আগস্ট ১১, ২০২২, ১২:৩৮ এএম
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রভাব এরই মধ্যে বিভিন্ন নিত্যপণ্যে পড়তে শুরু করেছে। এরই রেশ কাটতে না কাটতে এবার ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সরকারকে। ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য পতনকে কারণ দেখিয়ে ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ২০ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে।
এদিকে গত ২০ জুলাই নতুন দাম নির্ধারণের পর আবারো সমন্বয়ের প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে এই মুহূর্তে দাম বৃদ্ধির সুযোগ নেই বলেও মনে করে ট্যারিফ কমিশন। আমদানি মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশীয় বাজারে তেলের দাম বেঁধে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সর্বশেষ গত ২০ জুলাই প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৯৯ টাকা থেকে ১৪ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় ১৮৫ টাকা। তবে এই দাম ফের বাড়িয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ২০৫ টাকা আর খোলা তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকা করার প্রস্তাব পেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। দাম বৃদ্ধির এমন প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ ক্রেতা।
এদিকে, ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছু দিনের মধ্যে দাম বাড়বে এমন গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ফলে ক্রেতারাও বেশি করে ভোজ্যতেল কিনে মজুদ করতে শুরু করেছেন। এরই মধ্যে নতুন করে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন।
বলা হচ্ছে, ডলারের দাম বিবেচনায় নিয়েই ১৫ দিন আগে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। নতুন করে বিবেচনার ক্ষেত্রে প্রয়োজন আরও ৩০ দিন। তবে নতুন করে এখনই ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি করতে চায় না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তিন মাস আগে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি টন এক হাজার ৯০০ ডলারের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।
দেশের বাজারেও সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে প্রতি লিটার ২০০ টাকার উপরে উঠে যায়। বছরের প্রথম ভাগে যুদ্ধ শুরুর আগে-পরে বাংলাদেশেও কয়েক দফায় বাড়ানো হয় দাম। তবে দাম কমে আসায় গত ১৭ জুলাই প্রতি লিটার তেলের দাম ১৪ টাকা করে কমানো হয়।
ফলে দেশে এখন প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬৬ টাকায় এবং পাম তেল ১৫২ টাকায়। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববাজারে যেখানে ভোজ্যতেলের দাম প্রায় অর্ধেক কমে গেছে সেখানে দেশের বাজারে দাম বাড়ানোর এই প্রস্তাব হঠকারিতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
বিশ্ববাজার দাম পরিস্থিতি বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিশ্ববাজারে গত মার্চ মাসে প্রতি টন অপরিশোধিত পাম অয়েলের দাম ছিল এক হাজার ৭৭৬ দশমিক ৯৬ ডলার।
এরপর এপ্রিলে এসে আরও কমে হয় এক হাজার ৬৮২ দশমিক ৭৪ ডলার। মে মাসে আবার কিছুটা বেড়ে হয় এক হাজার ৭১৬ দশমিক ৯২ ডলার। জুনে কমে এসে দাঁড়ায় এক হাজার ৫০১ দশমিক ১০ ডলার। জুলাইয়ে আরও কমে প্রতি টন অপরিশোধিত পাম অয়েলের দাম হয় এক হাজার ৪৪৫ দশমিক ৬৪ ডলার।