Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪,

শ্যামবাজারের ময়লা বুড়িগঙ্গায়

রায়হান উদ্দিন তন্ময়

জুলাই ২৯, ২০২২, ০১:৫৭ এএম


শ্যামবাজারের ময়লা বুড়িগঙ্গায়

রাজধানীর শ্যামবাজারের ময়লা ফেলা হচ্ছে বুড়িগঙ্গা নদীতে। এখানকার আড়ত-কাঁচাবাজারের ময়লা নদীর পাড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। হাল্কা বৃষ্টি বা বাতাসে এ ময়লা সহসাই যাচ্ছে এ নদীতে। ফলে বর্ষা মৌসুমের পরিষ্কার পানি হচ্ছে নোংরা ও দূষিত। বাতাসেও ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন দেখা যায়, পুরান ঢাকার সদরঘাট টার্মিনাল থেকে পূর্বদিকে ফরাশগঞ্জ রোডের পাশে রয়েছে শতাধিক আড়ত ও পাইকারি কাঁচাবাজার। শ্যামবাজারের আবর্জনা সরাসরি ফেলা হচ্ছে নদীতে। ফরাশগঞ্জের এ সড়কের দক্ষিণ পাশে সুইচ গেট পর্যন্ত বহু খোলা জায়গায় আবর্জনা স্তূপ করে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে মাঝে মাঝে ময়লা নেয়া হয় বলে জানায় সেখানকার ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই সড়কে কোনো ডাস্টবিন না থাকায় ময়লা উন্মুক্ত জায়গায় ও নদীতে ফেলা হচ্ছে। এছাড়াও এ সড়কের দক্ষিণ পাশে রিকশা-ভ্যান ও ময়লার ভ্যান রেখে সড়কের অর্ধেক জায়গা দখল করেও রাখা হয়েছে। ফলে সংকুচিত এ সড়ক দিয়ে যান চলাচল ও পথচারীদের চলাচলে ঘটছে বিঘ্নতা।

কয়েকজন আড়তদার বলেন, দোকানের ময়লা-আবর্জনা রাস্তার পাশে রাখা হয়। সেখান থেকে সিটি কর্পোরেশন ময়লা নিয়ে যায়। তাই সেখানে ময়লা রাখা হয়। তবে আমরা নদীতে ময়লা ফেলি না। কিন্তু রাস্তা থেকেই ময়লা বাতাস ও বৃষ্টিতে নদীতে পড়ে যাচ্ছে। এ সড়কে কয়েকটি ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হলে ভালো হতো।  

এ পথ দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন শফিকুল ইসলাম। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, এ পথের বেশ কয়েক জায়গায় ময়লা স্তূপ করে রাখা হয়েছে। আর এখান থেকে ময়লাও নেয়া হয় না। এছাড়া নদীতেও আড়তের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, বর্ষার সময় স্বাভাবিকভাবে নদীর পানি থাকে পরিষ্কার কিন্তু বুড়িগঙ্গা নদীতে ময়লা ফেলার কারণে এ পানি দূষিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। নদীর পারে চা-পানের দোকান করেন তারা মিয়া (ছদ্ম নাম)। তিনি বলেন, নদীর পাড়ে দেয়াল থাকা সত্ত্বেও নদী পাড়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। আর ময়লা নদীর পানির সাথে মিশে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরিফুলকে কয়েকবার কল দিলে তার ফোন নাম্বার বন্ধ দেখায়।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা এয়ার কমডোর সিতওয়াত নাঈম বলেন, নাগরিক হিসেবে সেখানে যে ময়লা রয়েছে তা অভিযোগ আকারে গ্রহণ করছি। তবে রিপোর্টার হিসেবে আপনার সাথে কথা বলতে পারছি না। আপনি আমাদের জনসংযোগ কর্মকর্তার সাথে কথা বলুন।

বিআইডব্লিউটি যুগ্ম সচিব ও সদস্য (পরিকল্পনা ও পরিচালন) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি সেখানকার বিষয়টি জানি না। আপনি নদী বন্দরে যোগাযোগ করেন।

বিআইডব্লিউটির ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির আমার সংবাদকে বলেন, নদীতে ময়লা বেশি জমে গেলে তা আমরা সরানোর ব্যবস্থাও করছি। নদীতে ময়লা-আবর্জনা না ফেলতে সকাল-বিকাল মাইকিং করা হয়। আবার মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনাও করা হয়। এছাড়া সিটি কর্পোরেশন যদি সেখানে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করতো তাহলে ভালো হতো। নদীতে ময়লা না ফেলতে শ্যামবাজারের ব্যবসায়ী সমিতিকে চিঠি দিব দু-একদিনের মধ্যে।

Link copied!