্সিল বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষায় নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে মানসম্মত শিক্ষা ও গবেষণার পথ সৃষ্টি করার জন্য কাজ করে যাবে।’
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ তারিক আহসান আমার সংবাদকে বলেন, ‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের ধারণা ব্যাপক। এ প্রক্রিয়ায় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিগুলোর সমন্বয় সাধন, মান নিয়ন্ত্রণ, একই সাথে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যে ডিগ্রিগুলো দেয়া হচ্ছে সেগুলোর সমন্বয় করা হবে। এছাড়া বিদেশি যে ডিগ্রিগুলো আছে সেগুলোর সাথে বাংলাদেশের ডিগ্রির মানের সমন্বয় করার কথা রয়েছে। কাউন্সিলের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, নিয়মিত অডিট, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে উৎসাহ প্রদান ও পরামর্শের পাশাপাশি কর্মপরিধি আরও বিস্তৃত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কাউন্সিলের সকল পরিকল্পনা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য যে রিসোর্স দরকার তা নিশ্চিত করা জরুরি। যেহেতু দেশের শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিদেশের সাথে বাংলাদেশের ডিগ্রিগুলোর সমন্বয় সাধনের বিষয় জড়িত সেহেতু এখানে যোগ্য লোক নির্বাচনের দিকেও জোর দেয়া প্রয়োজন। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির জনবল সংকট যাতে না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’